Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা: শারীরিক শক্তির আড়ালে লুকানো আত্মিক সুস্থতার রহস্য
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা: শারীরিক শক্তির আড়ালে লুকানো আত্মিক সুস্থতার রহস্য

    লাইফস্টাইল ডেস্কTarek HasanJuly 7, 202514 Mins Read
    Advertisement

    সকালের কোমল রোদে ঢাকার মিরপুরের একটি পার্ক। কিশোর রাফি দৌড়াচ্ছে, তার নিঃশ্বাসে ছন্দ, গতিতে একাগ্রতা। পাশেই দাদু জহিরুল ইসলাম সতর্ক দৃষ্টিতে তাকে পর্যবেক্ষণ করছেন। রাফির দৌড়ানো শুধু দ্রুত পায়ের কারিশমা নয়; এটা তার জন্য এক প্রার্থনার মতন, এক ধরনের ইবাদত। কেননা রাফির শরীরচর্চার প্রতিটি মুহূর্তে লেগে আছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা – পরিষ্কার পোশাক, হারাম উপাদান থেকে দূরে থাকা, নিয়তের বিশুদ্ধতা। তার এই দৌড় শুধু মাসেল বা স্ট্যামিনা তৈরির জন্য নয়; এটা আল্লাহর দেয়া নেয়ামত ‘শরীরের হক’ আদায়ের একটি পবিত্র প্রয়াস। ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা শুধু জিমে ওজন তোলার ব্যায়াম নয়; এটি একটি সামগ্রিক জীবনদর্শন, যেখানে প্রতিটি স্ট্রেচ, প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস হয়ে ওঠে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম এবং তাঁর দেয়া দেহ-মনকে সুস্থ রাখার পবিত্র দায়িত্ব। এই পথ ধরেই খোলা হয় সুস্থতার এক গভীর রহস্যের দরোজা, যেখানে শারীরিক বল আর আত্মিক প্রশান্তি একাকার হয়ে যায়।

    ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা

    • ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা: শারীরিক ও আত্মিক সুস্থতার সমন্বয়
    • ইসলামিক দৃষ্টিকোণে শরীরচর্চার ঐতিহাসিক ভিত্তি ও হাদিসের আলো
    • মুসলিম নারীদের জন্য শরিয়তসম্মত শরীরচর্চা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
    • বাংলাদেশে ইসলামিক নিয়ম মেনে শরীরচর্চার জনপ্রিয় ও সহজলভ্য পদ্ধতি
    • দৈনন্দিন জীবনে ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা বাস্তবায়নের কৌশল

    ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা: শারীরিক ও আত্মিক সুস্থতার সমন্বয়

    প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন এই সামঞ্জস্যের জীবন্ত উদাহরণ। তিনি কেবল রূহানিয়াতের পথিকৃৎই ছিলেন না, ছিলেন একজন অত্যন্ত শক্তিশালী ও সক্ষম ব্যক্তিত্ব। হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে, তিনি কুস্তি লড়েছেন, দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন, ঘোড়সওয়ারের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং নিজেও নিয়মিত দৌড়াতেন ও শরীর চর্চা করতেন। “মুমিনের শক্তিশালী শরীর আল্লাহর নিকট দুর্বল মুমিনের চেয়ে অধিক প্রিয় ও উত্তম” (সহিহ মুসলিম) – এই বাণীটি ইসলামে দৈহিক সক্ষমতা ও সুস্থতার গুরুত্বকে চিরন্তন করে রেখেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়; ইসলামি দৃষ্টিকোণে শরীরচর্চার উদ্দেশ্য কেবল দৈহিক সৌন্দর্য বা শক্তি প্রদর্শন নয়। এর মূলে রয়েছে তিনটি স্তম্ভ:

    1. নিয়তের বিশুদ্ধতা (ইখলাস): শরীরচর্চার পেছনে নিয়ত হতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি, তাঁর দেয়া দেহকে সুস্থ-সবল রাখার দায়িত্ব পালন এবং তাঁর ইবাদত যথাযথভাবে সম্পাদনের সক্ষমতা অর্জন করা। অহংকার, প্রদর্শনেচ্ছা বা হারাম কাজে শক্তি খাটানোর উদ্দেশ্য এখানে নিষিদ্ধ।
    2. হারাম থেকে বেঁচে থাকা: শরীরচর্চার পদ্ধতি, পরিবেশ এবং পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পূর্ণরূপে শরিয়তসম্মত হতে হবে। মিশ্র পরিবেশে অশালীন পোশাকে ব্যায়াম, হারাম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ, বা শরীরচর্চাকে অন্যায় কাজে ব্যবহারের মাধ্যম বানানো ইসলামি নিয়মের পরিপন্থী।
    3. সামঞ্জস্য বজায় রাখা: ইসলাম সর্বদা ভারসাম্যের পক্ষপাতী। শরীরচর্চা যেন ইবাদত, পরিবারের হক, সামাজিক দায়িত্ব এবং পেশাগত কাজে বিঘ্ন না ঘটায় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। অতিরিক্ত ব্যায়ামে শরীরকে ক্লান্ত করে ফেলা বা একেবারেই শরীরচর্চাকে উপেক্ষা করা – উভয়ই ইসলামের মধ্যপন্থার বিরোধী।

