বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ডাটা শেয়ার করতে না দিলে ইউরোপ থেকে প্রত্যাহার করা হতে পারে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম। সম্প্রতি এমনই হুমকি দিয়েছে সোস্যাল প্লাটফর্মগুলোর প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা। খবর টেক টাইমস ও ম্যাশেবল।
ডাটা ট্রেকিং ও ডাটা শেয়ার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে মেটা নিয়ন্ত্রিত প্লাটফর্মগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাটফর্মগুলোয় ব্যবহারকারীদের ডাটা বেহাত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে মেটা উল্লেখ করে, আমাদের পণ্য ও সেবার ডাটা শেয়ার বাধাগ্রস্ত হলে আমাদের সেবা চালিয়ে নেয়া কঠিন ঠেকবে। ওইসব দেশ ও অঞ্চলে যদি ঠিকমতো কাজ চালাতে বাধাগ্রস্ত হই তাহলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম গুটিয়ে নিতে হবে।
মেটা জানায়, টার্গেট বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহারকারীদের উপাত্ত ব্যবহার ও শেয়ার করা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা তাদের আয়ের অন্যতম উৎস। বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে গেলে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া কঠিন ঠেকবে। মেটা আশ্বাস দেয়ার অংশ হিসেবে বলেছে, ইউরোপে প্রাইভেসি শিল্ড নামে ডাটা ট্রান্সফার ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করছে তারা। এতে ইউরোপীয় দেশগুলোর ডাটা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউভুক্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে হস্তান্তর করা হচ্ছে। তবে ব্যবস্থাটি ২০২০ সালের জুলাইয়ে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এ ডাটা ফ্রেমওয়ার্ক প্রত্যাখ্যান করে দ্য কোর্ট অব দি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (সিজিইইউ)।
ইইউর কঠিন নীতিমালা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছে মেটা। তবে তারা আশাবাদী এখনো সমঝোতার সুযোগ রয়েছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই উভয় পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছতে পারে বলে আশা করছে তারা, যা দুই পক্ষের জন্যই উপকারী হবে। তবে যদি সমঝোতায় না পৌঁছানো যায়, তাহলে ইউরোপ থেকে গুটিয়ে নিতে হবে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম।
গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১ হাজার কোটি ডলার আয় হারিয়েছে মেটা। এছাড়া ৩০টির মতো দেশে যে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছিল, তা গুটিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে তারা। স্যোসাল জায়ান্টটি এখন যে মেটাভার্স ও এআর-ভিআরের মতো নতুন প্রকল্পে মনোযোগ বাড়াচ্ছে, তাদের আয় সংকোচনে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ইইউ থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সরিয়ে নেয়া ইস্যুতে মেটার অবস্থান জানতে চায় লন্ডনভিত্তিক সংবাদপত্র সিটিএএম। জবাবে তাদের কাছে এক বিবৃতি দেন মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীল হাজারো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যেন ক্ষতির মুখে না পড়ে সেজন্য নীতিনির্ধারকদের বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
ইউরোপের বাজার থেকে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্লাটফর্ম তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে—এমন চিত্র পরাবাস্তব হিসেবে দেখছে তাদের ওপর নির্ভরশীল হাজারো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। গ্রাহকদের কাছে পণ্য পরিচয় করিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্লাটফর্মের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা করোনা মহামারীতে এ নির্ভরশীলতা আরো বেড়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।