জুমবাংলা ডেস্ক : ঈদুল আজহা মুসলিমদের জন্য আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রতীক। এই দিনে কোরবানি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যার জন্য সুস্থ ও নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের পশু নির্বাচন করা জরুরি। ইসলাম কোরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিষ্কার দিকনির্দেশনা দিয়েছে। আজকের আলোচনায় আমরা জানব কেন কোরবানির পশুর যোগ্যতা অপরিহার্য এবং শরীর সুস্থ পশু কেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামী দৃষ্টিকোণে কোরবানির পশুর যোগ্যতা
কোরবানির পশুর যোগ্যতা নির্ধারণে ইসলাম বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো পশুর বয়স, শারীরিক সুস্থতা এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সম্পূর্ণতা। হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন: “চার ধরনের পশু কোরবানির জন্য অযোগ্য—এক চোখে কানা, মারাত্মকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু ও অতিরিক্ত দুর্বল।” (সহিহ মুসলিম)। এই নির্দেশনা অনুসারে, কোরবানির জন্য এমন পশু নির্বাচন করতে হবে, যা দেখতে সুস্থ, অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পূর্ণাঙ্গ এবং চলাফেরায় স্বাভাবিক।
গরুর বয়স কমপক্ষে দুই বছর এবং ছাগলের এক বছর হওয়া আবশ্যক। উটের ক্ষেত্রে তা পাঁচ বছর। এর কম বয়সের পশু গ্রহণযোগ্য নয়। পশুর দাঁত, চোখ, পা, কান ইত্যাদি সম্পূর্ণ এবং স্বাভাবিক থাকতে হবে।
শরীর সুস্থ পশুর ধর্মীয় ও স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব
শরীর সুস্থ পশু কেবল ইসলামি বিধানের জন্য নয়, জনস্বাস্থ্যের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। অসুস্থ বা ইনজেকশন দেয়া পশুর মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বাজারে অনেক সময় পশুকে মোটা দেখাতে স্টেরয়েড ও ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়, যা একদিকে প্রতারণা, অন্যদিকে হালাল কোরবানির শর্ত লঙ্ঘন করে।
ভেটেরিনারি সার্টিফিকেটবিহীন পশু কেনা উচিত নয়। কোরবানির সময় যদি জানা যায় পশু অসুস্থ, তাহলে কোরবানি বাতিল হতে পারে। তাই পশু কেনার সময় ভালোভাবে তার স্বাস্থ্যের দিকটি যাচাই করা জরুরি। চোখ পরিষ্কার আছে কিনা, দাঁত ঠিক আছে কিনা, পা ঠিকভাবে চলছে কিনা—এসব লক্ষণ দেখে পশুর স্বাস্থ্য নির্ধারণ করা যায়।
সুস্থ পশু আল্লাহর পথে উত্তম ইবাদতের প্রতীক। যেমন ব্যক্তি পরিপূর্ণ ইমানসহ ইবাদত করে, তেমনি পরিপূর্ণ পশু কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ সম্ভব। বিস্তারিত জানতে পড়ুন বিশ্ববাজারের প্রভাব সম্পর্কিত প্রতিবেদন।
কোরবানির পশুর যোগ্যতা নিশ্চিত করলেই কোরবানি ইবাদত হিসেবে কবুল হয় এবং জনস্বাস্থ্য, সামাজিক ন্যায় ও ধর্মীয় দায়িত্ব একত্রে পালন করা সম্ভব হয়।
FAQs
- কোন বয়সের পশু কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য?
গরুর জন্য দুই বছর, ছাগলের জন্য এক বছর, উটের জন্য পাঁচ বছর। - পশুর চোখ বা পা যদি অক্ষম হয়, তাহলে কি কোরবানি হবে?
না, অঙ্গহানি বা গুরুতর দুর্বল পশু কোরবানির জন্য অযোগ্য। - ভেটেরিনারি সার্টিফিকেট কেন জরুরি?
পশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ও রোগপ্রতিরোধের দিক বিবেচনায় এটি গুরুত্বপূর্ণ। - ইনজেকশন দেয়া পশু কোরবানি করা যাবে কি?
যদি ইনজেকশন পশুকে অসুস্থ করে বা প্রতারণামূলকভাবে মোটা দেখায়, তবে কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে না। - কোন লক্ষণে পশু সুস্থ বোঝা যায়?
চোখ পরিষ্কার, দাঁত মজবুত, হাটা স্বাভাবিক এবং অতিরিক্ত দুর্বলতা নেই—এগুলো সুস্থ পশুর লক্ষণ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।