জুমবাংলা ডেস্ক : ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট। ষাটগম্বুজ ছাড়াও খানজাহান আমলে নির্মিত একাধিক মসজিদ এ জেলার অনন্য সম্পদ। তবে ঐতিহাসিক এসব স্থাপনার মধ্যে বর্তমানে বিলীন হতে বসেছে রেজাখোদা মসজিদের শেষ চিহ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, মসজিদটির টিকে থাকা দুটি পিলারের যথাযথ সংরক্ষণ হচ্ছে না। অবহেলায় খসে পড়ছে একের পর এক ইট।
১৯৮৫ সালে বাগেরহাটকে ঐতিহাসিক মসজিদের শহর হিসেবে ঘোষণা ও ৩২১তম বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে ইউনেস্কো। ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় বাগেরহাটের ১৭টি স্থাপনা। এর মধ্যে ১০টি মসজিদের অন্যতম রেজাখোদার মসজিদ। অন্য মসজিদগুলো হলো ষাটগম্বুজ, বিবি বেগুনি, চুনাখোলা, নয় গম্বুজ, জিন্দা পীর, দশ গম্বুজ, রণবিজয়পুর, সিংগাইর মসজিদ ও এক গম্বুজ মসজিদ।
বাগেরহাট শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার ও ষাটগম্বুজ থেকে তিন কিলোমিটার দূরে সুন্দরঘোনা গ্রামে রেজাখোদা মসজিদের অবস্থান। ১৫ শতকে নির্মিত এ মসজিদ ছয় গম্বুজবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে দেয়ালের দুটি পিলার ছাড়া আর তেমন কিছুই অবশিষ্ট নেই। প্রায় ৫০ বছর আগে স্থানীয়রা মূল মসজিদের জায়গায় একটি টিনশেড মসজিদ ঘর নির্মাণ করে নামাজ পড়ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উদাসীনতার কারণে মসজিদটির টিকে থাকা শেষ চিহ্নও এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। এ অবস্থায় তাদের দাবি, ঐতিহাসিক মসজিদের স্থাপনার অবশিষ্ট অংশ সংরক্ষণে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হোক। একই সঙ্গে মূল রেজাখোদা মসজিদের আদলে নির্মাণ করা হোক একটি পূর্ণাঙ্গ মসজিদ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পোড়ামাটির ইটের তৈরি এ মসজিদের অবশিষ্ট পিলার দুটি কোনোমতে টিকে আছে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে একটি টিনশেড ঘর ও বাইরে টানানো তাঁবুর নিচে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন অনেক মুসল্লি।
এ সময় সুন্দরঘোনা গ্রামের প্রায় শতবর্ষ বয়সী আবুল হাসেম বেগ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের কথা বলা হলেও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তা করছে না। স্থানীয়ভাবে মসজিদটির সংস্কার ও সম্প্রসারণ করতে চাইলেও আইনের জটিলতায় পারা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় এ মসজিদে ভালোভাবে নামাজ আদায় করাও সম্ভব হয় না।
শামীম আহসান নামে আরেকজন বলেন, রেজাখোদা মসজিদের ঐতিহ্যের কারণে এখানে অনেক দূর থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসেন। কিন্তু মসজিদের ধ্বংসাবশেষ দেখে তারা হতাশ হন। টিনশেড মসজিদটির অবস্থাও ভালো না। এখানে মুসল্লিদের অনেক কষ্টে নামাজ আদায় করতে হয়। এ অবস্থায় রেজাখোদা মসজিদের আদলে একটি পূর্ণাঙ্গ মসজিদ তৈরি করা হলে স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর থেকে আসা মুসল্লিরাও ভালোভাবে নামাজ আদায় করতে পারতেন।
এ বিষয়ে বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টডিয়ান গোলাম ফেরদাউস বলেন, রেজাখোদা মসজিদটি বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত। মসজিদটির অবশিষ্ট অংশের দ্রুত সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। আমরা জেনেছি, এরই মধ্যে এ মসজিদসহ বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত উপকূলীয় ১৮টি স্থাপনাকে সংস্কার ও সংরক্ষণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।