আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতালিতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা শতকরা ২৩ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬জনে।দেশটিতে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা চীনের পরে সর্বোচ্চ। খবর রয়টার্সের।
করোনাভাইরাসের কারণে থমকে আছে গোটা ইতালি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে দেশটির ছয় কোটি মানুষ। যানবাহন আগের মতো চলাচল না করায় বেড়ে গেছে যাত্রী দুর্ভোগ। অর্থনৈতিক চরম ক্ষতির দিকে যাচ্ছে। নতুন করে কোনো পর্যটক ইতালিতে প্রবেশ করতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে দিন দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কোন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া বুধবার রাতে দেয়া এক ভাষণে সারাদেশে ফার্মেসি এবং আলিমেন্টারি (খাবারের দোকান) ছাড়া সমস্ত দোকান, বার, পাব ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ ঘোষণা দেন। তবে খাবারের দোকানগুলো (রেস্টুরেন্ট) হোম সার্ভিস দিতে পারবে।
করোনার কারণে পুরো দেশজুড়েই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর আগে দেশটির ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। কিন্তু এখন তা বাড়িয়ে দেশটির ২০টি প্রদেশের সবগুলোতেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
সারাদেশেই রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার বলছে, এই রেড জোনের আইন কেউ অমান্য করলে ২০৬ ইউরো জরিমানা অন্যথায় ৩ মাসের জেল দেয়া হবে। লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সফরের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ইতালির প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, এখন আর সময় নেই। যারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন তাদের সুরক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জুসেপ কন্তে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর তা বর্ণনা করতে ধার করেছিলেন দ্বিতীয় যুদ্ধকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের কথা। তিনি বলেছেন, ইতালির জন্য এটি হয়তো অন্ধকারতম সময়, কিন্ত সঠিক আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইতালিয়ানরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেদের হাতে নিতে পারবে।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে স্কুল, জিমনেশিয়াম, জাদুঘর, নাইটক্লাব এবং অন্যান্য ভেন্যু বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আমাদের নাগরিকদের স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা দিতে চাই।’ তবে সেখানে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এদিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় করোনাভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বুধবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ডা. টেড্রস অ্যাধানম ঘেব্রাইয়িসাস বলেন, গত দুই সপ্তাহে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা উৎপত্তিস্থল চীনের বাইরে ১৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ভাইরাসের আশঙ্কাজনক মাত্রায় বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি ‘গভীরভাবে শঙ্কিত’।
টেড্রস অ্যাধানম বিভিন্ন দেশের সরকারকে ‘জরুরি ও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ’ গ্রহণের মাধ্যমে এই প্রাদুর্ভাব থেকে উত্তেরণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।