নাজিম হোসেন, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) রেজিস্ট্রার দপ্তরে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল ৫০০৯নং স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি জমা দেন। জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে এ তদন্ত কার্যক্রম হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আজ রবিবার সকাল ১০ টায় নির্যাতনের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি। এখানে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শেখ হাসিনা হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষাৎকার এবং তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আজ রবিবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ব্যক্তিগত সহকারী মিল্টন সিলগালা কপি সঙ্গে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দেন।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের একটি দায়িত্ব দিয়েছিলেন আমরা সেটি পালন করেছি। ভিসির নিকট প্রতিবেদনটি পৌঁছানোর জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর দিয়েছি। এখন পরবর্তী করনীয় তারা ঠিক করবেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, তদন্ত কমিটির সবার স্বাক্ষর সংবলিত ১১ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আরও বিভিন্ন নথি সংযুক্ত করে দেওয়া আছে। হলের অন্তত ২০ জন ছাত্রীর সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা হয়েছে কমিটির। প্রতিবেদনে সব বিষয় খতিয়ে দেখে শুধু যেটা ঘটেছে সেই মূল ঘটনা উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে কমিটির পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
এর আগে ছাত্রী নির্যাতনের নানা দিক খতিয়ে দেখতে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পর্যালোচনায় বসে তদন্ত কমিটি। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলের কক্ষে কমিটির সদস্যদের একত্রিত হওয়ার কথা থাকলেও, সেদিন তারা অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মার কক্ষে বসেন।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফুলপরী খাতুন নামে এক নবীন শিক্ষার্থী। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। রোববার ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, এলোপাতাড়ি থাপ্পড়, বিশ্রী গালাগাল, মুখ দিয়ে নোংরা গ্লাস পরিষ্কার করা এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী তাদের বিরুদ্ধে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ ও ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন অভিযুক্তরা। উভয় পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় হল ও প্রশাসনের পক্ষ হতে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।