    বাংলাদেশি প্রেক্ষাপটে ইসলামিক শরীরচর্চার বাস্তব চিত্র: ঢাকার ফার্মগেটের একটি আধুনিক জিমে দেখা যায় তাসনিমা আক্তারকে। তার হিজাব পরিহিত অবস্থায় নারীদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে তিনি যোগব্যায়াম ও স্ট্রেথ ট্রেনিং করছেন। তার ভাষায়, “এখানে আসা আমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘মি-টাইম’। এই সময়ে আমি শুধু আমার শরীরের সাথে সংযোগ করি না, আল্লাহর কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করি যে তিনি আমাকে এই সক্ষমতা দিয়েছেন। আমার নিয়ত পরিষ্কার – সুস্থ থাকা, আমার সন্তানদের সেবা করার শক্তি রাখা এবং আল্লাহর ইবাদতে অটুট থাকা।” চট্টগ্রামের হালিশহরে কিকবক্সিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তরুণ সাইফুল। তার প্রশিক্ষণের শুরু ও শেষ হয় দোয়া দিয়ে। তিনি নিশ্চিত করেন তার শক্তি কখনোই অন্যায় বা আক্রমণাত্মক কাজে ব্যবহার করা হবে না, বরং আত্মরক্ষা ও অন্যায় প্রতিরোধের জন্য।

    ইসলামি শরীরচর্চার সুস্থতার রহস্য: এই নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করলে শুধু পেশী গঠন বা ওজন কমানোই হয় না, ঘটে গভীরতর পরিবর্তন:

    • মানসিক প্রশান্তি ও একাগ্রতা বৃদ্ধি: নিয়ত যখন আল্লাহমুখী হয়, প্রতিটি ব্যায়াম ইবাদতে রূপান্তরিত হয়। এতে মানসিক চাপ কমে, মনোযোগ বাড়ে, বিশেষ করে নামাজের সময় খুশু-খুজু অর্জনে সহায়ক হয়।
    • আত্মনিয়ন্ত্রণ ও дисциплиন শক্তিশালীকরণ: নিয়মিত শরীরচর্চা ধৈর্য্য, অধ্যবসায় এবং আত্মসংযম শেখায় – যা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গুণ। রমজান মাসে রোজা রেখেও হালকা ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া এই дисциплиনকেই প্রতিফলিত করে।
    • দায়িত্ববোধের বিকাশ: শরীর আল্লাহর আমানত। শরীরচর্চার মাধ্যমে এই আমানতের হিফাজতের দায়িত্ব পালন করা হয়। সুস্থ দেহে সুস্থ মন, যা পরিবার ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তোলে।
    • হালাল উপায়ে আত্মবিশ্বাস অর্জন: শরিয়তসম্মত উপায়ে শারীরিক শক্তি ও সৌন্দর্য অর্জন একজন মুসলিমের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, কিন্তু তা অহংকারে রূপ নেয় না। এই আত্মবিশ্বাস দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহস জোগায়।

    সতর্কীকরণ: ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চার অর্থ এই নয় যে শুধু ইসলামিক স্টুডিও বা নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়ামই বৈধ। ফুটবল, ক্রিকেট, সাঁতার, দৌড়ানো, সাইক্লিং, ওয়েট লিফটিং, যোগব্যায়াম – প্রায় যেকোনো ধরনের শরীরচর্চাই ইসলামি হতে পারে, যদি তা উপরোক্ত তিনটি মূলনীতির (নিয়ত, হারাম বর্জন, সামঞ্জস্য) আলোকে করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের অ্যারোবিক ব্যায়াম বা ৭৫ মিনিট জোরালো ব্যায়ামের পাশাপাশি সপ্তাহে দুই দিন মাংসপেশী শক্তিশালীকরণ ব্যায়ামের পরামর্শ দেয়। ইসলামি দৃষ্টিকোণে এই সুপারিশকে শরিয়তসম্মত পন্থায় বাস্তবায়ন করাই হল কাম্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শারীরিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেখুন

