আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জার্মান চ্যান্সেলর এ কথা ঘোষণা করেছেন। ক্রেমলিনের বক্তব্য, ডনবাস অঞ্চল রক্ষা করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। খবর ডয়চে ভেলে’র।
ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। সোমবার তিনি বলেছেন, ”ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা ওদের সাহায্য করছি। যত দিন গড়াচ্ছে, আমরা অস্ত্র সাহায্যও তত বাড়াচ্ছি।” শলৎস জানিয়েছেন, অন্যান্য অস্ত্রের সঙ্গে বেশ কয়েকটি রাডারও এবার দেওয়া হবে ইউক্রেনকে। যার সাহায্যে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান সহজেই ট্র্যাক করা যাবে।
সোমবার স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হেগেরের সঙ্গে বৈঠক করেন শলৎস। তারপরেই এই ঘোষণা করেন তিনি। জার্মান চ্যান্সেলরের বক্তব্য, রাশিয়া যেভাবে লাগাতার ইউক্রেনের উপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে ইউক্রেনের আরো বেশি পরিমাণ অস্ত্র প্রয়োজন। জার্মানি অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে থাকবে। একইসঙ্গে তার বক্তব্য, ন্যাটোর জমি রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের। প্রয়োজনে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর জমি আরো শক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, যুদ্ধের শুরুতে জার্মানির নিন্দা করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছিলেন, জার্মানি যথেষ্ট অস্ত্র দিয়ে তাদের সাহায্য করছে না। এ নিয়ে দেশের ভিতরে এবং বাইরে সমালোচিত হতে হয়েছিল জার্মানিকে। এখন অবশ্য জার্মান সরকার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে।
ফসল কম
ইউক্রেনের কৃষিমন্ত্রী তারাস ভিসোৎস্কি সোমবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের চার ভাগের এক ভাগ খেতে এবছর ফসল হয়েছে। বাকি জমিতে চাষ করা যায়নি। চাষ হলেও রাশিয়ার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এই ফসল দেশের মানুষের জন্য যথেষ্ট। কিন্তু রপ্তানি করা সম্ভব হবে না। কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য, দেশের ভিতরেও খাদ্য সংকট হতে পারতো। কিন্তু কয়েক মিলিয়ন মানুষ বাইরে পালিয়ে যাওয়ার কারণে খাদ্যসংকট হবে না।
কিন্তু এর ফলে বিশ্বে, বিশেষ করে আফ্রিকায় খাদ্য সংকট আরো বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়া এখনো কৃষ্ণসাগর অবরোধ করে রেখেছে। ওই রাস্তা দিয়েই ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আফ্রিকায় যায়। আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে সরকার খাদ্য সংকটের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে।
ডনবাসের যুদ্ধ
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসে প্রবল যুদ্ধ চলছে বলে ইউক্রেনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন। রাশিয়া আগে দাবি করেছিল, ডনবাসের একটা বড় অংশ এখন তাদের দখলে। কিন্তু ইউক্রেনের বক্তব্য, ডনবাস এখনো দখল করতে পারেনি রাশিয়া। প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই প্রবল যুদ্ধ চলছে। তবে ভারি অস্ত্রের ব্যবহারে রাশিয়া এগিয়ে আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অ্যামেরিকার কাছ থেকে ভারি অস্ত্র চলে এলে ইউক্রেনের পক্ষে লড়াই করা আরো সহজ হবে। সহজে ইউক্রেন ওই জমি ছাড়বে না বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
ক্রেমলিনের দাবি
এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, তাদের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চল। দনেৎস্ক এবং লুহানস্কের মানুষের স্বাধীনতা তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে গোটা ডনবাস অঞ্চলের মানুষকে রক্ষা করাও তাদের দায়িত্ব বলে মনে করে রাশিয়া। বস্তুত, ওই অঞ্চলে রাশিয়ার সেনার পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির যোদ্ধারাও তীব্র লড়াই চালাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ক্রাইমিয়ার মতো গোটা ডনবাস অঞ্চলটি দখল করে নিতে চাইছে রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেন এবং ন্যাটো রাশিয়ার এই অবস্থান মেনে নেবে বলে মনে করছেন না তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।