Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন:সফলতার মূলমন্ত্র
    জাতীয় ডেস্ক
    ইসলাম ও জীবন

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন:সফলতার মূলমন্ত্র

    জাতীয় ডেস্কMd EliasJuly 29, 202510 Mins Read
    Advertisement

    মেঘলা বিকেল। ঢাকার শ্যামলীর ছোট্ট একটি আপার্টমেন্টে রহিমা আপা জানালার পাশে বসে কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন। কণ্ঠে একটু ক্লান্তি, চোখে অশ্রুর চিহ্ন। চাকরির প্রমোশন আটকে গেছে, সন্তানের পড়ালেখা নিয়ে চিন্তা, স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য – জীবনের এই জটিল গিট্টু খুলবে কীভাবে? হঠাৎ তাঁর নজর পড়ে সূরা আশ-শামসের ৯-১০ নম্বর আয়াতে: “নিশ্চয়ই সফলকাম হয় সে, যে নিজেকে পবিত্র করে। আর ব্যর্থ হয় সে, যে নিজেকে কলুষিত করে।” এই আয়াতগুলো তাঁর হৃদয়ে নতুন আলোর সঞ্চার করল। ইসলাম তো শুধু নামাজ-রোজার বিধানই দেয়নি, দিয়েছে আত্মার পরিশুদ্ধি ও উন্নয়নের এক পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান! রহিমা আপার মতো অসংখ্য মানুষ আজ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন: ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন কীভাবে ব্যক্তিগত, পেশাগত ও পারিবারিক সফলতার চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে?

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন: শুধু ধর্মাচরণ নয়, জীবনদর্শন

    ইসলামে আত্মউন্নয়ন বা “তাজকিয়াতুন নাফস” কোনো বিচ্ছিন্ন ধারণা নয়; এটি ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সবচেয়ে বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে নিজের হিসাব নেয় এবং মৃত্যুর পরের জীবনের জন্য আমল করে” (তিরমিজি)। এখানে “নিজের হিসাব নেওয়া”ই হলো আত্মউন্নয়নের মূলভিত্তি। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মউন্নয়ন মানে কেবল মন্দ কাজ বর্জন নয়, বরং নিজের অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়মে বিকশিত করা – যার কেন্দ্রে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এটি একটি সক্রিয়, চিরন্তন প্রক্রিয়া যার লক্ষ্য সফলতা কেবল ইহকালীন নয়, পরকালীনও।

    আত্মশুদ্ধি (তাজকিয়া): সফলতার প্রথম সোপান

    আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব: কুরআন-হাদিসের আলোকে

    কুরআন মজিদে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্পষ্টভাবে আত্মশুদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন: “সাফল্য লাভ করল সে, যে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করল। আর ব্যর্থ হলো সে, যে তাকে কলুষিত করল” (সূরা আশ-শামস: ৯-১০)। এই আয়াত দুটি ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করে। বিখ্যাত ইসলামিক পণ্ডিত ইমাম আল-গাজ্জালি (রহ.) তাঁর গ্রন্থ ‘ইহইয়া উলুমিদ্দীন’-এ বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন কীভাবে নফসের কুপ্রবৃত্তি (অহংকার, লোভ, ক্রোধ, হিংসা) চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। আত্মশুদ্ধি ছাড়া প্রকৃত সফলতা অর্জন ইসলামে অকল্পনীয়। এটি এমন এক ভিত্তি যার উপর দাঁড়িয়ে ব্যক্তিত্বের সব স্তর গড়ে ওঠে।

    আত্মশুদ্ধির বাস্তব পদ্ধতি: দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ

