জুমবাংলা ডেস্ক: সম্পদ ও দায়ের বিবরণীর হিসাব জানাতে ই-কমার্স সাইট ইভ্যালিকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ১৯ আগস্টের মধ্যে এই বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে।
ওই চিঠিতে, ইভ্যালিকে আগামী ২৬ আগস্টের মধ্যে মোট গ্রাহক ও গ্রাহকের কাছে দেনার পরিমাণ এবং আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ জানাতে বলা হয়েছে।
গত ১৯ জুলাই সম্পদ ও দায়ের বিবরণ, মোট গ্রাহক ও গ্রাহকের কাছে দেনার পরিমাণ এবং মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ জানতে চেয়ে ইভ্যালিকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে ওইদিন কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয় মন্ত্রণালয় থেকে।
পরে ২ আগস্ট ওই চিঠির জবাবে ইভ্যালি ছয় মাসের সময় চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করে।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বুধবার (১১ আগস্ট) ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা পরিস্থিতি বিষয়ক এক আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ছয় মাস সময়ের আবেদন নাকচ করে নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়। সেই নির্ধারণ করা সিদ্ধান্তই আজ চিঠি আকারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইভ্যালিকে দেওয়া হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে ইভ্যালিকে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে মোট ৪০৭ কোটি টাকা দায়ের বিপরীতে ইভ্যালির কাছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার চলতি সম্পদ কেন? বাকি টাকা ইভ্যালির কাছে থাকলে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে, না থাকলে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়, গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দায় এবং তা পরিশোধের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, ব্যবসা শুরুর পর গ্রাহকদের কাছ থেকে ইভ্যালি কত টাকা নিয়েছে, মার্চেন্টদের কত টাকা পরিশোধ করেছে এবং প্রশাসনিক ও অন্যান্য খাতে কত ব্যয় করেছে, তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ জানাতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তথ্য দেওয়ার জন্য যত সময়ের দরকার হয়, ইভ্যালিকে সেই সময়ই দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, কোম্পানিটি যথাসময়ে তথ্য দেবে।’
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে চিঠি নিয়ে ইভ্যালির কার্যালয়ে গেলে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল দেশের একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এখনো চিঠি পাইনি।’
অফিস বন্ধ ও খোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত হোম অফিস করছি। পরিস্থিতি বুঝে খোলা হবে।’
এর আগে বুধবার (১১ আগস্ট) আন্তমন্ত্রণালয়ের একই বৈঠকে আগাম মূল্য পরিশোধের পরও যারা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির কাছ থেকে পণ্য পাননি, তাদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই পরামর্শ দেন মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান।
মহাপরিচালক হাফিজুর বলেন, কোনো গ্রাহক যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন বা প্রতারিত হয়েছেন বলে মনে করেন, তাহলে তার উচিৎ হবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে মামলা করা। আর এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় জানতে পারবে কী পরিমাণ গ্রাহক প্রতারিত হচ্ছে এবং কী ধরনের সমস্যা, কী ধরনের দায়বদ্ধতা তৈরি হচ্ছে।
পণ্য উৎপাদন কিংবা বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের ইভ্যালি থেকে পাওনার বিষয়ে হাফিজুর বলেন, ‘যেসব মার্চেন্ট তাদেরকে পণ্য দিয়েছেন, তারা যদি নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পেয়ে থাকেন, তাহলে তাদেরও উচিৎ হবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
এদিকে আলোচিত এই ইকমার্স প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল জানিয়েছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ইভ্যালির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ৬ হাজার ৭৫৭টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে ৪ হাজার ১৪৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং বাকিগুলো নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
সাম্প্রতিক সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



