আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য আন্তর্জাতিক রাজনীতির পালা কখনও কখনও বিপদসংকুল হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যখন একটি শক্তিধর রাষ্ট্র নিজেদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরতে উদ্যত হয়। সম্প্রতি, ইরান তার সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন একটি দক্ষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করেছে, যা ১,২০০ কিলোমিটার পাল্লার দাবি করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগের তীব্রতা বেড়ে গেছে।
নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্তারিত তথ্য
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম “কাসেম বাসির,” যা সর্বশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। এটি কেবল ইরানের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি চিহ্ন নয় বরং এর গোটামাত্রা কার্যক্রমেরও প্রতীক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই নতুন উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্মোচন পশ্চিমের দেশগুলোর জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
Table of Contents
ইসরায়েল এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশের পক্ষ থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রপ্রযুক্তির ব্যাপারে সমালোচনার প্রেক্ষিতে এই উন্মোচনের ঘটনাটি ঘটেছে। বিশেষ করে, ইসরায়েল মনে করে যে, ইরানের এই সামরিক অগ্রগতি মধ্যপ্রাচ্যের অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করবে।
বিষণ্ণ সময়ের মাঝেই এই জটিলতা
গত বছর অক্টোবরে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইরানি সশস্ত্র গোষ্ঠী অভিজিৎ নেতা ও মিলিশিয়াদের উপর হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েলও এর প্রতিও পাল্টা আঘাত করার চেষ্টা করে। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, অনেকেই চিন্তিত যে এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের উন্মোচন আরও বড় একটি সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যদি আমাদের ওপরে আক্রমণ হয়, তাহলে আমরা নীরব বসে থাকবো না।” তিনি আরও আশ্বস্ত করেন যে, তাদের কোনো প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের কিছু নেই, তবে মার্কিন ঘাঁটিগুলো তাদের উদ্দেশ্যবস্তু হিসেবে থাকবে।
পরমাণু আলোচনা এবং সামরিক সক্ষমতা
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে পরমাণু আলোচনা নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। ইরান বারবার ঘোষণা করে আসছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, যেকোনো সম্ভাব্য সামরিক সংঘর্ষের মধ্যে, আন্তর্জাতিক মহল মহাদেশীয় নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তেহরান তাদের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তিতে দৃঢ় থাকার সংকল্প প্রকাশ করেছে, যা পশ্চিমাদের জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এবং ভবিষ্যতের চিন্তাভাবনা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের উন্মোচনের ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল ইরানের এই পদক্ষেপকে একটি প্রধান বিপদের চিহ্ন হিসেবে দেখছে। এদিকে, ইরানের আধিকারিকরা বারবার জানিয়েছে যে, তাদের সামরিক শক্তি রক্ষামূলক এবং আত্মরক্ষার্থে নিয়ে গঠিত।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এসব বিস্ফোরক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে আলোচনা চালানোর প্রয়োজন রয়েছে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে সংঘাত প্রতিহত করার মতো একাধিক কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইরান ও পশ্চিমাদের মাঝে শান্তির জন্য একটি সহায়ক আলোচনার প্ল্যাটফর্ম খুজে বের করতে হবে।
শেষ পর্যন্ত, সামরিক শক্তির এই প্রতিযোগিতা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা অবস্থা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে, যা কেবল ইরান নয়, বরং পুরো علاقے এবং বিশ্বের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে পারে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের ঘটনা ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে যুক্তরাষ্ট্র
FAQ:
- ইরানের নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নাম কী?
- ইরানের নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নাম “কাসেম বাসির”।
- এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা কত?
- এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১,২০০ কিলোমিটার।
- ইরান-এর সামরিক শক্তির উদ্দেশ্য কী?
- ইরান দাবি করে যে, তাদের সামরিক শক্তি রক্ষামূলক এবং আত্মরক্ষার্থে তৈরি।
- পশ্চিমা দেশগুলো কেন উদ্বিগ্ন?
- পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বিগ্ন, কারণ ইরানের সামরিক শক্তির বিকাশ মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে।
- যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী?
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।