আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার শাসন আমলে টানা ২১ মাস জরুরি অবস্থা জারি রাখেন। সেই সিদ্ধান্ত আজও তাড়িয়ে বেড়ায় কংগ্রেসকে। প্রসঙ্গ উঠলেই কৌশলে তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন দলের নেতারা।
দেশটির সংবাদমাধ্যম জানায়, রাহুল গান্ধী নিজেই এবার ব্যতিক্রম ঘটালেন। জানিয়ে দিলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা তার দাদির ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসেন তিনি। সেখানেই জরুরি অবস্থা থেকে শুরু করে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অকপট ছিলেন রাহুল। ছিল জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গও।
এ বিষয়ে রাহুল বলেন, “আমার মনে হয় ওটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দাদিমা নিজেও তা মেনেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস কখনো দেশের সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেনি। সত্যি কথা বলতে কী, কংগ্রেসের সেই ক্ষমতাও নেই। আমাদের দলীয় পরিকাঠামোই তাতে অনুমোদন দেয় না।’’
জরুরি অবস্থার সময় গেরুয়া শিবিরের বহু নেতাকে জেলবন্দী করা হয়েছিল। বিজেপি শাসনামলে এ নিয়ে লাগাতার আক্রমণের মুখে আছে কংগ্রেস। বিশেষ করে বাক্স্বাধীনতা, বিরোধিতার অধিকার এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেদেরই আক্রমণে জর্জরিত হয়েছে তাদের।
গত বছর জুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেসের কড়া সমালোচনা করে। একটি পরিবারের ক্ষমতার লোভ রাতারাতি পুরো দেশকে জেলখানায় পরিণত করেছিল বলে তোপ দেগেছিলেন তিনি।
কিন্তু রাহুলের দাবি, জরুরি অবস্থা ও বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)-এর লোকজন এনে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভরিয়ে তোলা হচ্ছে। নির্বাচনে বিজেপিকে যদি পরাজিতও করে কংগ্রেস, প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো থেকে গেরুয়া শিবিরের লোকজনকে ছেঁটে ফেলার উপায় নেই।
রাহুল বলেন, ‘‘প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্যই আধুনিক গণতন্ত্রের পরিচয়। প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে। বর্তমানে আরএসএস সেই স্বাধীনতার ওপরই আঘাত হানছে। সুকৌশলে, নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসারে গোটা বিষয়টি সম্পাদন করা হচ্ছে। গণতন্ত্রের অবক্ষয় হচ্ছে বলব না, ভারতে গণতন্ত্রের শ্বাসরোধ করা হচ্ছে।’’
এ নিয়ে মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের সঙ্গে নিজের কথোপকথনের প্রসঙ্গ টেনে রাহুল জানান, সরকার পড়ে যাওয়ার আগে কমলনাথ জানিয়েছিলেন, আরএসএস অনুগত আমলারা কেউ তার কথা শুনছেন না। এখানেই জরুরি অবস্থার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির পার্থক্য বোঝা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।