    • মুহাসাবা (আত্মসমালোচনা): প্রতিদিন রাতে শোবার আগে অন্তত ৫ মিনিট নিজের কাজকর্ম, কথাবার্তা, চিন্তাভাবনার হিসাব নিন। কোনটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছিল? কোনটি ছিল গুনাহ বা অনর্থক? এটি নিয়মিত করলে আত্মসচেতনতা বাড়বে। সাহাবি উমর (রা.) বলতেন, “তোমরা মৃত্যুর আগেই নিজেদের হিসাব নাও।”
    • তাওবা (অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা): ভুল স্বীকার করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া আত্মাকে হালকা করে ও উন্নতির পথ প্রশস্ত করে। কুরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো – খাঁটি তাওবা” (সূরা আত-তাহরীম: ৮)। এটি কেবল গুনাহ মাফের মাধ্যম নয়, আত্মিক পুনর্জাগরণেরও মাধ্যম।
    • যিকির ও দুআ (স্মরণ ও প্রার্থনা): আল্লাহর স্মরণে মন প্রশান্ত হয় এবং নেতিবাচক চিন্তা দূর হয়। “জেনে রাখো, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়” (সূরা আর-রাদ: ২৮)। দুআ হলো আল্লাহর সাথে সরাসরি সংযোগ; এতে নিজের দুর্বলতা, চাওয়া-পাওয়া নিবেদন করা আত্মাকে শক্তিশালী করে।

    ইখলাস (আন্তরিকতা): প্রতিটি কাজের প্রাণ

    সব আমলের ভিত্তি ইখলাস

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের অন্যতম স্তম্ভ হলো ইখলাস বা কাজে একনিষ্ঠতা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “আমলসমূহের মূল ভিত্তি হচ্ছে নিয়্যত (ইচ্ছা)” (বুখারি)। অর্থাৎ, কোনো কাজের মূল্য নির্ভর করে তা কিসের জন্য করা হচ্ছে তার উপর। নামাজ, দান-সদকা, জ্ঞানার্জন, এমনকি পারিবারিক ও পেশাগত দায়িত্ব – সবকিছুতে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি খোঁজার নামই ইখলাস। লোক দেখানো বা আত্মতুষ্টির জন্য করা কাজ আত্মাকে উন্নত করে না, বরং ধ্বংস করে। প্রকৃত সফলতা লাভের জন্য প্রতিটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজেও এই আন্তরিকতা জরুরি।

    ইখলাস বাস্তবায়নে করণীয়:

    • নিয়্যতের বিশুদ্ধতা: প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে সংক্ষেপে মনে মনে নিয়্যত করুন: “আমি এ কাজটি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করছি।”
    • প্রশংসা-সমালোচনার ঊর্ধ্বে: মানুষের প্রশংসা পাওয়া বা সমালোচনা এড়ানো যেন কাজের উদ্দেশ্য না হয়। কাজের ফলাফল আল্লাহর হাতে সঁপে দিন।
    • গোপন আমল: কিছু নেক কাজ গোপনে করা (যেমন: গোপনে দান, রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ) ইখলাস রক্ষায় সহায়ক। রাসুল (সা.) বলেছেন, “সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাঁর ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন… তাদের মধ্যে একজন সে ব্যক্তি যে এমন নির্জন স্থানে আল্লাহকে স্মরণ করেছে যে, তার চোখ থেকে অশ্রু বিগলিত হয়েছে” (বুখারি)।

    ইলম (জ্ঞানার্জন): আত্মোন্নয়নের অপরিহার্য অস্ত্র

    জ্ঞানার্জনের ফরজ বিধান

    ইসলামে জ্ঞানার্জন ফরজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ” (ইবনে মাজাহ)। এখানে জ্ঞান বলতে শুধু ধর্মীয় জ্ঞান নয়, দুনিয়াবি সকল প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর জ্ঞানকেই বোঝায়। ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের পথে জ্ঞান হলো আলো। অজ্ঞতা আত্মাকে অন্ধকার ও দুর্বল করে। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে ব্যক্তি নিজেকে, তার স্রষ্টাকে, সৃষ্টিজগৎকে এবং তার দায়িত্ব-কর্তব্যকে সঠিকভাবে বুঝতে পারে, যা তার সফলতার পথকে সুগম করে।

    কীভাবে জ্ঞানার্জন করবেন?

