জুমবাংলা ডেস্ক: আ.লীগ নেতার অডিও ফাঁস নিয়ে চলছে এখন চল তোলপাড়। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপটি এক মিনিট ৪০ সেকেন্ডের। ওই ফোনালাপ তিনি করেন জেলার দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের সঙ্গে। বিএনপির নেতা হিসেবে পরিচিত রুহুল আমিন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ছিলেন।
ওই কথোপকথনের এক পর্যায়ে রোশন আলী বলেছেন, ‘যারা নৌকা করে, সব রাজাকারের বাচ্চা। কী করবেন, এ দেশে টাকা দিলে নমিনেশন (দলীয় মনোনয়ন) পাওয়া যায়, এ দেশে টাকা দিলে মন্ত্রিত্ব পাওয়া যায়।’
এদিকে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারকে বহিষ্কারের দাবিতে দেবিদ্বার উপজেলায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) ওই কর্মসূচি থেকে রোশন আলীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। যেখানে রোশন আলী বিএনপির এক নেতাকে মিছিল মিটিং করার উৎসাহ দেন এবং সুযোগ দেয়ার কথা বলেন। ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপে তিনি বলেন, যারা নৌকা করে তারাতো সব রাজাকারের বাচ্চা।
তবে এই অডিও ফাঁসের ঘটনায় বুধবার বিকেলে রাজধানীর ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করেন মো. রোশন আলী। দেবিদ্বারে কিছু অনুপ্রবেশকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আছে, যারা নৌকা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা, এমন কথা বলেছেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন। তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পুরো অংশ থেকে খণ্ডিত করে আংশিক প্রকাশ করা হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করেন তিনি।
রোশন আলী আরও বলেন, বিএনপি, জামায়াতের কাজই হচ্ছে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলা। অডিও ফাঁসের এই ঘটনায় ডিজিটাল আইনে তিনি মামলা দায়ের করার কথা জানিয়েছেন।
এর আগে রোশন আলী মাস্টার আরও দাবি করেন, তাঁর কথোপকথনের খণ্ডিত অংশের সঙ্গে অন্যের কণ্ঠ যুক্ত করে ফোনালাপটি ফাঁস করা হয়েছে। তিনি নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি করেছেন। তিনি এ বিষয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করবেন বলে জানান।
গত সোমবার রাতে ওই ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের পদে থেকে বিএনপির সাবেক নেতার সঙ্গে দলের বিরুদ্ধে আপত্তিকর কথা বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিগগিরই এ ঘটনায় দলীয় সভা করে রোশন আলী মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা রোশন আলী বলেন, ‘সম্প্রতি আমার সাথে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা রুহুল আমিন সাহেবের ফোনালাপ হয়। ফোনে তিনি অভিযোগ করেন যে আওয়ামী লীগ তাঁদের কোনো জায়গা দেয় না। আমি এর উত্তরে বলেছি, আপনারা আন্দোলন করেন না, এলাকায় না এসে শুধু অভিযোগ করেন। এটা শুধু আমার কথা না, আমার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবও এ কথাই বলেছিলেন, যা নির্ভেজাল সত্য। সম্প্রতি দেবীদ্বারে সুযোগসন্ধানী কিছু লোক আওয়ামী লীগে যোগদান করে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি করে বেড়াচ্ছে, তাদের আমি রাজাকার বলেছি, এখনো বলব।’ তিনি দাবি করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর ওই কথোপকথনের খণ্ডিত অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তাঁকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।