আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঘণ্টা প্রতি ঘণ্টা পাল্টাচ্ছে গাজার মানবিক চিত্র। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে গাজাবাসীর জীবনদর্শন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজার ২১ লাখ মানুষকে “সুরক্ষার জন্য স্থানান্তর” করার পরিকল্পনা চলছে, যা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ পরিস্থিতিতে আসছে গাজার উপর ইসরায়েলের নতুন অনুপ্রবেশের খবর, যেখানে জীবনযাপন ও খাদ্য সংকটে ভুগছে সাধারণ মানুষ।
Table of Contents
গাজার মানবিক পরিস্থিতি: এক নতুন সংকট
গত সপ্তাহে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজার অভিযানকে আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এতে গাজার বিপুল সংখ্যক জনগণকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ছাড়াও, হামাসের সামরিক শক্তি ভাঙার জন্য নতুন পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের কারণে গাজার ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এবং এই সংখ্যাটি আরো বাড়তে পারে, কারণ খাদ্য সংকট ও হাসপাতালে চিকিৎসার অভাব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বর্ণিত ওই পরিকল্পনায় গাজার কিছু অংশ দখল করে হামাসের শক্তি ভাঙার লক্ষ্যে নতুন কৌশল প্রয়োগ করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি গাজার মানুষের জন্য এক নতুন সংকট সৃষ্টি করবে এবং তাদের জীবনের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পূরণে আরও বড় বাধার সম্মুখীন করবে।
মানবিক সংকটের মুখোমুখি গাজাবাসীরা
গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসার অভাব এবং ঘন ঘন হামলার ফলে মৃত্যু ও ক্ষতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। খাদ্য ও ওষুধের উপর চাপ অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যার ফলে গাজার লোকজন এখন এক বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থায় জাতিসংঘের মানবিক সংস্থাগুলো দ্রুত সহায়তায় এগিয়ে আসতে চান।
ইসরায়েলের কার্যক্রম: আন্তর্জাতিক নীতি ও বিরোধিতা
ইসরায়েলের সামরিক পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও নীতির প্রতি বিদ্রুপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছেন যে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুধুমাত্র সামরিক দস্যুবৃত্তির লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এদিকে, হামাস ও গাজার মানুষ দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে, যা ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের একমাত্র অস্ত্র হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের অভিপ্রায় হলো—সরকারি নীতিমালায় যুক্ত করা সত্ত্বেও ইসরায়েল যেন কোনও মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজার মানুষদের কাছে পৌঁছাতে না পারে। প্রশাসনিকভাবে সংগঠনগুলো বলছে, এটি ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ ও গণহত্যার লক্ষ্যে পরিচালিত হওয়া উচিত নয়।
গাজার স্বরাষ্ট্র পরিস্থিতি: অবস্থা জটিল
দেশটির সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভেধের কারণে জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সামরিক উচ্চতর কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সাড়া দিয়েছে সাধারণ জনগণ। তারা আবারও দক্ষিণে সরিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
গাজায় মানবিক সংকট মোকাবেলা করতে আন্তর্জাতিক সমাজের ভূমিকা অপরিহার্য। আন্তর্জাতিক আইনে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হলে একসাথে কাজ করার প্রয়োজন। জাতিসংঘও ত্রাণ পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করে বলেছে, ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলো মানবিক নীতির পরিপন্থী।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের শক্তি ভাঙার জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে। এতে গাজাবাসীদের জীবনে বিতর্ক ও চরম সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক মানবিক সহায়তা পৌঁছানো, গাজার জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজ করা এখন খুবই জরুরি।
গাজার গণ্ডির মধ্যে মানবিক দুর্দশা ও অশান্তির কারণে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। এক্ষেত্রে দরকার সুসংহত আন্তর্জাতিক চাপ এবং কার্যকর পদক্ষেপ। শহরটির অবরুদ্ধ পরিস্থিতি কখনই যেন অব্যাহত না থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে।
FAQs
- গাজায় ইসরায়েলি হামলার কারণ কী?
ইসরায়েলি হামলার পেছনে সামরিক লক্ষ্য রয়েছে, যার মধ্যে হামাসের শক্তি ভাঙা ও এলাকা দখলে নেওয়া অন্তর্ভুক্ত। - গাজার বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি কেমন?
গাজার মানুষ খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে চরম সংকটে রয়েছে, যেখানে অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাব দেখা দিয়েছে। - জাতিসংঘ গাজার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলছে?
জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ মানবিক নীতির বিরুদ্ধে এবং তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করার দায়িত্ব রয়েছে। - গাজার লোকজনের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমাজের ভূমিকা কী?
আন্তর্জাতিক সমাজের দায়িত্ব হলো গাজার মানুষের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষা করা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।