জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটিকে নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই মাফিয়া গোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, এনসিপি মনে করে বিচারের কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি, দায় স্বীকার, অনুশোচনা-পাপমোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিজম পুনর্বাসনের শামিল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয়। বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনের ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে।
সাবেক এ তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে। আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যেকোনো ধরনের আলোচনা এনসিপি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে। আওয়ামী লীগ দল এবং মতাদর্শের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ জুলাই মতামত জানিয়ে দিয়েছে। দল মতাদর্শ হিসেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি করার সব অধিকার হারিয়েছে। গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই বলে বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলকে জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে এনসিপি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম-ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি হাসিনার দোসরদের কেন বিচার হয়নি। বিচার দৃশ্যমান হওয়ার আগে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এমন বক্তব্য আপত্তিকর। বিচারচলাকালে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগের পর যে কোনো ও বিষয়কে এনসিপি শক্তভাবে রুখে দিবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়কে এনসিপি শক্তভাবে প্রত্যাহার করেছে। সকল দলকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।