জুমবাংলা ডেস্ক : ৩ দিন ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ থাকায় দেশের ১ই-কমার্স খাতে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। আর ১০ দিনে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ই-কমার্স খাতে ৬০০ কোটি টাকা, ই-ট্যুরিজম খাতে ৩০০ কোটি টাকা এবং ই-লজিস্টিক খাতে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এই ক্ষতি এড়াতে ভবিষ্যতে যেকোনো পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ না কর হয় সে বিষয়টি ই-কমার্স নীতিমালায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সম্প্রতি রাজধানীর বনানীতে ই-ক্যাব অফিসে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যই জানিয়েছেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার। তিনি বলেছেন, আমরা আশা করবো যেকোনো পরিস্থিতিতেই যেন আগামীতে ইন্টারনেট, ফেসবুক বন্ধ করা না হয়। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেট জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মৌলিক চাহিদা।
ই-ক্যাব নেতৃবৃন্দ সরকারের নিকট তাদের দাবি ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যেসব উদ্যোক্তার ব্যাংক ঋণ রয়েছে তা পরিশোধের সময়সীমা ন্যূনতম ৬ মাস বৃদ্ধি করা, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা, লজিস্টিকস ও ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সাময়িকভাবে ভ্যাট মওকুফ করা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ ও মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি জানান। একই সঙ্গে এক মাসের জন্যে বিজ্ঞাপনের টাকা মেটাকে যারা পরিশোধ করেছেন, সেই টাকা যেন ফুল কেটে না নেওয়া হয় মেটার সঙ্গে সে বিষয়ে যোগাযোগ করতে হবে। বিজ্ঞাপনে ১৫ শতাংশ যে ভ্যাট সেটি প্রত্যাহার করতে হবে এবং উদ্যোক্তাদের ট্রেড লাইসেন্সের নবায়ন ফি মওকুফ করতে হবে।
এছাড়া ফেসবুকে সচল থাকা বিজ্ঞাপনের মূল্য ফেরত বা পূর্ণবিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন। বলেছেন আমরা সরকারকে বিজনেস কন্টিনিজেন্সি প্ল্যান দিতে চাই। বিডাকে সমন্বয়ক করে এই প্ল্যান বাস্তবায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা যেন এভাবে আর ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে বিষয়ে সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
লিখিত বক্তব্যে শমী কায়সার বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউন, ধীর গতি এবং ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দীর্ঘসময় বন্ধ থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ই- কমার্স ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী, যা সরকারও অবগত। উচ্চপর্যায়ের অনেককে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। দেশের ২০ লাখ উদ্যোক্তা ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। শুধু ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তা রয়েছেন ৫ লাখেরও বেশি। পণ্য সরবরাহে রয়েছেন আরও ৮ লাখ মানুষ।
প্রতিবছরই এ সংখ্যা ২৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। প্রতিদিন ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ই-কমার্স লেনদেন হয়, যা ইন্টারনেট না থাকার কারণে ১২ দিন ধরে বন্ধ ছিলো। পচনশীল দ্রব্যের অর্ডারও বন্ধ হয়ে গেছে। ফেসবুক চালু করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ই- ক্যাব সভাপতি বলেন, ইন্টারনেট চালুর পর ৫ শতাংশ এর মতো চালু হয়েছে। গত ১৩ দিনে এই খাতে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিদিন তার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ থাকায় দেশের ই-কমার্স খাতে গত ১৩ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িছে যেতে পারে।
ই-ক্যাব ডিজিটাল মার্কেটার, কনটেন্ট ডেভেলপার, স্টার্টআপ এবং ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে সদস্যদের কাছে সার্ভে ফরম থেকে তারা এ তথ্য পেয়েছে বলে জানান। আম্বারিন রেজা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ থাকার পরও উদ্যোক্তাদের অ্যাড থেকে অটো কেটে নেওয়া টাকা ফিরিয়ে আনতে মেটার সঙ্গে ই-ক্যাব এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে। ফেসবুক বন্ধ করায় দেশের ই-কমার্স খাতের ৯৫ শতাংশ লেনদেন এখনো বন্ধ উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা বলেছেন, আমরা উদ্যোক্তাদের জন্য নিজেদের প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং অল্টারনেটিভ মার্কেট প্লেসে যুক্ত হয়ে ব্যবসায় পরিচালনায় উদ্বুদ্ধ করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।