জুমবাংলা ডেস্ক: ঋণমুক্ত জীবন ও ইমানের সঙ্গে মৃত্যু চেয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন সাত দিন নিখোঁজের পর বুড়িগঙ্গা নদীতে ভেসে ওঠা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লব (৫১)।
তার এক ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মহান স্রষ্টার কাছে সবসময় তিনটি অনুগ্রহ চাইতেন দুরন্ত। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পিন পোস্টে সে কথা লেখা রয়েছে।
গত ১৮ মার্চ সেই পোস্টটি করেন দুরন্ত বিপ্লব।
তার সেই পোস্টটি হলো—
‘হে আল্লাহ, আপনার নিকট তিনটি অনুগ্রহ চাই!
১। শারীরিক সুস্থতা
২। ঋণমুক্ত জীবন এবং
৩। ইমানের সঙ্গে মৃত্যু
নিশ্চয়ই আপনি অসীম দয়ালু পরমকরুণাময়।’
এক সপ্তাহ নিখোঁজের পর বুড়িগঙ্গায় নদীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে রোববার ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দুরন্ত বিপ্লবকে।
সাঁতার না জানায় পানিতে ডুবে দুরন্ত মারা গেছেন বলা হলেও ময়নাতদন্ত বলছে, মাথায় ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে এ ছাত্রলীগ নেতাকে।
রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক মফিজ উদ্দিন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে— কোনো বস্তু দিয়ে দুরন্তের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
দুরন্তকে হত্যা করা হয়েছে এর আগেই দাবি করেছিলেন তার বোন শাশ্বতী বিপ্লব ও বোনজামাই ইমরুল খান।
ভাইয়ের এমন মৃত্যু ডিজার্ভ করেন না বলে ফেসবুকে আবেগঘন এক স্ট্যাটাস দেন শাশ্বতী।
তিনি লেখেন, ‘নারায়ণগঞ্জের পাগলাঘাটে কচুরিপানার ওপর এমন অসহায়ভাবে ভেসে থাকতে পারে না দুরন্ত বিপ্লব নামের কিংবদন্তিতুল্য ভাইটা আমার। সারাজীবন নিজের খেয়ালের রাজা ও। যারা ওকে চেনে, তারা জানে কী প্রবল আত্মসম্মানবোধ ছিল ওর।’
দুরন্তের ভাই দুর্জয় বিপ্লব বলেন, ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের ভাড়া বাসা থেকে মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির বাসায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন ভাই। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ৯ নভেম্বর আমরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।
দুর্জয় বিপ্লব জানান, চার বছর আগে তার ভাই চার বন্ধুর সঙ্গে মিলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একটি কৃষি খামার করেছিলেন। কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পুলিশ উদ্ঘাটন করবে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এখন পুলিশের কাজ কারা, কেন, কী কারণে ভাইকে হত্যা করেছে, তা খুঁজে বের করা।
শনিবার বিকালে দুরন্ত বিপ্লবের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সদস্য। তার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা থানার ইলাশপুর গ্রামে। তিনি কেরানীগঞ্জে ভাড়া থাকতেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।