জুমবাংলা ডেস্ক: গোপালগঞ্জে ভাইরাস ও মাকড়সার আক্রমণে উচ্ছে ক্ষেতের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নে ২০ হেক্টর জমির উচ্ছে ক্ষেতে মড়ক লেগেছে বলে সেখানকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান।এ তে অন্তত আড়াই কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ওই ইউনিয়নের সিঙ্গারকুল গ্রামের কৃষক ভজন বিশ্বাস ও সেখানকার উচ্ছে চাষিরা।
ভজন বিশ্বাস বলেন, “গত ২৫ বছর ধরে আমরা উচ্ছের চাষ করে আসছি। এ বছর উচ্ছে গাছে ফলন আসার পর প্রচণ্ড শীত পড়ে। শীতের মধ্যে গাছের আগা শুকিয়ে মরে যেতে শুরু করে। ভাইরাসে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। এরপর মড়ক লাগে। লাভজনক উচ্ছে চাষ আমাদের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। আমাদের উৎপাদিত উচ্ছে ঢাকা-খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। হঠাৎ করে ক্ষেতে মড়ক লাগায় আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেত রক্ষায় এখন আমরা দিশেহারা।” যদিও উচ্ছের সঙ্গে সাথী ফসল সরিষা ও পেঁয়াজ চাষ করেছেন বলে জানান ওই কৃষক ।
একই গ্রামের কৃষক ইলিয়াস মোল্লা বলেন, “দুই বিঘা জমিতে উচ্ছের চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। পৌষ মাসের শুরুতে ক্ষেত থেকে উচ্ছে তুলে বিক্রি শুরু করি। পাইকাররা ক্ষেতে থেকেই প্রতি কেজি উচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছিল। এ বছর উচ্ছে চাষে খরচ বাদে অন্তত ২ লাখ টাকা লাভের আশা ছিল। কিন্তু হঠাৎ ক্ষেতে মড়ক লাগায় এখন খরচের টাকাই উঠবে না।”ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান চাষিরা। কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পরামর্শে ওষুধ প্রয়োগ করেও ফল পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান।
সিঙ্গারকুল গ্রামের আরেক কৃষক ফরিদ খান বলেন, “ক্ষেত থেকে পাইকাররা প্রতি কেজি উচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সে হিসাবে এ এলাকার ২০ হেক্টর জমির উচ্ছে ফসল নষ্ট হয়ে আমাদের আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
ক্ষতি পোষাতে তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, চলতি রবি মৌসুমে রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ৫২ হেক্টর জমিতে উচ্ছের চাষ হয়। প্রচণ্ড শীতে ক্ষেতে ভাইরাস ও মাকড়সার আক্রমণ হয়। ২০ হেক্টর জমির উচ্ছে ক্ষেত ভাইরাস ও মাকড়ে আক্রমণে নষ্ট হয়েছে। “আমাদের পরামর্শে ওষুধ প্রয়োগ করে কৃষক ৩২ হেক্টর জমির উচ্ছে রক্ষা করেছে। উচ্ছে ক্ষেত রক্ষায় আমি দিন- রাত ক্ষেতে কৃষকের সঙ্গে কাজ করছি।” ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতি হেক্টরে উচ্ছের গড় ফলন ১৫ মেট্রিক টন। গত ২৫ বছর ধরে কৃষকরা একই ফসল করছেন। সেচ সমস্যা মড়ক লাগার কারণ বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন।
ওই কর্মকর্তা জানান, কৃষকরা উচ্ছের সঙ্গে সরিষা ও পেঁয়াজ করেছেন। ওই মাঠের উচ্ছে নষ্ট হলেও সরিষা ও পেঁয়াজের অবস্থা ভালো। সাথী ফসল থেকে তারা কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামার বাড়ির উপ-পরিচালক অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, “আমি মাঠ পরিদর্শন করেছি। উচ্ছে ক্ষেত রক্ষায় আমরা মাকড়নাশক প্রয়োগ এবং ভাইরাস প্রতিরোধে মেলাথিয়ন গ্রুপের ওষুধ প্রয়োগের পারামর্শ দিয়েছি। এগুলো প্রয়োগ করে অনেক কৃষক উপকৃত হয়েছেন।” মাচার উচ্ছে ক্ষেতে ভাইরাস ও মাকড়সার আক্রমণ হয়নি। শুধু মাটির ক্ষেতে হয়েছে।” চলতি রবি মৌসুমে এ জেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে উচ্ছের আবাদ হয়েছে বলে এ কর্মকর্তা জানান।#বিডিনিউজ২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।