    ইসলামিক দৃষ্টিকোণে শরীরচর্চার ঐতিহাসিক ভিত্তি ও হাদিসের আলো

    ইসলামের সোনালী যুগে শরীরচর্চা ও শারীরিক শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হত। শুধু সাহাবায়ে কেরাম নন, খলিফাদের আমলেও এর প্রমাণ মেলে। হযরত উমর (রা.) যুবকদের তীর নিক্ষেপ, সাঁতার ও ঘোড়দৌড়ের প্রশিক্ষণ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কেননা এগুলো জিহাদের জন্য অপরিহার্য দক্ষতা ছিল। প্রখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত ইমাম গাজ্জালী (রহ.) তাঁর মহান গ্রন্থ ‘ইহইয়া উলুমিদ্দীন’-এ স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন শরীর ও মনের সুস্থতার পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সুস্থ দেহে সুস্থ আত্মা বাস করে – এই ধারণাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “দুর্বল শরীরে দীন পালন করা কষ্টকর। তাই শরীরকে সুস্থ রাখা ঈমানের দাবি।”

    হাদিস শরীফে শরীরচর্চা: রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় এবং পরবর্তী সময়ে সংকলিত হাদিসগ্রন্থগুলোতে শরীরচর্চা ও শারীরিক প্রতিযোগিতার সরাসরি উল্লেখ ও অনুমোদন পাওয়া যায়:

    • দৌড় প্রতিযোগিতা: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, “আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে (দৌড়ে) প্রতিযোগিতা করেছি এবং আমি তাকে এগিয়ে নিয়েছি (জয়ী হয়েছি)। অতঃপর যখন আমি (বয়সে) ভারী হলাম এবং (শরীরে) মাংস বেড়ে গেল, তখন আমি তাঁর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, তিনি আমাকে এগিয়ে নিলেন (জয়ী হলেন)। তখন তিনি বললেন, ‘এটা সে (জয়) এর বিনিময়।’” (সুনানে আবু দাউদ, আহমদ – সনদ হাসান হিসেবে গৃহীত)। এই হাদিসটি শুধু দৌড়ের অনুমোদনই দেয় না, বরং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা এবং আনন্দের মাধ্যম হিসেবেও শরীরচর্চাকে চিত্রিত করে।
    • ঘোড়দৌড়ের উৎসাহ: রাসূল (সা.) ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করতেন এবং বিজয়ীদের পুরস্কৃত করতেন। তিনি বলতেন, “ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ বাঁধা আছে (অর্থাৎ ঘোড়া লালন-পালন ও প্রশিক্ষণ কল্যাণকর)।” (সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম)।
    • সাঁতারের গুরুত্ব: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক সক্ষম ব্যক্তির উচিত তার সন্তানকে সাঁতার, তীর নিক্ষেপ এবং ঘোড়সওয়ারী শিক্ষা দেওয়া।” (আল-মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন – হাকিম, কিছু বিদ্বান একে হাসান বলেছেন)।
    • শক্তির সদ্ব্যবহার: হাদিসে এসেছে, “বলিষ্ঠ মু’মিন আল্লাহর নিকট দুর্বল মু’মিন অপেক্ষা অধিক প্রিয় এবং উভয়েই কল্যাণকর।” (সহিহ মুসলিম)। এখানে ‘বলিষ্ঠ’ বলতে শুধু ঈমানের দৃঢ়তাই নয়, শারীরিক সক্ষমতাকেও বোঝানো হয়েছে।

    বাংলাদেশের মাদ্রাসা ও সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঐতিহ্য: দেশের অনেক কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসায় ছাত্রদের জন্য নিয়মিত শরীরচর্চার ব্যবস্থা রয়েছে। কুস্তি (মল্লযুদ্ধ), দাঁড়ি লাফ, দৌড়ানো, সিট-আপ, পুশ-আপ – এসবের প্রচলন আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ তাঁর গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, “বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতিতে ইসলামি উৎসব যেমন ঈদে মিলাদুন্নবী বা ওরস শরীফে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল খুবই সাধারণ ঘটনা। এটি ছিল একদিকে ধর্মীয় উৎসব উদযাপন, অন্যদিকে যুবকদের শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শন ও সংঘাতের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির প্ল্যাটফর্ম।”

    মুসলিম নারীদের জন্য শরিয়তসম্মত শরীরচর্চা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

    বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে মুসলিম নারীরা ইসলামি নিয়ম মেনে শরীরচর্চা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য আগ্রহ ও অগ্রগতি দেখাচ্ছেন, পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করছেন।

    সুযোগ ও সম্ভাবনার ক্ষেত্র:

    • মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট সময় ও স্থান: ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বড় শহরগুলোতে এখন অনেক জিম ও ফিটনেস সেন্টার মহিলাদের জন্য আলাদা সময়সূচি এবং সম্পূর্ণ প্রাইভেট পরিবেশ নিশ্চিত করে। এতে হিজাব পরিহিত অবস্থায়, মাহরাম পুরুষের দৃষ্টি থেকে মুক্ত হয়ে নারীরা নির্বিঘ্নে ব্যায়াম করতে পারেন।
    • হোম-ওয়ার্কআউট ও অনলাইন কোচিং: করোনা মহামারির পর থেকে ঘরে বসে ইসলামি পোশাক মেনে শরীরচর্চার জনপ্রিয়তা ব্যাপক বেড়েছে। ইউটিউব চ্যানেল, ফিটনেস অ্যাপ এবং বিশেষায়িত অনলাইন কোচিং সার্ভিস (যেমন ‘হিজাবি ফিট’, ‘মুসলিমাহ ফিটনেস’) নারীদেরকে ঘরোয়া পরিবেশে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
    • বিশেষায়িত ইসলামিক স্পোর্টস ইভেন্ট: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘মুসলিম উইমেন্স গেমস’-এর মতো আয়োজন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে মহিলাদের জন্য আলাদা ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল টুর্নামেন্ট এবং মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন বাড়ছে, যেখানে ইসলামি পোশাক বিধি মেনে অংশগ্রহণ করা যায়।
    • সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: নারীদের স্বাস্থ্য, বিশেষ করে প্রসবপূর্ব ও প্রসবোত্তর যত্ন, হাড়ের ক্ষয় (অস্টিওপোরোসিস) প্রতিরোধ এবং মানসিক সুস্থতার জন্য শরীরচর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বাড়ছে। আলেম-ওলামারা ইসলামের দৃষ্টিকোণে নারী স্বাস্থ্য ও শরীরচর্চার গুরুত্ব নিয়ে ওয়াজ ও ফতোয়ায় বলছেন।

    চ্যালেঞ্জসমূহ:

    • পর্যাপ্ত প্রাইভেট স্পেসের অভাব: ছোট শহর বা গ্রামাঞ্চলে মহিলাদের জন্য আলাদা, মানসম্মত ও সাশ্রয়ী ব্যায়ামাগারের অভাব প্রকট।
    • সামাজিক কুসংস্কার ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: কিছু অংশে এখনও নারীদের শরীরচর্চাকে ‘অনুচিত’ বা ‘অপ্রয়োজনীয়’ মনে করা হয়, অথবা শুধুমাত্র ‘স্লিম হওয়ার’ জন্য সীমাবদ্ধ ধরা হয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষার ধারণা কম।
    • উপযুক্ত পোশাকের সহজলভ্যতা ও খরচ: হিজাব, লেগিংস বা ফুল-স্লিভ টপের সাথে মানানসই, আরামদায়ক ও কার্যকরী স্পোর্টসওয়্যার সহজলভ্য নয় এবং দামও তুলনামূলক বেশি হতে পারে।
    • সুপারিশের অভাব: অনেক নারী জানেন না কোন ব্যায়ামগুলো তাদের জন্য উপযুক্ত, কিভাবে শুরু করবেন, বা কোথায় শরিয়তসম্মত নির্দেশনা পাবেন।

    এগিয়ে যাওয়ার পথ: মুসলিম নারীরা ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা চালিয়ে যেতে পারেন:

    • ঘরেই শুরু করুন: সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা, দড়ি লাফ (স্কিপিং), যোগব্যায়াম, পিলেটস, বডিওয়েট এক্সারসাইজ (স্কোয়াট, লাঞ্জ, পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক) – ঘরে বসেই করা সম্ভব।
    • প্রাকৃতিক পরিবেশ: ভোরবেলা বা নির্দিষ্ট সময়ে নিরিবিলি পার্কে হাঁটা বা দৌড়ানো (মাহরাম সঙ্গীসহ বা নারীদের গ্রুপে)।
    • নারী-কেন্দ্রিক গ্রুপ: স্থানীয় মসজিদ কমিউনিটি সেন্টার বা মহিলা সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে মহিলাদের জন্য আলাদা শরীরচর্চা সেশনের আয়োজন করা।
    • সঠিক তথ্য অনুসন্ধান: বিশ্বস্ত আলেম এবং স্বাস্থ্য পেশাদার (ডাক্তার, ফিজিওথেরাপিস্ট, সার্টিফাইড ট্রেনার যারা ইসলামিক সেন্সিটিভিটি বুঝেন) এর কাছ থেকে গাইডেন্স নেওয়া।

    বাংলাদেশে ইসলামিক নিয়ম মেনে শরীরচর্চার জনপ্রিয় ও সহজলভ্য পদ্ধতি

    ব্যস্ত নাগরিক জীবন, সীমিত সম্পদ কিংবা গ্রামীণ পরিবেশ – সব ক্ষেত্রেই ইসলামি নিয়ম মেনে শরীর চর্চা করা সম্ভব। এখানে কিছু সহজ, কম খরচে এবং অ্যাক্সেসিবল পদ্ধতি:

