জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সরকারি সড়কের পাশে লাগানো অর্ধশত তালগাছ মারতে কীটনাশক প্রয়োগের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার আলমকে চার লাখ টাকা (খরচা হিসেবে) জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি স্থানীয় করখণ্ড দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকতার চাকরি থেকেও তাকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। আদালতে শাহরিয়ার আলমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জাহিদুল হক জাহিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। এছাড়া তালা গাছ নিয়ে প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট দৈনিক পত্রিকার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আদেশের ৬০ দিনের মধ্যে এ টাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে বলেছেন। কৃষি কর্মকর্তা এ অর্থ দিয়ে যেসব তালগাছ জীবিত আছে সেগুলো পরিচর্যা করবেন। এছাড়া নতুন করে গাছ লাগাবেন। আর ৩০ দিনের মধ্যে শাহরিয়ার আলমকে করখণ্ড দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত এই রায় ও আদেশ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর পাঠাতে বলেছেন, তারা শাহরিয়ার আলমের বিষয়ে তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
গত ৩১ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিক ‘৫০ তালগাছে কীটনাশক: দোষীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ কেন নয়’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় ছাপা হয়। ওই সম্পাদকীয় নজরে নিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারিসহ শাহরিয়ার আলমকে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ওই আদেশ অনুসারে বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাহরিয়ার আলম গত ১২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হন। ওইদিন দুপুর পৌনে ১২টা থেকে (মধ্যাহ্ন বিরতি ছাড়া) বিকেল ৪টা পর্যন্ত আদালতের অভিপ্রায় অনুযায়ী তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ একটি প্রতিবেদন দেয়। স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলামের দেওয়া প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় যে, মো. শাহরিয়ার নিজের রোপণ করা আমগাছের বেড়ে ওঠার প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই তালগাছগুলোতে ক্ষত সৃষ্টি করে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মারার অপচেষ্টা করেছেন। তালগাছ রক্ষার্থে তার কোনো উদ্যোগ ও আন্তরিকতা পরিলক্ষিত ছিল না। তালগাছগুলোর ক্ষতি করার পেছনে তার ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে শাহরিয়ারের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।