জুমবাংলা ডেস্ক: নরসিংদীর শিবপুরে স্কুলছাত্রী আইনুন তাজরি প্রভার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকাকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন রোজিনা। তিনি নিহত আইনুন তাজরি প্রভার মা। আজ সোমবার দুপুরে নরসিংদী উপজেলা মোড়ে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকা বিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান পড়াতেন।
তিনি শিক্ষার্থীদের প্রায় সময় কিছু শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে তার কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য কৌশলে চাপ দিতেন। প্রভাকেও প্রায় সময় নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় অপমান করতেন। স্কুল থেকে বাসায় এসে সে আমার কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার স্কুলে যাওয়ার সময় প্রভা দেখতে পায় তার স্কুলের নির্ধারিত সালোয়ার ছিঁড়ে গেছে। বিদ্যালয়ের সময় হয়ে যাওয়ায় আমি তাৎক্ষণিক সালোয়ার ঠিক করে দিতে পারিনি। তাই সে ট্রাউজার পড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। আর ওই দিনই ট্রাউজার পরে যাওয়াকে ইস্যু করে কণিকা ম্যাডাম প্রথমে অ্যাসেম্বলি ও পরে শ্রেণিকক্ষে তাকে অপমান ও মারধর করেন। যেখানে সরকারি আইন অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের অপমান কিংবা মারধর করা সুযোগ নেই। সেখানে তিনি এক দিনেই একাধিকবার আমার মেয়েকে অপমান ও মারধর করেছেন। বিষয়টি সে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। ’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি শিক্ষিকা কণিকার দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। ’
রোজিনা আরো বলেন, ‘স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আমাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার জন্য। আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি। যার কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে, আমি তার বিচার ব্যতীত অন্য কিছু চাই না। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আইনুন তাজরি প্রভার ছোট ভাই মো. মিনহাজ, চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন সিজার, বশির সরকার প্রমুখ।
গত বৃহস্পতিবার শিবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাকের সঙ্গে ট্রাউজার পরে বিদ্যালয়ে গেলে অষ্টম শ্রেণির ‘গ’ বিভাগের শিক্ষার্থী আইনুন তাজরি প্রভা শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক নার্গিস সুলতানা কণিকা কর্তৃক অপমান ও মারধরের শিকার হয়। এ ঘটনায় বিকেলে স্কুল থেকে বের হয়ে ওই শিক্ষার্থী ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। নিহত আইনুন তাজরি প্রভা জয়মঙ্গল এলাকার প্রবাসী ভুট্টো মিয়ার মেয়ে। আর অভিযুক্ত শিক্ষক নার্গিস সুলতানা কণিকা বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে শিবপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আফজাল মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষিকা নার্গিস সুলতানা কণিকা পলাতক রয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক নার্গিস সুলতানা কণিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিনিয়া জিন্নাত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।