    1. হাঁটা / দৌড়ানো (ওয়াকিং/জগিং): সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও কার্যকর কার্ডিও ব্যায়াম।
      • ইসলামিক অ্যাপ্রোচ: পোশাক হবে শালীন, পর্দা সম্মত (পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটু ঢাকা, নারীর জন্য সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা)। মহিলাদের জন্য ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় কম ভিড়ের সময়, নিরিবিলি রাস্তা বা পার্ক বেছে নেওয়া যেতে পারে। দৌড়ানোর সময় যিকির বা দোয়া পাঠ করা যায়।
      • বাংলাদেশি টিপ: শহরে রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, বা স্থানীয় স্টেডিয়ামের ট্র্যাক। গ্রামে মেঠোপথ ধরে হাঁটা। সপ্তাহে ৫ দিন, কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি গতিতে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
    2. সুন্নাতি ব্যায়াম (প্রাকৃতিক মুভমেন্ট):
      • ওজুর পূর্বের সুন্নাত: ওজুর আগে মিসওয়াক করা চোয়াল ও মুখের পেশীর জন্য ভালো। ওজুর সময় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ধৌত করাও একধরনের হালকা ব্যায়াম ও সচেতনতা।
      • নামাজের মাধ্যমে স্ট্রেচিং ও স্ট্রেন্থ: নামাজের রুকু-সিজদা-কিয়াম মূলত এক প্রকার নিয়ন্ত্রিত যোগব্যায়াম। রুকুতে পিঠের পেশী স্ট্রেচ হয়, সিজদায় সম্পূর্ণ শরীর প্রসারিত হয় এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ে। নিয়মিত নামাজ শরীরের নমনীয়তা ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। বিশেষত তাহাজ্জুদ নামাজে দীর্ঘ কিয়াম ও রুকু-সিজদা অতিরিক্ত উপকারী।
    3. বডিওয়েট ট্রেনিং: জিমের মেশিন ছাড়াই শরীরের ওজনকে ব্যবহার করে করা যায় এমন ব্যায়াম।
      • প্রধান ব্যায়াম: স্কোয়াট (নিতম্ব ও পা), লাঞ্জ (পা), পুশ-আপ (বুক, কাঁধ, বাহু), প্ল্যাঙ্ক (পেট, কোমর, পুরো কোর), গ্লুট ব্রিজ (নিতম্ব)।
      • ইসলামিক অ্যাপ্রোচ: ঘরে প্রাইভেটলি, পর্দা রক্ষা করে করা যায়। নিয়ত রাখতে হবে সুস্থতা অর্জন।
      • সুবিধা: খরচ নেই, যেকোনো জায়গায় (ঘরে উঠানে, ছাদে) করা যায়।
    4. সাইক্লিং (মহিলাদের জন্য সতর্কতা সহকারে): ভালো কার্ডিও ব্যায়াম।
      • ইসলামিক অ্যাপ্রোচ: পুরুষদের জন্য তুলনামূলক কম সীমাবদ্ধতা। মহিলাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। যদি করতেই হয়, তবে অবশ্যই সম্পূর্ণ পর্দাসহ (লম্বা স্কার্ট বা ওভারগার্ন, হিজাব), মাহরাম সঙ্গীসহ, এবং একেবারে নিরিবিলি, কম ভিড়ের রাস্তা বা মহিলাদের জন্য নির্ধারিত পার্কে (যদি থাকে) সীমিত সময়ের জন্য। বিকল্প হিসেবে স্টেশনারি বাইক (ঘরে বসে করা যায় এমন) উত্তম।
    5. ইসলামিক মার্শাল আর্টস / আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ: যেমন তরিকার তায়ি (Tarikah Tai) বা অন্যান্য নন-হারাম মার্শাল আর্ট যা আত্মরক্ষা, дисциплиন, আত্মবিশ্বাস ও শরীরচর্চার সমন্বয় সাধন করে। বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য আলাদা ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেয়।
    6. যোগব্যায়াম ও প্রাণায়াম: মানসিক চাপ কমানো, নমনীয়তা বাড়ানো, শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি এবং একাগ্রতা বৃদ্ধির জন্য উৎকৃষ্ট।
      • ইসলামিক অ্যাপ্রোচ: শারীরিক আসন (আসনা) করা যেতে পারে, তবে যেকোনো ধর্মীয় মন্ত্র বা চিন্তা (যা শিরকের দিকে নিয়ে যেতে পারে) পরিহার করতে হবে। আসনার সময় আল্লাহর জিকির বা কুরআনের আয়াত স্মরণ করা যায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম (প্রাণায়াম) নামাজের আগে মনকে স্থির করতে সাহায্য করে।