    • কুরআন-হাদিস অধ্যায়ন: নিয়মিত কুরআনের অর্থসহ তিলাওয়াত ও হাদিস অধ্যায়ন আত্মিক খোরাক জোগায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গবেষণা (২০২৩) দেখায়, নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াতকারীদের মানসিক চাপের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
    • দুনিয়াবি জ্ঞানার্জন: পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, কৃষি – যে কোনো কল্যাণকর বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করাও ইবাদত। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটে (https://www.ugc.gov.bd/) দেশের উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুযোগ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
    • বুদ্ধিজীবীদের সাহচর্য ও বই পড়া: জ্ঞানী ব্যক্তিদের সংসর্গ এবং ভালো বই পড়া চিন্তার জগৎকে প্রসারিত করে। আল্লামা ইকবাল বলেছেন, “আত্মার উত্থান-পতন নির্ভর করে তার সঙ্গীর উপর।”

    তাওয়াক্কুল আলাল্লাহ: প্রচেষ্টা ও আল্লাহর উপর ভরসা

    ভরসা ও প্রচেষ্টার সমন্বয়

    ইসলামে আত্মউন্নয়ন ও সফলতার জন্য শুধু প্রচেষ্টা (কাসব) নয়, আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা (তাওয়াক্কুল) অপরিহার্য। কুরআনে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট” (সূরা আত-তালাক: ৩)। তবে এটা কোনো অলস ভরসা নয়। রাসুল (সা.) স্পষ্ট করেছেন, “তুমি উট বেঁধে তারপর আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করো” (তিরমিজি)। অর্থাৎ, সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টা-তদবির করার পর ফলাফল আল্লাহর হাতে সঁপে দেয়াই হলো তাওয়াক্কুল। এই দ্বৈত নীতি ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নকে ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবমুখী করে তোলে।

    তাওয়াক্কুল বাস্তব জীবনে:

    • পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি: যে কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য উত্তম পরিকল্পনা করুন এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিন (উট বাঁধা)।
    • কঠোর পরিশ্রম: নিজের দায়িত্ব পালনে সাধ্যমতো কঠোর পরিশ্রম করুন (প্রচেষ্টা)।
    • ফলাফলের উদ্বেগ ত্যাগ: সাধ্যমতো চেষ্টা করার পর ফলাফল নিয়ে অহেতুক উদ্বিগ্ন না হয়ে, আল্লাহর হিকমতের উপর আস্থা রাখুন এবং যে ফলই আসুক তাতে সন্তুষ্ট থাকার চেষ্টা করুন। এতেই মিলবে মানসিক শান্তি।

    সবর ও শোকর: জীবনের উত্থান-পতনের সমাধান

    ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার শক্তি

    জীবনে সুখ-দুঃখ, সফলতা-ব্যর্থতা আসবেই। ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের জন্য এই দুটি অবস্থায় যথাযথ আচরণ করা শেখা জরুরি। দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ (সবর) এবং সুখ-সমৃদ্ধি, সফলতায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় (শোকর) – এই দুটিই ঈমানের দাবি। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, জান-মাল ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও” (সূরা আল-বাকারা: ১৫৫)। আবার তিনি বলেন, “যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের আরও দেব” (সূরা ইব্রাহীম: ৭)। এই সবর ও শোকরের চর্চাই ব্যক্তিকে অভ্যন্তরীণভাবে অটুট, স্থিতিশীল ও প্রকৃত সফল করে তোলে।

    সবর ও শোকরের অনুশীলন:

    • অসুবিধায় আল্লাহর পরিকল্পনা বিশ্বাস: কোনো কষ্ট বা ব্যর্থতায় হতাশ না হয়ে বিশ্বাস রাখুন এতে আল্লাহর কোনো না কোনো হিকমত নিহিত আছে। দুআ করুন: “হে আল্লাহ, আমি আপনারই ফায়সালার উপর ধৈর্য ধারণ করছি। আমাকে সাহায্য করুন।”
    • ক্ষুদ্র সুখের শুকরিয়া: দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট নেয়ামতের (সুস্থতা, এক বেলা আহার, প্রিয়জনের সান্নিধ্য) জন্য সচেতনভাবে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। এতে মন কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠবে।
    • ইবাদতে শোকর: শোকর শুধু কথায় নয়, আমলের মাধ্যমেও হয়। আল্লাহর দেয়া নেয়ামত তারই পথে ব্যয় করা, অন্যদের সাহায্য করা – এগুলোও শোকরের বহিঃপ্রকাশ।

