আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইতালির সরকার ২০২২ সালের জন্য ৮০ হাজার স্পন্সর ভিসায় দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশিরাও পাবেন সেই সুযোগ।
সম্প্রতি ইতালির স্বরাষ্ট্র ও পরিবহন মন্ত্রীরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলেন। ২০২২ সালের জন্য এই ফ্লুসি বা স্পন্সরশিপ ভিসা চালু হবে কৃষি, নির্মাণ, ভারি পরিবহন, হোটেল, পর্যটন ও উৎপাদনশীলখাতে।
অস্থায়ী ও স্থায়ী এই দুই শ্রেণিতে মোট ৮০ হাজার বিদেশি শ্রমিক প্রবেশের সুযোগ পাবেন ইতালিতে। এবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশিও পাবেন এই সুযোগ। এমনটাই মনে করেন ইতালিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে কথা হয় ইতালিতে বসবাসরত কিছু দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তির সঙ্গে।
ইতালি ও ইউরোপের স্বনামধন্য লেখক, কলামিস্ট, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সাংবাদিক পলাশ রহমান মনে করেন, এবারের স্পন্সরে কোটা না থাকলে অধিকাংশ স্পন্সরেই জয়ী হতেন বাংলাদেশিরা। তিনি বলেন, কৃষিখাতে মালিকানার বিশাল বিনিয়োগ এবং এক্ষেত্রে কর্মীদের সংখ্যায় বাংলাদেশিদের অবস্থান অনেক শক্তিশালী। তবে হোটেল ও পর্যটন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান সবচেয়ে শক্তিশালী।
ইতালির যেখানে পর্যটক, সেখানেই বাংলাদেশিদের অবস্থান। সেই হিসেবে বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো পর্যটনখাতের অধীনে স্পন্সর আবেদন জমা করা। নির্মাণ শিল্পে সামান্য কিছু বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে ইতালিতে। তবে বেশ কয়েক হাজার মানুষ স্থায়ী বা অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মাণশিল্পে জড়িত বলে জানান পলাশ রহমান। এসব কারণে বাংলাদেশিরা অন্যসব প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের নাগরিকদের তুলনায় সহজে স্পন্সর আবেদন জমা করতে পারেন ইতালিতে। তাই চূড়ান্ত পর্যায়ে আবেদন গণনায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে যায়। এটি সাধারণত বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুযোগ। যেহেতু বাংলাদেশিদের আবেদন জমা পড়ে বেশি, তাই কারোই উচিত নয়, চূড়ান্ত স্পন্সর হাতে পাওয়ার পূর্বে কারো সঙ্গে বড় ধরনের লেনদেন করা। এমন ধারণা পোষণ করেন সাংবাদিক পলাশ রহমান।
আগামী সপ্তাহে শ্রমিক প্রবেশের ব্যাপারে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হবে বলে জানান দেশটির মন্ত্রীরা। ইতালিতে স্থায়ী স্পন্সরে সুযোগ নিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করার পর রেসিডেন্স কার্ড হাতে পাওয়া যাবে। পূর্বে যে মালিক স্পন্সর ভিসা জমা করেছেন, তার অধীনে থাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তাই ইতালির স্পন্সর যাদের ভিসা পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে নিশ্চিত, তাদের জন্য বাংলাদেশ থেকে যেকোনোএকটা শর্ট কোর্স সম্পূর্ণ করে ইতালিতে প্রবেশ করলে চাকরির জন্য তার যোগ্যতা সাধারণের চেয়ে অনেক বেশি হবে বলে মনে করেন রোমে বসবাসকারী ইউরোপের প্রশিক্ষিত ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরিস্ট গাইড আশিক মজুমদার।
হোটেল-ট্যুরিজম ও ইউরোপ এবং বিশ্বের পর্যটনের উপর বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিগ্রিধারী কুমিল্লার ছেলে আশিক মজুমদার বলেন, ইতালিতে প্রবেশের পূর্বে বাংলাদেশ থেকে ড্রাইভিং, হসপিটালিটি, নার্সিং, কম্পিউটারসহ, ভাষার শর্ট কোর্স সম্পূর্ণ করে ইতালি আসলে সহজেই নিজেকে প্রফেশনাল ক্ষেত্রে সফল করে তুলতে পারা যায়। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ইতালিতে প্রবেশ করা উচিত বলে মনে করেন আশিক মজুমদার। অন্যথায় বর্তমান বিশ্বের চাকরির বাজারে নিজেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
নতুন নিয়মে মোট কত সংখ্যক বাংলাদেশি ইতালিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন, তা আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ হওয়ার পরই জানা যাবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় তিনগুণ বেশি সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশিদের। তাই সবকিছু চূড়ান্ত হবার পূর্বে মধ্যস্বত্বভোগীদের থেকে দূরে থাকার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ইতালি প্রবাসী কমিউনিটির ব্যক্তিরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।