মুসলমানদের জন্য যেই দুইটি ঈদ উৎসব রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল কোরবানি ঈদ। উৎসবের পাশাপাশি এই ঈদের রয়েছে আলাদা সামাজিক গুরুত্ব। আর ঈদকে সামনে রেখে রান্না আর অতিথি আপ্যায়ন তো আছেই। তাই কিছু কাজ এখন থেকে গুছিয়ে রাখলে অনেক ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চলুন দেরি না করে দেখে নিই ঈদুল আযহার জন্য সেরা রেসিপি কিভাবে করা যায়…
গরুর রেজালা
যা লাগেব : গরুর মাংস ২ কেজি, আস্ত ধনিয়া ১ চা চামচ, আস্ত জিরা ১ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১/২ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, গরম মসলা ১/২ চা চামচ, লালমরিচ ৫-৬টি, তেজপাতা ২-৩টি, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, তেল ১ কাপ, টকদই ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো।
যেভাবে করবেন: প্রথমেই মাংস ধুয়ে লবণ দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে রেখে দিন। আস্ত ধনিয়া এবং জিরা ভেজে গুঁড়া করে নিন। এবার একটি হাঁড়িতে তেল দিয়ে এতে এক এক করে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, লালমরিচ, তেজপাতা, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে চড়িয়ে দিন এবং পানি শুকিয়ে না আসা পর্যন্ত মাঝারি আঁচে রান্না করুন। কষানো হলে ৩-৪ কাপ পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে ঝোল ঘন হয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ঝোল ঘন হয়ে এলে ভাজা ধনিয়া এবং জিরা গুঁড়া দিয়ে নেড়ে আরও ৪-৫ মিনিট রান্না করে নিন। নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার বিয়ে বাড়ির স্বাদে গরু মাংসের রেজালা।
কাটা মাসালা মাংস
যা লাগবে: এক কেজি মাংস টুকরা করা, দুই কাপ পেঁয়াজ কুচি, এক টেবিল চামচ রসুন কুচি, এক টেবিল চামচ আদা কুচি, এক চা চামচ ধনিয়া গুঁড়া, আধা চা চামচ মরিচ গুঁড়া, ছয়-সাতটি শুকনামরিচ, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়া, এক চা চামচ জিরা গুঁড়া, লবণ পরিমাণমতো, এক কাপ সয়াবিন তেল, চার-পাঁচটি এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, দুই-তিনটি তেজপাতা, আধা কাপ টকদই, আধা চা চামচ চিনি।
যেভাবে করবেন: চিনি বাদ দিয়ে সব উপকরণ মিশাতে হবে। এখন ৩০ মিনিট মেরিনেট করে একটি গরম সসপ্যানে মিশ্রণটি ঢেলে দিন এবং উচ্চ তাপে ২০ মিনিট রান্না করুন। রান্নার সময় বারবার নাড়তে হবে। যখন পানি শুকিয়ে যাবে এবং তেল ওপরে উঠে আসবে তখন আরও দুই কাপ পানি যোগ করুন। এবার চুলা থেকে নামিয়ে ওপরে চিনি ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।
কাচ্চি বিরিয়ানি
যা লাগবে: বাসমতী চাল এক কেজি, খাসির মাংস দুই কেজি (মাঝারি টুকরা, হাড়সহ) আদা বাটা দুই টেবিল চামচ, রসুন বাটা এক টেবিল চামচ, দারুচিনি তিন-চারটি, সবুজ এলাচ আট-দশটি, কালো এলাচ চার-পাঁচটি, লবঙ্গ ১/২ চা চামচ, জয়ত্রী গুঁড়া এক চা চামচ, জায়ফল ১/২ চা চামচ, টকদই এক কাপ, ঘি তিন-চার কাপ, শাহি জিরা ১/২ চা চামচ, আলু (মাঝারি) চার-পাঁচটি, পেঁয়াজ কুচি এক কাপ, পানি ছয় কাপ, লবণ স্বাদমতো, গুঁড়াদুধ দুই টেবিল চামচ, জাফরান এক চিমটি, আলুবোখারা ১০-১২টি, ময়দা দুই কাপ।
যেভাবে করবেন: প্রথমেই চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার মাংস ধুয়ে লবণ দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার শুকনো মরিচ, দারুচিনি, এলাচ, জিরা, লবঙ্গ, জয়ত্রি, জায়ফল, কাবাব চিনি এবং শাহি জিরাসহ সব মসলা গুঁড়া করে নিন।
এবার একটি হাঁড়িতে মাংস, গুঁড়া করে রাখা মসলা এবং দই মাখিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এবার অন্য একটি হাঁড়িতে ৬ কাপ পানি ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে ওঠামাত্র চাল দিন। চাল একটু ফুটে এলেই পানি ঝরিয়ে একটি পাত্রে সংরক্ষণ করুন। জাফরান কুসুম গরম পানিতে গুলিয়ে নিতে হবে। চাল ঝরানো গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে নিতে হবে। মাংসের হাঁড়িতে এবার এক এক করে ভাজা আলু, পেঁয়াজ বেরেস্তা, আলুবোখারা এবং ঘিমিশ্রিত গরম পানি দিতে হবে। এবার ওপরে চাল দিয়ে জাফরানের মিশ্রণ ঢেলে দিন এবং বাকি ঘিমিশ্রিত গরম পানি দিন। মনে রাখতে হবে, পানি যেন চালের ওপরে না আসে। এবার ময়দা গুলিয়ে হাঁড়ির ঢাকনা দিয়ে ভালোমতো সিল করে চুলায় চড়িয়ে দিন। কোনো ফাঁকা যেন না থাকে ময়দার গোলা একটু নরম করে নিয়ে তবেই ঢাকনা সিল করতে হবে। এক থেকে দেড় ঘণ্টা মাঝারি আঁচে রান্না করুন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল বিয়ে বাড়ির কাচ্চি বিরিয়ানি। কাবাব এবং চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার কাচ্চি বিরিয়ানি।
গোলাপজাম
যা লাগবে: গুঁড়াদুধ ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, তরল দুধ ১/২ কাপ, ময়দা ৪ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা ১ চা চামচ, এলাচ গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, তরল দুধ ১ কাপ (মাখানোর জন্য)।
সিরার জন্য
চিনি ২ কাপ, পানি ১ কাপ, আস্ত এলাচ ৩-৪টি।
যেভাবে করবেন: একটি ফ্রাইপ্যানে ঘি দিয়ে গরম করে নিতে হবে। এবার তরল দুধ দিয়ে ভালো করে নেড়ে আরও কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এবার গুঁড়াদুধ একটু একটু করে দিতে হবে যেন দানা দানা না হয়, নাড়া থামানো যাবে না। হালকা আঁচে নাড়তে হবে। এক সময় প্যান থেকে নরম হয়ে উঠে আসবে, সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে।
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুই মাস ধরে বসবাস, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা চৈতীর মৃত্যু
এবার অন্য একটি হাঁড়িতে চিনি এবং পানি দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে। সিরা হালকা আঁচে চুলায় রেখে দিতে হবে। এবার ঠান্ডা করে রাখা মিশ্রণটিতে ময়দা ও দুধ দিয়ে ছেনে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন দানা দানা না হয়ে থাকে। ছানা হয়ে গেলে গোল গোল মিষ্টি আকারে বানিয়ে গরম ঘিয়ে ভেজে, সরাসরি মিষ্টির সিরায় দিয়ে দিতে হবে এবং ঢেকে রাখতে হবে। ৩-৪ ঘণ্টা পর পরিবেশন করুন মজাদার ঘিয়ে ভাজা নরম নরম গোলাপজাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।