    পরিবার ও সমাজ: আত্মোন্নয়নের পরীক্ষাক্ষেত্র

    সম্পর্কের ভিত্তিতে আত্মার পরিশীলন

    ইসলামে ব্যক্তির আত্মোন্নয়ন কোনো নির্জন সাধনা নয়; এটি পরিবার, প্রতিবেশী ও বৃহত্তর সমাজের সাথে সুন্দর ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়েই পরিপূর্ণতা পায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে তার পরিবারের কাছে উত্তম” (তিরমিজি)। পিতামাতার সাথে সদাচরণ, সন্তানের লালন-পালনে ন্যায়পরায়ণতা, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার ও সম্মান, প্রতিবেশীর হক আদায় – এগুলোই ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের বাস্তব ময়দান। এখানেই ধৈর্য, ক্ষমা, দানশীলতা, ন্যায়বিচার ও ভালোবাসার মতো গুণাবলির চর্চা হয়। প্রকৃত সফলতা তখনই, যখন ব্যক্তিগত উন্নয়ন সামাজিক কল্যাণে রূপ নেয়।

    সম্পর্কে আত্মোন্নয়নের সুযোগ:

    • পরিবারে দায়িত্ব পালন: পরিবারের সদস্যদের প্রতি দায়িত্ব (অর্থনৈতিক, আবেগিক, শিক্ষামূলক) সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করা আত্মিক পরিশুদ্ধি আনে।
    • প্রতিবেশীর হক আদায়: তাদের কষ্টে সাহায্য করা, বিপদে পাশে দাঁড়ানো, তাদের অধিকার রক্ষা করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে ক্ষুধার্ত রেখে পেট পুরে খায়, সে প্রকৃত মুমিন নয়।”
    • সামাজিক দায়িত্ব: গরিব-দুঃখী, এতিম, অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা। জাকাত, সদকা, ওয়াকফের মাধ্যমে সম্পদের পরিশুদ্ধি ও আত্মার উন্নয়ন ঘটে।

    দৈনন্দিন আমলের মাধ্যমে টেকসই আত্মোন্নয়ন: ৭টি সূত্র

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের তত্ত্ব জানার পর আসে বাস্তবায়নের পালা। এখানে কিছু সহজ কিন্তু গভীর প্রভাবসম্পন্ন দৈনন্দিন আমল:

    1. ফজরের নামাজ ও তাহাজ্জুদ: ভোররাতের প্রশান্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের সর্বোত্তম সময়। ফজরের নামাজ জামাতে আদায় এবং তাহাজ্জুদ (যদি সম্ভব হয়) আত্মাকে সজীব ও আলোকিত করে।
    2. নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত ও তাদাব্বুর: প্রতিদিন অন্তত কিছু অংশ অর্থসহ কুরআন পড়ুন এবং তা নিয়ে চিন্তা করুন (তাদাব্বুর)। এটি হৃদয়ে প্রশান্তি ও জ্ঞানের আলো বয়ে আনে।
    3. দোয়া ও যিকিরের অভ্যাস: দিনের বিভিন্ন মুহূর্তে (খাওয়ার আগে-পরে, বাইরে বের হওয়ার সময়, ঘুমানোর আগে) রাসুল (সা.) শেখানো দুআ ও যিকির পড়ুন। এগুলো আত্মাকে আল্লাহর স্মরণে নিবিষ্ট রাখে।
    4. রোজার সুন্নত চর্চা: শুধু রমজান মাসেই নয়, সপ্তাহে সোম-বৃহস্পতিবার কিংবা মাসে আইয়ামে বিজের (চন্দ্রমাসের ১৩,১৪,১৫ তারিখ) রোজা রাখুন। রোজা আত্মিক সংযম ও আল্লাহভীতিকে শক্তিশালী করে।
    5. সদকাতুল ফিতর ও নফল সদকা: সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মিত দান করুন। ছোট ছোট দানও (সদকাতুল ফিতর) আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। দান যেন গোপনে হয় সে দিকে খেয়াল রাখুন।
    6. জ্ঞানার্জনে সময় বরাদ্দ: দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ভালো বই পড়া, ইসলামিক লেকচার শোনা বা কোনো দক্ষতা উন্নয়নে ব্যয় করুন।
    7. নিজের ও অন্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা: প্রতিদিন নিজের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করুন। অন্যের ভুল ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “ক্ষমা করো, তোমাকেও ক্ষমা করা হবে” (মুসলিম)।

    ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়নের এই যাত্রাপথ কঠিন নয়, তবে ধারাবাহিকতা চায়। ছোট ছোট পদক্ষেপে শুরু করুন। নিজের অগ্রগতি নিয়ে ধৈর্য ধরুন। মনে রাখবেন, এটি কোনো প্রতিযোগিতা নয়; এটি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের এক ব্যক্তিগত ও গভীর অভিযাত্রা। প্রতিটি পবিত্র চেষ্টা, প্রতিটি কষ্টার্জিত উন্নতি আপনার আত্মার মূল্যবৃদ্ধি করবে এবং ইহকালীন ও পরকালীন সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপনার হাতেই আছে সেই চাবিকাঠি – আজই শুরু করুন নিজেকে জানার, শুদ্ধ করার এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার মহান প্রয়াস।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    ইসলামে আত্মউন্নয়ন বলতে কী বোঝায়?
    ইসলামে আত্মউন্নয়ন (তাজকিয়াতুন নাফস) হলো আত্মাকে পাপ, কুপ্রবৃত্তি ও নেতিবাচকতা থেকে শুদ্ধ করে আল্লাহ প্রদত্ত সৎগুণাবলী (সবর, শোকর, তাওয়াক্কুল, ইখলাস) দিয়ে নিজের ব্যক্তিত্বকে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। এর লক্ষ্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জন এবং ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা। এটি ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং নিয়মিত আমল, আত্মসমালোচনা ও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে অর্জনীয়।

    দৈনন্দিন জীবনে ইসলামিক আত্মউন্নয়নের সহজ কিছু পদ্ধতি কী কী?
    প্রতিদিন ফজরের নামাজ জামাতে পড়া, কিছু সময় কুরআন তিলাওয়াত ও তার অর্থ নিয়ে চিন্তা করা, ছোট ছোট দুআ ও যিকিরের চর্চা করা (যেমন: খাওয়ার আগে-পরে, ঘরের বাইরে যাওয়ার সময়), রোজার সুন্নত পালন (সপ্তাহে ২ দিন বা মাসে ৩ দিন), সামর্থ্য অনুযায়ী গোপনে দান করা এবং প্রতিদিন রাতে শোবার আগে নিজের কাজের হিসাব নেওয়া (মুহাসাবা) – এই সহজ অভ্যাসগুলো আত্মোন্নয়নের শক্ত ভিত্তি গড়ে দেয়।

    আত্মউন্নয়নের পথে বাধা (হিংসা, অহংকার) কীভাবে দূর করব?
    হিংসা ও অহংকার দূর করতে সচেতন প্রচেষ্টা জরুরি। হিংসা দেখা মাত্রই “আউজুবিল্লাহ” পড়ে আল্লাহর আশ্রয় নিন। মনে রাখুন, অন্যের যা আছে তা আল্লাহর দান; তার জন্য শুকরিয়া আদায় করুন এবং নিজের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। অহংকার দূর করতে নিজের দুর্বলতা ও আল্লাহর উপর পূর্ণ নির্ভরশীলতা মনে করুন। সফলতাকে আল্লাহর দান হিসেবে দেখুন এবং অন্যদের সেবা ও বিনয়ী আচরণের মাধ্যমে নিজেকে প্রশিক্ষিত করুন।

    ইলম (জ্ঞানার্জন) আত্মোন্নয়নে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
    জ্ঞানার্জন ইসলামে ফরজ এবং আত্মোন্নয়নের অপরিহার্য হাতিয়ার। জ্ঞানের আলো ছাড়া আত্মা অন্ধকারে থাকে। কুরআন-হাদিসের জ্ঞান ঈমানকে শক্তিশালী করে, দুনিয়াবি জ্ঞান ব্যক্তিকে তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে এবং সামাজিক অবদান রাখতে সাহায্য করে। জ্ঞানার্জন আত্মাকে সচেতন, বিচক্ষণ ও আল্লাহভীরু করে তোলে, যা প্রকৃত সফলতার পূর্বশর্ত।

