আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসের ফলে ইউরোপের দেশ ইতালি এখন মৃত্যুপুরী। গত কয়েকদিনে রেকর্ড পরিমাণ লোক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। আজও এ সংখ্যা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ২ হাজার ৯৪৩ জন। তবে এদিন মৃত্যের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। জনগণকে সুরক্ষা দিতে ইতালি সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বুধবার মোট মৃত্যবরণ করেছে ৪৩৭ জন। মঙ্গলবার এ সংখ্যা ছিল ৫৩৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুবরণ করেছে ২৫ হাজার ৮৫ জন।
এদিন নতুন আক্রান্ত ৩ হাজার ৩৭০ জন। দেশটিতে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৮৪ জন, যা গতকালের চেয়ে ১১৩ জন কম। মোট চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা এক লক্ষ ৭ হাজার ৬৯৯ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৮৭ হাজার ৩২৭ জন বলে জানিয়েছেন নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেল্লি।
তিনি বলেন, জনগণকে সুরক্ষা দিতে সরকার করোনা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫৪ হাজার ৫৪৩ জন।
ইতালির ২১ অঞ্চলের মধ্যে লোম্বারদিয়ায় করোনার সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত (মিলান, বেরগামো, ব্রেসিয়া, ক্রেমনাসহ) ১১টি প্রদেশ। আজ এ অঞ্চলে মারা গেছে ১৬১ জন। শুধু এ অঞ্চলেই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১২ হাজার ৭৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। এ অঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯ হাজার ৯২ জন।
আজ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১১৬১ জন। এ অঞ্চলে আজ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৮৩৭ জন।
করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বিপর্যস্থ ইতালির অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এদিকে আগামী ৩ মে লকডাউন শেষ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হতে পারে বলে সরকার থেকে ঈঙ্গিত দেয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে ইতালির সরকার। সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী করোনা নিয়ন্ত্রণে পাঁচটি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। করোনার কারণে যে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে মঙ্গলবার বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তে। ইতালির পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদের ভাষণে করোনা নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন কন্তে। প্রধানমন্ত্রী কন্তে যেসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন সেগুলো হলো-
প্রধানমন্ত্রী কন্তে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলেছেন। বিশেষজ্ঞরাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন।
কোনো ধরনের প্রতিষেধক বা করোনার নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ না আসা পর্যন্ত মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস পরার প্রতি জোর দিয়েছেন কন্তে।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন করে পুনর্গঠনের কথা বলেছেন তিনি। বিশেষ করে কেয়ার হোমসগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী কন্তে।
করোনাভাইরাসের রোগীদের জন্য কোভিড-১৯ বিশেষ হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
করোনার এন্টিবডি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বড় ধরনের গবেষণা কাজ চালানো হবে। সরকারিভাবে এ বিষয়ে সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে, গত সপ্তাহে ইতালি সরকার একটি কনট্রাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ আনার কথা বলেছে যার নাম ইমিউনি। এটা একটা টেস্টিং ফেজ। কেউ চাইলে এটা ডাউনলোড করতে পারবে। তবে এতে কোনো বাধ্যবাধকতা রাখা হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।