জুমবাংলা ডেস্ক : মালয়েশিয়ার মেডিসেরাম কোম্পানির নানাবিধ সমস্যার কথা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের কাছে তুলে ধরায় এক বাংলাদেশি কর্মীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৬০ জনের ভিসা বাতিলের হুমকি দিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার পর শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে নিরাপদ অভিবাসন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণসহ শ্রমবাজার সম্পর্কিত তৃতীয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকায় শুরু হবে। ইতোমধ্যে মালয়েশিয়া সরকারের ১৪ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছেন। বুধবার (২১ মে) সভা শেষে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে শ্রমিক নেওয়া সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় আগামী ছয় বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক পাঠানোর ঘোষণা আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সম্প্রতি চারদিনের সফরে মালয়েশিয়া যান। এ সময় তিনি ১৪ মে মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডি কোম্পানি ভিজিটে যান। সেখানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। এবং তাদের কাজকর্মের খোজ খবর নেন। এই সময় উপদেষ্টার কাছে বাংলাদেশি শ্রমিকরা তাদের কাজের পরিবেশ, বেতন, ভিসা সমস্যাসহ নানাবিধ কথা তুলে ধরেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) মালয়েশিয়ার নেগেরি সেম্বিলানের মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশি কর্মী নাহিদ ইব্রাহিমকে ফোন করে তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে দ্রুতই বরখাস্ত করা হবে বলে জানান। এরপরই নাহিদকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়। একদিনের মাথায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছেন। নাহিদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী।
এদিকে, মেডিসেরাম এসডিএন বিএইচডির এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার (১৬ মে) প্রায় ২০০ শ্রমিক নাহিদের ভিসা বাতিল ও বরখাস্তের কথা শুনে প্রতিবাদ করে। ফলে প্রায় ৬০ জন শ্রমিকের একটি তালিকা করেছে কোম্পানি। এবং তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের একান্ত সচিব মো. সরওয়ার আলমকে লেখা একটি ইমেইলে বরখাস্ত হওয়া শ্রমিক নাহিদ ইব্রাহিম লিখেন, ‘কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আমার পিছু নেয় এবং উপদেষ্টার সঙ্গে শ্রম সমস্যা নিয়ে আমি যা বলেছি তা শুনেছে। যার ফলে তারা আমাকে অফিসে ডেকে বলেছে যে আমাকে বরখাস্ত করা হবে।’ দয়া করে কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করুন। আমার এবং আমার পরিবারের পাশে থাকুন। ইমেইলটি কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনেও পাঠানো হয়েছিল। উপদেষ্টার একান্ত সচিব বা হাইকমিশন কেউই তার ইমেইলের জবাব দেননি।
উল্লেখ্য, নাহিদ তিন বছরের চুক্তিতে মালয়েশিয়ায় আসেন এবং এ বছরের আগস্টে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হবে। ধারদেনা, ঋণ নিয়ে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় আসতে নাহিদের পাঁচ লাখের বেশি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু কোম্পানিতে কাজ কম থাকা, অনিয়মিত বেতনের কারণে এখনও ঋণগ্রস্ত আছেন বলে জানা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।