    বাংলাদেশি ডায়েটের সাথে সমন্বয়: শরীরচর্চার পূর্ণ সুফল পেতে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস জরুরি। ভাত, মাছ, ডাল, শাকসবজি – আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারই যথেষ্ট পুষ্টিকর। অতিরিক্ত তেল-চর্বি, ভাজাপোড়া, মিষ্টি কমিয়ে, পর্যাপ্ত পানি পান করে এবং হালাল উপায়ে প্রোটিন (ডিম, মুরগি, গরুর মাংস, দুধ, ডাল) গ্রহণ করে ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চাকে সফল করা যায়।

    দৈনন্দিন জীবনে ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা বাস্তবায়নের কৌশল

    সুস্থতার রহস্য লুকিয়ে আছে ধারাবাহিকতার মাঝে। ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চাকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বানাতে কিছু ব্যবহারিক টিপস:

    • ফজরের সুবর্ণ সুযোগ: ফজরের নামাজের পরের সময়টি শরীরচর্চার জন্য আদর্শ। পরিবেশ শান্ত, বাতাস নির্মল, মন প্রফুল্ল। ২০-৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো বা হালকা ব্যায়াম করলে সারাদিনের এনার্জি লেভেল বাড়ে।
    • নামাজকে ওয়ার্ম-আপ/কুল-ডাউন বানানো: প্রতিটি নামাজের আগে হালকা স্ট্রেচিং বা জয়েন্ট মুভমেন্ট (গিটা নড়ানো) করতে পারেন। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম (প্রাণায়াম) মনকে শান্ত করবে।
    • পরিবার ও সন্তানদের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা: সন্তানদের সাথে পার্কে খেলাধুলা করা, দৌড় প্রতিযোগিতা করা, বাসায় একসাথে যোগব্যায়াম করা – এগুলো শারীরিক কার্যকলাপের পাশাপাশি পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করে। এটি সন্তানদের মধ্যে ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
    • প্রতিদিনের কাজকর্মকে ব্যায়ামে রূপান্তর: লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, গাড়ি চালানোর বদলে হেঁটে বা সাইকেলে নিকটবর্তী দোকানে যাওয়া, বাগান করা, ঘর পরিষ্কার করা – এসব দৈনন্দিন কাজও শারীরিক পরিশ্রমের অংশ। নিয়ত করুন এই কাজগুলোও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য শরীর সচল রাখার মাধ্যম।
    • ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ ও অগ্রগতি ট্র্যাক করা: একদিনে অনেক কিছু করার চেষ্টা না করে ছোট ছোট লক্ষ্য রাখুন। যেমন: প্রথম সপ্তাহে দিনে ১০ মিনিট হাঁটা, তারপর ধীরে ধীরে সময় বাড়ানো। একটি ডায়েরি বা অ্যাপে ট্র্যাক করুন – এতে অনুপ্রেরণা বাড়ে।
    • জুমার দিনকে বিশেষ দিন হিসেবে নেওয়া: জুমার দিন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনে একটু বেশি সময় শরীরচর্চার জন্য রাখা যায়। জুমার নামাজের পর ভালো লাগে এমন কোনো শারীরিক কাজ করা (যেমন: বাগান করা, সাইকেল চালানো – শরিয়তের সীমার মধ্যে)।
    • ইসলামিক কমিউনিটির সাথে যুক্ত হওয়া: স্থানীয় মসজিদ, ইসলামিক সেন্টার বা কমিউনিটি গ্রুপে মহল্লার যুবক-যুবতী বা বয়স্কদের জন্য শরীরচর্চা (যেমন: নিয়মিত ফুটবল ম্যাচ, ভলিবল, ক্রিকেট, দৌড় প্রতিযোগিতা, মার্শাল আর্ট ক্লাস) আয়োজনের প্রস্তাব দিন এবং তাতে অংশ নিন।

    স্মরণীয়: শরীরচর্চার সময় অসুস্থ বোধ করলে (ব্যথা, মাথাঘোরা, অতিরিক্ত ক্লান্তি) অবশ্যই বিরতি নিন। রোজা রাখা অবস্থায় ভারী ব্যায়াম না করে ইফতারের পর হালকা ব্যায়াম বা তারাবিহ নামাজের মাধ্যমে শরীর সচল রাখা ভালো।

    সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ৫টি টিপস: আজীবন সুস্থ থাকুন!

