জুমবাংলা ডেস্ক : ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, ‘ইলিশ আমাদের খুব বড় একটা সম্পদ। ইলিশের সাথে অনেক জেলে ও জেলে পরিবার জড়িত আছেন। মা ইলিশকে রক্ষা করতে, জেলেদের রক্ষা করতে আমরা কাজ করছি।’
সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইউএসএআইডির ইকোফিশ-২ প্রকল্পের রেজাল্ট শেয়ারিং এবং ফেজ-আউট কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএসএআইডির সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ আয়োজিত কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ইকোফিশ-২ প্রকল্পের চীফ অব পার্টি ড. মোহাম্মদ মোকাররম হোসেইন। আলোচনায় অংশ নেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর রিড জে. অ্যাশলিম্যান, ওয়ার্ল্ডফিশের প্রোগ্রামস অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর ড. অ্যান এলিজাবেথ ফ্লেমিং, ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের ইন্টারিম কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. বিনয় কুমার বর্মণ প্রমূখ।
কর্মশালায় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার দেশের প্রাকৃতিক ও সামুদ্রিক সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘প্রাকৃতিক ও সামুদ্রিক সম্পদের সঠিক ব্যবহারের ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে আরো সমৃদ্ধ হবে, দেশ আর গরিব থাকবে না।
এক্ষেত্রে ইলিশ বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইলিশ ধরায় বর্তমানে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে, এই সময় যেন জেলেরা কষ্ট না পায়, তাদের যেন অভুক্ত থাকতে না হয়, সেটার জন্য সরকার চেষ্টা করছে। এই সাহায্যটা আরো বাড়ানো হবে।’
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘সমুদ্র বিজ্ঞানীরা থাকলেও আমরা তাদের কাজে লাগাতে পারছি না।
যারা মাছ ধরেন, তাদেরও মর্যাদা দিতে হবে। তারাও এক হিসেবে বিজ্ঞানী। সরকারের পক্ষ থেকে এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করবো, এই প্রকল্পের কাজটা যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয়। উপকূলের নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইকোফিশ-২ প্রকল্পকে আরো কাজ করতে হবে।’
কর্মশালায় উত্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে ড. মোহাম্মদ মোকাররম হোসেইন জানান, এই প্রকল্পটি বিভিন্ন আয়বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করেছে। বিভিন্ন এলাকায় ২২২টি উইম্যান ইনকাম অ্যান্ড নিউট্রিশন গ্রুপের মাধ্যমে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলেছে। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো নারীরা তাদের পরিবারের অর্থনীতিতে যেন কিছুটা অবদান রাখতে পারে। এর ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ ৭১ শতাংশ থেকে বেড়ে শতভাগে উন্নীত হয়েছে। একইসাথে নারীদের ব্যক্তিগত সঞ্চয় ৮ দশমিক ৭০ মিলিয়ন টাকায় (৭৩ হাজার ৭৫৮ ইউএস ডলার) উন্নীত হয়েছে।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে লন্ডনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সাইফুজ্জামান
কর্মশালায় জানানো হয়, এই প্রকল্পটি উপকূল এবং সাগরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের প্রান্তিক মৎস্যজীবী পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে। এই প্রকল্প থেকে সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকার ১৫ হাজার মৎস্যজীবী পরিবারের ৭২ হাজারের বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছে। গত ৫ বছরে ৪২৯টি ফিশারিজ কনজারভেশন গ্রুপের ১৫ হাজারের বেশি মৎস্যজীবীকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে, যা মৎস্যজীবীদের উপকূলীয় সম্পদের প্রতি দায়িত্বশীল করার পাশাপাশি তাদের ক্ষমতায়নে কাজ করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডলফিন, কচ্ছপসহ ২৩৬টি বিপন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীকে সফলভাবে জীবিত অবস্থায় অবমুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয় ১৪০ জন তরুণকে স্বেচ্ছাসেবী ব্লু গার্ড হিসেবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।