আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার সরকার সব ধরনের সিরাপ ও তরল ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। চলতি বছর দেশটিতে প্রায় ১০০ শিশু তীব্র কিডনি জটিলতায় (একেআই) মারা যাওয়ার পর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে ঐ শিশুদের মৃত্যুর পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে সরকার।
জানুয়ারি থেকে তীব্র কিডনি জটিলতায় শিশুদের মৃত্যুর হার বাড়ার প্রমাণ পেয়েছে ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এরপরই দক্ষিণ এশীয় দেশটির সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিল। ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ সেহরিল মানসুর জানান, বুধবার পর্যন্ত ২২ প্রদেশ থেকে ৯৯ মৃত্যুসহ ২০৬টি রিপোর্ট রেকর্ড করা হয়। মানসুর বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শিশুদের কিডনি জটিলতা শুরু হয়, যা জটিল আকার ধারণ করে আগস্টে। গত সপ্তাহ থেকে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, পূর্ব সতর্কতার অংশ হিসেবে সাময়িকভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের তরল ওষুধ প্রিসক্রিপশনে লিখতে নিষেধ করা হয়েছে। তাছাড়া তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ওষুধের দোকানকে প্রিসক্রিপশনের বাইরে তরল ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এর আগে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায়ও ভারতীয় কোম্পানির সিরাপ খেয়ে ৭০ শিশুর মৃত্যু হয়, যার প্রমাণ পেয়েছে দেশটির তদন্তকারী দল। মূলত প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ঐ সব শিশুর কিডনিতে জটিলতা দেখা দেয়।
তবে ইন্দোনেশিয়ার খাদ্য ও ওষুধ বিভাগ জানিয়েছে, যেসব ওষুধ খেয়ে গাম্বিয়ায় শিশুদের মৃত্যু হয়েছে তা এখানে নেই। গাম্বিয়ায় ৭০ শিশুর মৃত্যুর পেছনে যে চারটি কফ সিরাপকে দায়ী করা হচ্ছে সেগুলো যে উপাদান দিয়ে তৈরি সেই ডাইইথিলিন গ্লাইসল ও ইথিলিন গ্লাইসলের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে ইন্দোনেশিয়া। গাম্বিয়ায় যে চারটি কফ সিরাপকে শিশু মৃত্যুর জন্য দায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরীক্ষায় সেগুলোতে অননুমোদিত মাত্রায় ডাইইথিলিন গ্লাইসল এবং ইথিলিন গ্লাইসল পাওয়া গেছে। চারটি কফ সিরাপই ভারতে তৈরি।
ইন্দোনেশিয়ার খাদ্য ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিপিওএম থেকে বলা হয়, কোনো দ্রাবক তৈরিতে ডাইইথিলিন গ্লাইসল ও ইথিলিন গ্লাইসল ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তারা তা তদন্ত করে দেখছে।
বিপিওএমর বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জনসাধারণকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য বিপিওএম নিবন্ধনের সময় একটি প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক সবার জন্য ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয় এমন সব ধরনের সিরাপে দ্রাবক হিসেবে ডাইইথিলিন গ্লাইসল ও ইথিলিন গ্লাইসল ব্যবহারের অনুমতি আর দেওয়া হবে না। অতিরিক্ত মাত্রার ডাইইথিলিন গ্লাইসল ও ইথিলিন গ্লাইসল মানুষের জন্য ক্ষতিকারক এবং শরীরে নেওয়ার পর তা মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।