আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা নিজেদের অন্তর্ভুক্ত ঘোষণা করার পর ন্যাটোর সদস্য হতে তোড়জোড় শুরু করেছিল কিয়েভ প্রশাসন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরপরই ইউক্রেনকে দ্রুত ন্যাটোর সদস্য করতে আবেদন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
রুশ আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের প্রতি পূর্ণ সংহতি এবং সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা চালিয়ে গেলেও দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটো বা ইইউ’র মতো জোটে স্থান দিতে প্রস্তুত নয় পশ্চিমা বিশ্ব। জেলেনস্কির আবেদনে সাড়া দিয়ে ন্যাটোর কিছু সদস্য ইউক্রেনকে স্বাগত জানানোর পক্ষে মত দিলেও এমন সম্ভাবনাকে আপাতত অবাস্তব বলেই মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানিসহ বেশিরভাগ সদস্য।
বুধবার ফ্রান্সের টিভি চ্যানেল বিএফএমকে সাক্ষাৎকার দেন থিয়েরি ব্রেটন। সেখানে রুশ-ইউক্রেনীয় বাহিনীর চলমান যুদ্ধকে ন্যাটোর সদস্যপদ লাভে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে অভ্যন্তরীণ শান্তি। রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান হিসেবে আপনি যদি সত্যিই ন্যাটোর সদস্যপদ চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার দেশে শান্তি পরিস্থিতি থাকতে হবে। এটি সদস্যপদ লাভের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।’
‘দুঃখজনক হলেও সত্য, ইউক্রেনে এখন যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ যদি বন্ধ না হয়, কিংবা এটি থামাতে ইউক্রেনের ভূমিকা যদি সন্তোষজনক না হয়, সেক্ষেত্রে ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপ্রাপ্তির পদটি ঝুলে থাকবে।’
গত শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনকে দ্রুত পূর্ণসদস্যপদ দিতে ন্যাটো নেতাদের তাগাদা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সে ভিডিওবার্তায় তিনি প্রশ্ন করেন— ইউক্রেন যেখানে ন্যাটোর ‘ডি ফ্যাক্টো’ সদস্য হয়েই আছে, সেখানে লিখিতভাবে (ইউক্রেনকে) পূর্ণ সদস্য করে নিতে ন্যাটোর বাধা কোথা?
ন্যাটোর মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ অবশ্য ওই দিনই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেন। পাল্টা এক ভিডিওবার্তায় ন্যাটো মহাসচিব বলেন, ‘ন্যাটো কোনোভাবেই কোনো সংঘাতের অংশ নয় এবং কোনো পরিস্থিতিতেই জোটের ইউক্রেন বিষয়ক নীতির পরিবর্তন হবে না।’
২০১৪ সালে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের দখলস্বত্ত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর থেকেই ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের জন্য তদবির চালাচ্ছে ইউক্রেন। ২০১৯ সালে ইউক্রেনের সংবিধানেও ন্যাটোর সদস্যপদ প্রাপ্তিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সম্প্রতি এই জোটের প্রভাবশালী সদস্যরাষ্ট্র জার্মানির ন্যাটো প্রতিনিধি রুডিগের কোয়েনিগও বলেছেন, চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে সরাসরি সহায়তা করতে ন্যাটো বাধ্য নয়, বরং ইউক্রেন সংঘাত এই জোট এখন এড়িয়ে যেতে চায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।