জুমবাংলা ডেস্ক : ঈদুল আজহা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য ত্যাগ ও মানবিকতার উৎসব। তবে কোরবানির আনন্দ উদযাপনের সময় অনেকেই ভুলে যান পরিবেশের কথা। সঠিকভাবে পশু জবাই ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না হলে তা আমাদের পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনে। তাই দিন দিন “পরিবেশবান্ধব কোরবানির” ধারণা গুরুত্ব পাচ্ছে। এটি শুধু আধুনিক সময়ের দাবি নয়, বরং নৈতিক দায়িত্বও।
Table of Contents
ঈদুল আজহা পরিবেশ: কোরবানির নামে দূষণ কতটা?
প্রতি বছর কোরবানির সময় দেশে গড়ে ১ লাখ টনের বেশি পশুর বর্জ্য তৈরি হয়। যদি এই বর্জ্য যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা করা না হয়, তাহলে তা নদী, নালা ও ড্রেনেজ সিস্টেমে গিয়ে পানিদূষণ সৃষ্টি করে। এর পাশাপাশি বাতাসে দুর্গন্ধ, রোগজীবাণুর বিস্তার এবং মশার উপদ্রবও বাড়ে।
বিশেষ করে শহরাঞ্চলে দেখা যায়, অনেকেই রাস্তার পাশে বা ড্রেনের উপর পশু জবাই করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে, এই সময়টাই শহরের সবচেয়ে দূষিত সময়গুলোর একটি হয়ে থাকে।
পরিবেশবান্ধব কোরবানি: কীভাবে সম্ভব?
পরিবেশবান্ধব কোরবানি বলতে বোঝায় এমন পদ্ধতি যা পরিবেশে ক্ষতি না করে বা কম ক্ষতির মাধ্যমে কোরবানি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর জন্য কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়:
- সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই
- সিটি করপোরেশনের প্রদত্ত বর্জ্যব্যাগ ব্যবহার
- পানির অপচয় রোধ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা
- বর্জ্য শোধনাগারে প্রেরণ
- জৈব সার তৈরিতে কোরবানির বর্জ্য ব্যবহার
এছাড়া, পশুর চামড়া, হাড় এবং অন্যান্য বর্জ্য পূণর্ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় এদের প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পেও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
সচেতনতা ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ
ইসলামী শিক্ষায়ও পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, প্রাণীকে কষ্ট না দিয়ে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে কোরবানি করতে হবে। সুতরাং পরিবেশের কথা মাথায় রাখা একটি ধর্মীয় দায়িত্বও।
ইমামগণ যদি খুতবায় এসব বিষয় তুলে ধরেন, তাহলে সচেতনতা আরও বাড়বে।
কার্যকর উদ্যোগে সফলতা
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন সম্প্রতি নির্ধারিত স্থান ও সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে প্রশংসনীয় কাজ করেছে। অনেক ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ শেষ হয়েছে।
তবে, এখনো অনেক মানুষ বর্জ্য ফেলার নিয়ম না জানার কারণে পুরনো অভ্যাস অনুসরণ করছেন। এখানেই দরকার আরও বৃহত্তর সচেতনতা।
ঈদুল আজহা পরিবেশ সম্পর্কে চিন্তা করলে বোঝা যায়, শুধু ধর্মীয় অনুশাসন পালন নয়, এর সাথে যুক্ত রয়েছে সামাজিক ও প্রাকৃতিক দায়িত্বও।
FAQs
- পরিবেশবান্ধব কোরবানি কী?
কোরবানির এমন পদ্ধতি যাতে পরিবেশে ক্ষতি কম হয় বা না হয়। - কোন জায়গায় কোরবানি করা নিরাপদ?
সরকার নির্ধারিত স্থান বা সুনির্দিষ্ট কোরবানি কেন্দ্র। - বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কীভাবে হবে?
সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যাগ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। - কোরবানির বর্জ্য পুনঃব্যবহারযোগ্য কি?
হ্যাঁ, বর্জ্য দিয়ে জৈব সার, চামড়া প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি সম্ভব। - পরিবেশ রক্ষায় জনগণের কী ভূমিকা?
সচেতনতা, নিয়ম মানা এবং সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া মূল ভূমিকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।