জুমবাংলা ডেস্ক: পাবনার বেড়া উপজেলা আইনশৃংখলা কমিটি ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় উপজেলা পর্যায়ের সকল কর্মকর্তার সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকীকে লাঞ্ছিত করেছেন অব্যাহতিপ্রাপ্ত বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বেড়া পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেন।
তবে মেয়র বাতেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, উপজেলা পরিষদের উন্নয়নের স্বার্থে তিনি সভায় কিছু কথা বলেছেন।
সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ এবং সভায় উপস্থিত একাধিক জনপ্রতিনিধি বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘সোমবার বেড়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা ছিল। সভায় বেড়া পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন উপজেলার কাজিরহাট ও নগরবাড়ি ঘাট ইজারা সংক্রান্ত আগে তৈরি করা একটি লিখিত রেজুলেশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকীকে অনুমোদনের জন্যে চাপ দেন। বিষয়টি নীতিমালা বহির্ভূত হওয়ায় ইউএনও তা অনুমোদনে অস্বীকৃতি জানালে মেয়র বাতেন তাকে মারতে তেড়ে আসেন। উপস্থিত অন্য সদস্যদের হস্তক্ষেপে ইউএনওর গায়ে হাত দিতে পারেননি। তবে তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে জেনেছি। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের উর্ধ্বতন মহলে অবহিত করেছি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে,উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উপস্থিত একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাজিরহাট ও নগরবাড়ি ঘাট সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে দেওয়ার জন্য আগেই তৈরি করা একটি লিখিত সিদ্ধান্তের রেজুলেশন অনুমোদন দিতে বেড়া পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চাপপ্রয়োগ করেন। বিষয়টি মেয়রের এখতিয়ার বহির্ভূত এবং বিধিসম্মত নয় বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা অনুমোদনে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় বেড়া পৌর মেয়র আব্দুল বাতেন চরম উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে ইউএনওকে ধাক্কা দিয়ে মারতে উদ্যত হলে সভায় উপস্থিত অন্যরা থামানোর চেষ্টা করেন। পরে সভাটি পন্ড হয়ে যায় এবং ওই সভায় উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও সকল কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানান, একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার বিস্তারিত আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এর চাইতে বেশি কিছু আর বলতে পারছি না।
এ বিষয়ে বেড়া পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নগরবাড়ী ঘাটের নিলামের ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা ও কাজীরহাট ঘাটের নিলাম ডাকের ৬০ লাখ টাকা সাবেক এমপি ও ঘাটের ইজারাদার খন্দকার আজিজুর রহমান আরজুর কাছ থেকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদায় না করে উপজেলা পরিষদকে আর্থিকভাবে দুর্বল করছে। এ বিষয় নিয়ে পরিষদের সভায় কথা হয়েছে। আমি আরও বলেছি, সাবেক এমপির কাছ থেকে এই টাকা আদায় করা না হলে আমি উপজেলা পরিষদের কমিটি থেকে পদত্যাগ করবো। সভায় নানা আলোচনা ও বিতর্ক হতেই পারে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বেড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন, পুরান ভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এ এম রফিকুল্লাহ, জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু, রুপপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জল হোসেন, আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক, বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম আজাদসহ উপজেলা সকল সরকারি দপ্তর প্রধান।
সূত্র: সমকাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।