আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন দায়িত্ব লাভের পর গতকাল প্রথম তিনি ইহুদিবাদী ইসরাইল সফরে গেছেন। তেলআবিবে তিনি ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গান্তেযের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ইসরাইলের নিরাপত্তা রক্ষায় বাইডেন প্রশাসন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ খবর পার্সটুডে’র।
তিনি আরো বলেছেন, ‘ইসরাইল হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র এবং তাদের মিত্রতা এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি এবং আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতি ওয়াশিংটনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বলেও তিনি জানান।’
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার চার বছরের শাসনামলে একদিকে আরব মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছেন অন্যদিকে এ অঞ্চলে ব্যাপক ইরানভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন যাতে আরব দেশগুলোর কাছে আরো বেশি পরিমাণে অস্ত্র বিক্রি করা যায়। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একই নীতি অনুসরণ করে চলেছেন। আমেরিকার জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহরান কামরাভা বলেছেন, আমেরিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন তাতে পশ্চিম এশিয়ার ব্যাপারে তাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন হবে না। উদাহরণ স্বরূপ দখলদার ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থনের কথা উল্লেখ করা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রথম শীর্ষ কোনো কর্মকর্তার পশ্চিম এশিয়া সফরের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বার্তা রয়েছে এবং তাতে এ অঞ্চলের ব্যাপারে আমেরিকার নতুন নীতির আভাস রয়েছে। আর সে নীতি হচ্ছে পশ্চিম এশিয়ো অঞ্চলের বিষয়ে মার্কিন নিরাপত্তা ও সামরিক স্বার্থ টিকিয়ে রাখা এবং আরব মিত্রদের রক্ষার অজুহাতে এ অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি ধরে রাখা। এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন হুবহু সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে তিনিও আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ইসরাইল সফরকালে আরেকটি যে বিষয় উঠে এসেছে তাতে বোঝা যায় বিভিন্ন ইস্যুতে তেলআবিব ও ওয়াশিংটন অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং তারা উভয়ে ইরানভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। যদিও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কিংবা পরমাণু সমঝোতা নিয়ে করণীয় সম্পর্কে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ অথবা ইরানভীতি ছড়ানোর বিষয়ে তাদের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী বলেছেন, ইসরাইল ও পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ইরান হুমকি। যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম এশিয়ায় যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করেছে সে বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী বলেছেন, তেলআবিব এমনভাবে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রেখে চলেছে যাতে ইরানের সঙ্গে নতুন করে যে কোনো চুক্তির কারণে অস্ত্র প্রতিযোগিতার ধারা থেমে না যায়।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান অবস্থা থেকে বোঝা যায় ইসরাইল ষড়যন্ত্র করে কিংবা সরাসরি হামলা চালিয়ে এ অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোকে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। আর এর পেছনে রয়েছে ওয়াশিংটনের পূর্ণ রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।