    কাজে সফলতা না পেলে ইসলাম কীভাবে হতাশা কাটাতে বলে?
    ইসলাম হতাশাকে নিরুৎসাহিত করে। সফলতা না পেলে তিনটি বিষয় মনে রাখুন: ১) আপনি কি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন? যদি করে থাকেন, তবে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করুন। ২) এই ‘ব্যর্থতা’ আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ হতে পারে যা ভবিষ্যতে আপনার জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে (সবরের মাধ্যমে)। ৩) আল্লাহর কাছে দুআ করুন এবং নতুন করে চেষ্টা চালিয়ে যান। রাসুল (সা.)-এর জীবনই তো বারবার ব্যর্থতা ও বিপদের পর মহাসফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

    আত্মউন্নয়নের জন্য কোন দোয়া বা সূরা বেশি পড়া উচিত?
    কোনো নির্দিষ্ট দোয়া বা সূরা বাধ্যতামূলক না হলেও কিছু দোয়া ও সূরা বিশেষ উপকারী:

    • সূরা আল-ফাতিহা: হৃদয়ের উন্মুক্ততা ও হিদায়াতের জন্য।
    • আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারা: ২৫৫): আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের স্মরণ ও নিরাপত্তার জন্য।
    • সূরা ইয়াসিন: আত্মিক শান্তি ও কল্যাণের জন্য।
    • দোয়া: “রাব্বি জিদনি ইলমা” (হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন – সূরা ত্বহা: ১১৪), “আল্লাহুম্মা আয়িন্নি আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা” (হে আল্লাহ, আমাকে আপনার স্মরণ, শুকরিয়া আদায় ও সুন্দরভাবে ইবাদাত করার তাওফিক দিন)। নিয়ত সহকারে যেকোনো দোয়াই মূল্যবান।
    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘ও আত্মউন্নয়ন:সফলতার ইসলাম ইসলামিক ইসলামিক দৃষ্টিতে আত্মউন্নয়ন জীবন দৃষ্টিতে মূলমন্ত্র
    Related Posts
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ৩০ জুলাই, ২০২৫

    July 29, 2025
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ২৯ জুলাই, ২০২৫

    July 29, 2025
    নামাজের সময়সূচি ২০২৫

    নামাজের সময়সূচি: ২৮ জুলাই, ২০২৫

    July 27, 2025
    সর্বশেষ খবর
    কোডিং কম্পিটিশন প্রস্তুতি

    কোডিং কম্পিটিশন প্রস্তুতি: শুরু হোক আজই! – সাফল্যের সিঁড়ি গড়ে তুলুন ধাপে ধাপে

    সাইবার তেলাপোকা

    যুদ্ধক্ষেত্রে জার্মানির নতুন হাতিয়ার জীবিত সাইবার তেলাপোকা

    Infinix InBook X3 Slim

    Infinix InBook X3 Slim: বাজেটে প্রিমিয়াম পারফরম্যান্সের আদর্শ সঙ্গী?

    উত্তর কোরিয়া

    যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের চাপ প্রয়োগের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সতর্কবার্তা

    Fire-Boltt Quantum স্মার্টওয়াচ

    Fire-Boltt Quantum স্মার্টওয়াচ: বাংলাদেশ ও ভারতে দাম, স্পেসিফিকেশনসহ পূর্ণাঙ্গ রিভিউ

    ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তুলনা

    ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তুলনা: সেরাটি বাছাই করার গাইডলাইন

    বাংলাদেশ ব্যাংক

    আজ চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

    US trade deficit

    Trump Tariffs Slash US Trade Deficit by 10.8%: June 2025 Data Reveals

    Bollywood voice actors

    Bollywood Voices Unleashed: How Indian Stars Brought Animated Animals to Life

    লেনোভো ইয়োগা স্লিম 9i

    লেনোভো ইয়োগা স্লিম 9i: কেন এটি আপনার পরবর্তী প্রিমিয়াম ল্যাপটপ হওয়া উচিত

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.