আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গ্যাসের মূল্যনির্ধারণে ব্রাসেলসের পরিকল্পনা এগিয়ে নিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জ্বালানি খাতকে অতিরিক্ত ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জ ইউরোপিয়ান কমিশনকে জানিয়েছে, উৎপাদনকারী ও ক্রেতা-ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যৎ লেনদেন চুক্তি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অগ্রিম ৮০ শতাংশ মূল্য নিরাপত্তা হিসেবে জামানত করতে হবে।
ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে এ বিশাল জামানত বৃদ্ধির প্রভাবে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। ইউরোপীয় বেঞ্চমার্ক টিটিএফের পরিচালনাকারী আটলান্টাভিত্তিক গ্রুপ আইসিইর একটি মেমোতে এমন তথ্য মিলেছে। যদিও আইসিই এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ইউরোপিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) মতে, জ্বালানি উৎপাদকদের কথা মাথায় রেখে এ বছর জামানত দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। ফলে অনেক কোম্পানির ব্যাংক ক্রেডিট সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের ব্যবসা ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনা করতে হয়, যেখানে জামানতের প্রয়োজনীয়তা কম।
ইইউ কর্তৃপক্ষ এ অঞ্চলের গ্যাসের মূল্য পরিকল্পিত সর্বোচ্চ সীমা চূড়ান্ত করার পদক্ষেপ যখন নেয়া শুরু করে, আইসিই তখনই সতর্ক করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ও জ্বালানি সরবরাহে প্রবল সংকট দেখা দেয়, যা এ অঞ্চলকে অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা ঝেঁকে বসে। ফলে ইইউর জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানিগুলোকে বিলিয়ন ইউরো জরুরি তহবিল সংগ্রহে বাধ্য করেছিল।
ইইউর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র একটি চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা করছে, যা চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাস্তবায়ন হতে পারে। কমিশন টিটিএফ বাজারের আসন্ন চুক্তিগুলোর মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছে। টিটিএফ ব্লক প্রায় চার-পঞ্চমাংশ গ্যাস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
পরপর দুই সপ্তাহ গ্যাসের মূল্য প্রতি মেগাওয়াট আওয়ারে ২৭৫ ইউরোয় পৌঁছালে ও ইউরোপীয় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) খরচের পার্থক্য একই সময়ে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে প্রতি ঘণ্টায় ৫৮ ইউরো মেগাওয়াট হলে ব্রাসেলস গ্যাসের দাম নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। এ পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য সীমাহীন মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার পরও নির্ধারিত মূল্য পরিবর্তন করা হবে।
গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করা হলে, ইউরোপিয়ান অঞ্চলের জ্বালানি বাজারে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের প্রভাব সম্পর্কিত এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের অনুমান নিছক নয়, বরং সংগতই।
নিরাপত্তা অর্থের পরিমাণে এমন উল্লম্ফন জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে, যা এরই মধ্যে লক্ষ করা গিয়েছে। কেননা জ্বালানি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য নিরাপদে সম্পন্ন করার চেষ্টা করবে।
ডাচ নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান এএফএম, যা টিটিএফের ভবিষ্যৎ বাজার তত্ত্বাবধান করে, তারা আরো সতর্ক করেছে যে হঠাৎ এমন নীতি প্রণয়নের ফলে সাময়িকভাবে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া এক্সচেঞ্জ থেকে আলাদা হয়ে কোম্পানি ও ক্রেতারা ব্যক্তিগতভাবে লেনদেনে আরো বেশি চুক্তি করতে বাধ্য হতে পারে।
তবে কমিশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস সরবরাহ চুক্তি অন্যত্র চলে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করলে প্রক্রিয়াটি একদিনের মধ্যেই স্থগিত করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।