সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। আপনি যদি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গণনা করেন, তাও শেষ হবে না। কারণ সংখ্যা অসীম। এর কোনো শেষ নেই। তাহলে শিরোনামের প্রশ্নের উত্তরে আপনি কী বলবেন? প্রশ্নকর্তার মতো চালাকি করে বলতে পারেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সংখ্যাটি হলো ‘ইনফিনিটি প্লাস ওয়ান’। মানে অসীমের চেয়েও এক বেশি। বুঝতেই পারছেন, হেঁয়ালি করছি। কারণ আসলে সবচেয়ে বড় সংখ্যা বলে কিছু নেই। তবে বর্তমানে এমন অনেক সংখ্যা প্রচলিত আছে, যেগুলোকে আমরা সবচেয়ে বড় সংখ্যা না বলতে পারলেও অনেক বড় সংখ্যা বলতে পারি। চলুন, সেরকম কিছু সংখ্যা দেখা যাক।
ইতালীয় বিজ্ঞানী অ্যামেদিও অ্যাভোগেড্রোর নামানুসারে একটি সংখ্যার নামকরণ করা হয় অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা। এর মান ৬.০২২১৪০৭৬ × ১০২৩। এই পরিমাণকে ‘মোল’ও বলা হয়। অর্থাৎ চারটি মানে যেমন ১ হালি, ১২টিতে ১ ডজন, তেমনি ৬.০২২১৪০৭৬ × ১০২৩টিতে অণুতে ১ মোল।
১৮১১ সালে বিজ্ঞানী অ্যাভোগেড্রো প্রথম প্রস্তাব করেন, একই তাপমাত্রা ও চাপে সমআয়তন বিশিষ্ট গ্যাসে সমপরিমাণ অণু থাকে। তবে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যার নির্ভুল মান প্রথম নির্ণয় করা হয় ১৯১০ সালে। মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট মিলিকান প্রথম একটি ইলেকট্রনের চার্জ পরিমাপের মাধ্যমে এ কাজ করেন। এক মোল ইলেকট্রনের চার্জকে একটি ইলেকট্রনের চার্জ দিয়ে ভাগ করলে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যার মান পাওয়া যায়। কারণটা তো আগেই বলেছি, ১ মোল মানেই অ্যাভোগেড্রো সংখ্যা। রসায়নের বিভিন্ন পরিমাপে এ সংখ্যা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিটিশ জ্যোতির্বিদ আর্থার স্ট্যানলি এডিংটনের নামানুসারে ১.৫৭ × ১০৭৯-কে বলা হয় এডিংটন সংখ্যা। তিনি বিশ্বাস করতেন, মহাবিশ্বে ওই পরিমাণ প্রোটন রয়েছে। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা হিসেব করে দেখেছেন, সংখ্যাটা প্রায় ১.৫৭ × ১০৮০। এডিংটন সংখ্যাকে ১৩৬ × ২২৫৬ আকারেও প্রকাশ করা হয়।
এই সংখ্যাটি বেশ মজার। কারণ একে প্রকাশ করা যায় না। আগের দুটি বড় সংখ্যা লিখে প্রকাশ করা যায়। কিন্তু এই সংখ্যা এত বড় যে একে লিখেও প্রকাশ করা যায় না। তাই এই সংখ্যার কোনো লিখিত রূপ নেই। গণিতবিদ রোনাল্ড গ্রাহামের নামানুসারে সংখ্যাটির নামকরণ করা হয়েছে গ্রাহাম’স নাম্বার বা গ্রাহামের সংখ্যা। দৈনন্দিন কাজে এর কোনো ব্যবহার নেই।
গুগলকে (Google) আপনি হয়তো সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেই চেনেন। তবে পৃথিবীখ্যাত এই প্রতিষ্ঠান তাদের নামটা নিয়েছে গুগল (Googol) সংখ্যাটি থেকে। বড় সংখ্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই গুগল সংখ্যা। সংখ্যাটি হলো ১০১০০। অর্থাৎ ১-এর পরে ১০০টা শূন্য বসাতে হবে! কারো কারো হয়তো মনে হচ্ছে, এ আর এমন কী বড় সংখ্যা? আসলে, এই সংখ্যাটি এত বড় যে পুরো পৃথিবীর সব বালুকণার চেয়েও বেশি।
পৃথিবীতে এখন প্রায় ৮০০ কোটি মানুষের বাস। এই সব মানুষের মাথার চুল এক জায়গায় জড়ো করলেও গুগল সংখ্যার সমান হবে না। মার্কিন গণিতবিদ এডওয়ার্ড কার্সনারের ভাইপো এই সংখ্যার নামকরণ করেন গুগল।
গুগলের চেয়েও বড় সংখ্যা গুগলপ্লেক্স। ১-এর পরে এক গুগল শূন্য বসালে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে, সেটাই গুগলপ্লেক্স সংখ্যা। অর্থাৎ ১০গুগল। এটাকে একটু অন্যভাবে লেখা যায়। এক গুগল মানে ১০১০০ বা ১০১০^১০। আর গুগলপ্লেক্স মানে ১০গুগল বা ১০১০^১০০ বা ১০১০^১০^১০।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।