    জেনে রাখুন-

    1. ইসলামে শরীরচর্চা কি ফরজ, না সুন্নাত?
      শরীরচর্চা সরাসরি ফরজ বা ওয়াজিব নয়। তবে শরীরকে সুস্থ-সবল রাখা ফরজ ইবাদতগুলো (নামাজ, রোজা, হজ্জ) সঠিকভাবে এবং সহজে আদায় করার পূর্বশর্ত। সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সওয়াবের কাজ। নবীজি (সা.) নিজে শরীরচর্চা করেছেন, তাই এটি তাঁর সুন্নাতও বটে। মূলনীতি হলো: শরীর আল্লাহর আমানত, এর হিফাজত করা আমাদের দায়িত্ব।
    2. জিমে গিয়ে ওজন তোলা বা মাসেল বানানো কি ইসলামি দৃষ্টিতে জায়েজ?
      হ্যাঁ, জায়েজ, তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে:

      • নিয়ত হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, সুস্থতা অর্জন, ইবাদতের সক্ষমতা বাড়ানো বা হালাল পেশায় শক্তি ব্যবহার করা (অহংকার বা প্রদর্শনেচ্ছা নয়)।
      • পোশাক শরিয়ত সম্মত হতে হবে (পুরুষের নাভি-হাঁটু ঢাকা, নারীর পূর্ণ পর্দা)।
      • পরিবেশ শরিয়ত সম্মত হতে হবে (মিশ্র ও অশালীন পরিবেশ পরিহার, হারাম সংগীত বর্জন)।
      • হারাম স্টেরয়েড বা ক্ষতিকর সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা হারাম।
    3. মুসলিম নারীরা পাবলিক পার্কে বা ট্রাকে দৌড়াতে পারবেন কি?
      এটি নির্ভর করে পরিবেশের উপর। আদর্শ হল মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা ও প্রাইভেট স্থান বা সময়ে (যেখানে অপরিচিত পুরুষের দৃষ্টি নেই) দৌড়ানো। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে:

      • সম্পূর্ণ পর্দাসহ (লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক ও হিজাব) দৌড়াতে হবে।
      • ভোরবেলা বা সন্ধ্যার প্রথম দিকে যখন ভিড় কম থাকে এমন সময় বেছে নিতে হবে।
      • সম্ভব হলে মাহরাম পুরুষ (স্বামী, ভাই, বাবা) সঙ্গী হিসাবে থাকলে ভালো।
      • একান্তই না পারলে ঘরে বা ছাদে দৌড়ানো, বা স্টেপ-এরোবিক্স, জাম্পিং জ্যাকস, স্কিপিং ইত্যাদি বডিওয়েট ব্যায়াম করা উত্তম।
    4. ইসলামি শরীরচর্চার জন্য কি বিশেষ ধরনের পোশাকের প্রয়োজন?
      না, বিশেষ ইসলামিক স্পোর্টসওয়্যার বলতে কিছু নেই। মূল নীতি হল শরিয়তের পর্দার বিধান মেনে চলা:

      • পুরুষ: নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অবশ্যই ঢাকা থাকবে। টি-শার্ট/শার্ট ও ট্রাউজার/শর্টস (হাঁটুর উপর পর্যন্ত) পরা যায়।
      • মহিলা: শরীরের সমস্ত অংশ ঢাকা থাকতে হবে (চুলসহ), পোশাক ঢিলেঢালা ও স্বচ্ছ না হতে হবে। সাধারণত লম্বা হাতার টপ/টি-শার্টের সাথে লম্বা স্কার্ট বা ওভারগার্ন, অথবা লম্বা হাতা ও লম্বা প্যান্ট (ট্রাউজার্স) সাথে ওভারগার্ন পরা হয়। মাথায় হিজাব বাধ্যতামূলক। বাজারে এখন ‘স্পোর্টস হিজাব’ (হালকা, শ্বাস-প্রবেশ্য কাপড়ের) এবং মহিলাদের ইসলামিক স্পোর্টসওয়্যার সেট পাওয়া যায়।
    5. রোজা রেখে শরীরচর্চা করা কি উচিত?
      রোজা অবস্থায় ভারী বা কষ্টসাধ্য শরীরচর্চা (জিমে ভারী ওজন তোলা, দীর্ঘ দৌড়) না করাই ভালো। এতে ডিহাইড্রেশন, দুর্বলতা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে। তবে হালকা শরীরচর্চা করা যায়:

      • সেহরির পর: খুব হালকা স্ট্রেচিং বা ১০-১৫ মিনিট হাঁটা।
      • ইফতারের কয়েক ঘন্টা পর: ইফতার ও তারাবিহ নামাজের পর, পেট হালকা হলে ২০-৩০ মিনিট হাঁটা, হালকা যোগব্যায়াম বা বডিওয়েট এক্সারসাইজ করা যায়।
      • তারাবিহ নামাজ নিজেই একটি ভালো শারীরিক কার্যকলাপ।
      • রোজার দিনে বিশ্রামও গুরুত্বপূর্ণ। শরীরচর্চার চেয়ে ইবাদত ও কুরআন তিলাওয়াতের দিকে মনোনিবেশ করা রমজানের মূল লক্ষ্য।

