জুমবাংলা ডেস্ক : প্রতিবারের মতো এবারেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে নৌ পথের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে নৌ পুলিশ বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বেলা ১১টায় নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নৌপথে যাত্রী, পণ্য ও কোরবানির পশু পরিবহনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে একটি ভিডিও এবং পাওয়ার পয়েন্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে নৌপুলিশের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। সভায় উপস্থিত বক্তারা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নৌপথ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় নৌ পুলিশ প্রধান বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং পশু ও পণ্য পরিবহন নিরাপদ ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে নৌ পুলিশ বদ্ধ পরিকর। পবিত্র ঈদে নৌ পুলিশ সকল নৌঘাট, নৌ টার্মিনাল সমূহে দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, কোরবানির পশু পরিবহনে যেন কোনো প্রকার বিঘ্ন না হয় সেজন্য কোরবানির পশু বহনকারী সব নৌযানে কোন হাটে ভিড়বে তা উল্লেখপূর্বক ব্যানার লাগাতে হবে এবং কোরবানির পশুসহ অন্যান্য পণ্যবাহী নৌযান নৌপথে কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নৌ পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নৌ পথে যে কোনো সমস্যায় নৌ পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর- ০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধম্যে নৌ পুলিশকে অবগত করলে নৌ পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নৌ পুলিশ প্রধান বলেন, নৌ পথ ব্যবহারকারী প্রত্যকেই যেন নিরাপদে তাদের পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা যেন নির্বিঘ্নে পণ্য ও কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে নৌ পুলিশ দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাট সমূহে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবে।
তিনি নৌপথ ও নৌযান সংক্রান্ত সকল সরকারি বেসরকারি সংস্থা, সেবা প্রত্যাশী জনগণ এবং নৌ পুলিশসহ সকলে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ঈদুল আজহা দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঈদে নৌপথ ব্যবহারকারী যাত্রীদের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে এবং পণ্য ও পশু পরিবহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌ পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পন্টুনে হকার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রী সংখ্যার আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট, বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পিড বোট চলাচল বন্ধ রাখা, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ১৩-২৩ জুন পর্যন্ত সময়ে বালুবাহী বাল্ক হেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই,পকেটমারসহ যে কোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করা, নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করা, বৈধ কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌ যান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি, টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যে কোনো জায়গায় অন্য কোনো ছোট নৌযান হতে যাত্রী উঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিতকরণ, বিভিন্ন নদী কেন্দ্রিক হাটে জোরপূর্বক পশু নামালে বা চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ,পশুবাহী নৌযান কোন হাটে ভিড়বে তা ব্যানারে লিখে টানানো, প্রত্যেক লঞ্চে প্রশস্ত সিঁড়ি এবং সিড়ির দুই পাশে রেলিং এর ব্যবস্থা, লঞ্চের মুরিং কাজে ব্যবহৃত পুরোনো/ জরা জীর্ণ আলাদ পরিবর্তন করে নতুন/আলাদা সংজোজন, সব নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং এর ব্যবস্থা করণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এ সভায় বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, বাঅনৌচ(যাপ),লঞ্চ মালিক সমিতি, নৌ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, কার্গো ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কার্গো ট্রলার বাল্ক হেড শ্রমিক ইউনিয়ন, লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশন বাঘা বাড়ি, সুন্দরবন নেভিগেশন সদরঘাট, এম কে শিপিং লাইন্সসহ নৌযান ও নৌপথের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, অতিরিক্ত ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, ডিসি লালবাগ, ডিএমপি, নৌ পুলিশ হেডকোয়াটার্স এর সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ অঞ্চল, পুলিশ সুপার ঢাকা অঞ্চল, নৌ পুলিশের ৯টি অঞ্চলের পুলিশ সুপারবৃন্দ এবং নৌ পুলিশের ১৪২ টি থানা/ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।