জুমবাংলা ডেস্ক : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপে ৪৪২ উপজেলার মধ্যে তিন শতাধিক উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতরা নতুন মুখ। স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে ৩টি পদের ভোটে এক হাজার ২১০ জন নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৯৩০ জনই নতুন মুখ। তাদের মধ্যে ২৭৯ জন ৫ম উপজলা পরিষদেও জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
রবিবার (৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির পক্ষ থেকে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের ফল ও প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
চার দফায় অনুষ্ঠিত এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিশ্লেষণে সংস্থটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হলফনামায় প্রার্থীদের দেওয়া অনেক তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। অনেকের কর যোগ্য আয় নেই, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করেনি আওয়ামী লীগ। এতে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদের বিকাশ হচ্ছে। এ নিয়ে অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা চলছে। চলমান এসব সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এনবিআর, দুদক যাদের এসব দেখার কথা তাদের দায়িত্বে গাফলতি রয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে টিআইবির তথ্য কাজে লাগিয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ইসি, এনবিআর, দুদকসহ রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ দিলেন তিনি।
টিআইবি তাদের পর্যালোচনা তুলে ধরে জানায়, উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখ ৩১৭ জন। বিগত ৫ম উপজেলা পরিষদে ছিল ৬৫ জন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১০ জন নতুন মুখ। ৮৪ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন যারা গত উপজেলায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
টিআইবির তথ্য অনুযায়ী, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে তিন পদে মোট পাঁচ হাজার ৪৭২ জন প্রার্থী ছিলেন। চেয়ারম্যান পদে এক হাজার ৮৬৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই হাজার ৯৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করেছেন এক হাজার ৫১৩ জন।
আইন অনুযায়ী, দলীয় প্রতীকে ভোটের বিধান থাকলেও নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী।
নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৭৯ শতাংশই ব্যবসায়ী। গত পাঁচ বছরে বছরে যা বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বিজয়ীদের মধ্যে কোটিপতি রয়েছেন ১৫০ জন; যা মোট প্রার্থীর ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ২০১৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় নির্বাচিতদের অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
টিআইবি জানায়, প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমানে মামলা রয়েছে ৮৫৮ জনের, অতীতে মামলা ছিল এক হাজার ১০৯ জনের। বর্তমানে ১০টিরও বেশি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থী ছয়জন, অতীতে ১০টিরও বেশি মামলা ছিল ৪০ জনের।
বিগত পাঁচ বছরে ১০০ শতাংশের বেশি আয় বেড়েছে নারী ভাইস চেয়ারম্যানসহ এমন জনপ্রতিনিধি রয়েছেন ২৫১ জন, আর ৫০ শতাংশের বেশি আয় বেড়েছে ৩৬০ জনের।
এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চার ধাপে সম্পন্ন করতে তপশিল ঘোষণা করেছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তবে ঘূর্ণিঝড় রিমেলের কারণে কমিশন তা আর করতে পারেনি। চারধাপে ৪৪২ উপজেলায় ভোট শেষ করে কমিশন। আজ রোববার ১৯ উপজেলায় ভোট হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৪৬১ উপজেলায় ভোট শেষ হবে। আইনি জটিলতা ও মেয়াদ শেষ না হয় বাকি ৩৪ উপজেলায় ভোট হবে পরে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।