    বিশেষ নোট: এই নিবন্ধে উল্লিখিত ইসলামিক বিধানসমূহ বিশুদ্ধ হাদিস ও প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের ব্যাখ্যার আলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট ব্যক্তিগত পরিস্থিতি বা স্বাস্থ্যজনিত জটিলতার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনোরকম সন্দেহ থাকলে নিজের বিশ্বস্ত আলেম বা ইসলামিক স্কলার এবং যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। শরীরচর্চার সময় অতিরিক্ত ক্লান্তি, ব্যথা বা অসুস্থতা অনুভব করলে তা অবহেলা করবেন না।

    ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চা শুধু পেশীর গঠন নয়; এটি আল্লাহপ্রদত্ত দেহ-মনের আমানত রক্ষার পবিত্র প্রয়াস, ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য পন্থা। এই পথে হাঁটলে শারীরিক বলের পাশাপাশি অর্জিত হয় অপরিসীম মানসিক স্থিরতা, আত্মবিশ্বাস এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের অপার সুযোগ। প্রতিটি সচেতন পদক্ষেপ, প্রতিটি নিয়ন্ত্রিত নিঃশ্বাস আপনাকে নিয়ে যায় সামগ্রিক সুস্থতার সেই গহীন রহস্যের কাছাকাছি, যেখানে দেহ ও আত্মা মিলেমিশে একাকার। তাই আজই সিদ্ধান্ত নিন – নিয়ত করুন বিশুদ্ধ, বেছে নিন শরিয়তসম্মত পন্থা, এবং আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ইসলামি নিয়মে শরীরচর্চাকে স্থান দিন। শুরু করুন ছোট্ট করে, হাঁটা দিয়েই হোক, কিন্তু শুরু করুন। আপনার সুস্থতা শুধু আপনার জন্য নয়, এটি আপনার পরিবার, আপনার সমাজ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মূল হাতিয়ার।

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Halal workout Islamic exercise rules Muslim fitness tips Sunnah workouts Women in Islam sports অভ্যাস আড়ালে, আত্মিক ইসলামি ইসলামি শরীরচর্চা ইসলামিক ফিটনেস ইসলামিক হেলথ টিপস ইসলামে স্বাস্থ্য জীবন নামাজ ও শরীরচর্চা নিয়মে: বাংলাদেশে ইসলামিক লাইফস্টাইল মুসলিম নারী শরীরচর্চা মুসলিম ফিটনেস যত্ন রহস্য লাইফস্টাইল লুকানো শক্তির শরিয়ত সম্মত ব্যায়াম শরীরচর্চা শারীরিক সক্রিয়তা সুন্নাহ অনুযায়ী শরীরচর্চা সুস্থতা সুস্থতার স্বাস্থ্য হালাল ফিটনেস
    Related Posts
    শিশুদের আত্মনির্ভরতা শেখানোর কৌশল

    শিশুদের আত্মনির্ভরতা শেখানোর কৌশল: ভবিষ্যতের ভিত মজবুত করার অপরিহার্য পাঠ

    July 7, 2025
    kathal

    ২০০ বছরের পুরনো কাঁঠাল গাছে আজও প্রতি বছরে কয়েকশো ফল ধরে

    July 7, 2025
    ইন্টারভিউতে-পরীক্ষা

    মেয়েদের শরীরের কোন অঙ্গ টিপলে বড় হয়ে যায়

    July 7, 2025
    সর্বশেষ খবর

    Xiaomi Mi Smart Air Fryer 3.5L বাংলাদেশে ও ভারতে দাম বিস্তারিত স্পেসিফিকেশনসহ

    OnePlus Watch 2

    OnePlus Watch 2: Price in Bangladesh & India with Full Specifications

    tecno spark 40 pro

    Tecno Spark 40 Pro Price in Bangladesh: Launch Date, Specs & Features Revealed

    পিজিআরের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি

    আজকের আবহাওয়ার খবর

    আবহাওয়ার খবর: ঝড়ো হাওয়া ও অতি ভারি বৃষ্টির আশঙ্কা, ভূমিধস সতর্কতা

    Sony Bravia X75L 4K TV: Price in Bangladesh & India

    Sony Bravia X75L 4K TV: Price in Bangladesh & India with Full Specifications

    Jessops Camera Retail Excellence

    Jessops Camera Retail Excellence:Leading the Photography Equipment Industry

    Best Drone Cameras for Real Estate Videos

    Best Drone Cameras for Real Estate Videos: Top Models for Professional Aerial Shots

    Samsung Galaxy S23 Ultra

    Samsung Galaxy S23 Ultra: Price in Bangladesh & India with Full Specifications

    ওয়ালটনের কার ব্যাটারি ‘গ্রাভিটন’ উদ্বোধন করলেন কন্ঠশিল্পী তাহসান

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.