লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
খালবিল, পুকুর-নালা পানিতে টইটুম্বুর হয়ে রয়েছে। অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে বেশি পানি জমে যাওয়ায় রোপা আমন নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্ষাকালীন সবজির ক্ষেতে পানি জমে অনেক স্থানে পচে গেছে ক্ষেত। বিরামহীন বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে বাতাসের গতি বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ করে ট্রলার নিয়ে মৎস্য বন্দর মহিপুরের শিববাড়িয়া নদীতে আশ্রয় নিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অস্বাভাবিক জেয়োরের পানিতে বেড়িবাঁধের বাইরে নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে। মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর, সুধীরপুর, কমরপুরে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়া এলাকার বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে গ্রামের পার গ্রাম তলিয়ে গেছে।
বিরামহীন বর্ষণে খুব কম সংখ্যক মানুষকে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। কাজ না পেয়ে দিনমজুর অনেকে বেকার হয়ে পড়েছে। পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দোকানপাট অনেকটা ছিল বন্ধ অবস্থায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে সবজির বাজরে তেমন কোন সবজি দেখা যাচ্ছে না। যেসকল সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, তাও বেশিরভাগ বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। তবে কাঁচা মরিচের মূল্য এমনিতেই বেশি, তার মধ্যে বর্ষার কারণে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে সবজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
জেলে জহিরুল আলম জানান, আবহাওয়া খারাপের কারণে দীর্ঘ এক সপ্তাহ যাবৎ বেকার জীবন-যাপন করছেন। উপার্জন না থাকায় মহাজনদের দেনার বোঝা ভারী হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
শ্রমিক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হলে কোন না কোন কাজ পাওয়া যেত। কিন্ত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি থাকায় কাজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সবজি চাষী মো. রায়হান বলেন, তার দুই বিঘা জমিতে বর্ষাকালীন সবজি রয়েছে। পানি জমে ক্ষেতের অধিকাংশ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
আলীপুর ও কুয়াকাটা মৎস্য আড়ৎ সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, এখন সাগর উত্তাল রয়েছে। সাগর ও নদ-নদীতে স্বভাবিক জোয়ারের চেয়ে অনেকটাই পানি বেড়ে গেছে। তবে সকল ট্রলারগুলো নোঙর করা অবস্থায় ঘাটে রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে এসব ট্রলার আবার সাগরে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, বর্ষার কারণে ক্ষেতে পানি জমে থাকলে সেসকল ক্ষেত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা সম্ভব হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।