জুমবাংলা ডেস্ক : ইলিশের শহরখ্যাত চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ইলিশের বাজার চড়া। এতে ভোজন রসিকরাও এখন এড়িয়ে চলছেন ইলিশের বাজার। মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষও স্বাদ নিতে পারছে না। খেটে খাওয়া মানুষের তো ইলিশের নাম নেওয়াই বারণ।
চাঁদপুরে ইলিশের বাজার চড়া হওয়ায় তিন মণ ধানের টাকায়ও মিলছে না এক কেজি ইলিশ।
ইলিশ কিনতে আসা শহরের পালপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন বলেন, বাজারে এখন এক মণ আমন ধান বিক্রি হচ্ছে সাত থেকে আটশো টাকা। সেখানে এক কেজি সাইজের ইলিশের দাম আড়াই হাজার টাকা। এতে করে তিন মণ ধান বিক্রির টাকা দিয়েও একটা ইলিশ কিনা সম্ভব না। ইলিশের যেই দাম, তাতে আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের পক্ষে তা কিনে খাওয়া সম্ভব না।
আরেক ক্রেতা মো. ইয়াসিন বলেন, ইলিশ মাছ কিনব বলে বাজারে এসেছি। ঘুরে ঘুরে দেখলাম। কিন্তু যে দাম চাচ্ছে তা আমাদের নাগালের বাইরে। তেলাপিয়া কিনে বাড়ি ফিরব।
অন্যদিকে নদীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাল ফেলেও ইলিশ ধরতে পারছে না জেলেরা। তারা জানান, যে পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে তাতে নৌকার খরচ তোলাই কষ্টসাধ্য। সংসারের টানাপোড়েন পিছু ছাড়ছে না।
শহরের টিলাবাড়ি এলাকার জেলে ইয়াকুব আলী বলেন, সারা রাত জাল বেয়ে ৬-৭ হাজার টাকার মাছ পেয়েছি। নৌকা খরচ ও ভাগিদের দিয়ে হাতে তেমন একটা থাকবে না। নদীতে ইলিশ নাই বললেই চলে। এভাবে মাছের সংকট থাকলে সামনে সংসার চালাব কীভাবে আর বাচ্চাদের লেখাপড়াই বা করাব কীভাবে সেই হিসাব পাই না।
ইলিশ ব্যবসায়ী বিপ্লব খান বলেন, দেশের অন্যতম বৃহৎ ইলিশের পাইকারি বাজার বড় স্টেশন মাছ ঘাটে মৌসুমে ইলিশ সরবরাহ হয়ে থাকে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার মণ পর্যন্ত। বর্তমানে এই বাজারে ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে মাত্র আট থেকে দশ মণ। তাই অনেকটাই অবসর সময় কাটছে ব্যবসায়ীদের।
তিনি বলেন, বর্তমানে এক কেজি থেকে বারোশো গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার পাঁচশো থেকে দুই হাজার আটশো টাকা দরে। তা ছাড়া সাত থেকে আটশো গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি এক হাজার আটশো টাকা দরে। পাঁচশো গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি এক হাজার তিনশো টাকা দরে।
অচিরেই ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁদপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, বর্তমানে ইলিশের মৌসুম না হওয়ায় জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। আগামী জুলাই-আগস্টে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেলে নদীতে ইলিশের আনাগোনা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। তখন জেলেদের জালে ইলিশ পাবে এবং সেপ্টেম্বর অক্টোবরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করি। তখন দামও ক্রেতাদের নাগালে চলে আসবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।