স্পোর্টস ডেস্ক : করোনাভাইরাস মহামারির পর প্রথমবার মাঠে নেমেছিল জিমনাসিয়া লা প্লাতা। ওই প্রীতি ম্যাচের প্রতিপক্ষ ছিল সান লরেঞ্জো। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিপক্ষের মাঠে ডাগআউটে ছিলেন কোচ ডিয়েগো ম্যারাডোনা। পরে এসেছিলেন ফেস শিল্ড, যা অনেকটা দেখতে নভোচারীদের শিল্ডের মতো। কিন্তু সাবেক ফুটবল গ্রেটের মুখে ওই ফেস শিল্ড দেখে আর্জেন্টিনায় শুরু হয়ে গেছে হাসি-ঠাট্টা। তাদের মধ্যে আছেন সাংবাদিকরাও। এই উপহাসকারীদের ধুয়ে দিতে সময় নেননি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক।
ফেস শিল্ড পরা ম্যারাডোনাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা ‘মিম’ তৈরি করেছেন। সেখানে আর্জেন্টিনা লিজেন্ডকে অ্যানিমেশন মুভি টয় স্টোরির চরিত্র ‘বাজ লাইটইয়ার’এর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এবং তা হয়েছে ভাইরাল।
উপহাসকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে ৫৯ বছর বয়সী ম্যারাডোনা ইনস্টাগ্রামে একটি ছবিসহ বার্তা পোস্ট করেছেন। যেখানে তাকে ফেস শিল্ড পরে থাকতে দেখা গেছে এবং তার ছোট ছেলে ডিয়েগো ফের্নান্দোও তা পরে ছিল। আর্জেন্টিনায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে সাত লাখের বেশি মানুষ, মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজারের মতো।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেস শিল্ড পরার বিকল্প কিছু দেখছেন না ম্যারাডোনা। দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ আমি এই মাস্ক পরে ঘর থেকে বের হয়েছি, যা আমার ডাক্তার পরতে বলেছিলেন। কিছু ডাক্তারও একই সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকে। যারা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বা অন্য কোনোভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের সম্মানে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে আমি এটা পরেছি। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে ছেলেরা এবং কিছু সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে।’
এই উপহাসকারীদের মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর বেশি ক্ষোভ ঝারলেন ম্যারাডোনা, ‘আপনি যখন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তখন আপনার সমালোচনা করছে ওইসব সাংবাদিকরা। শুধু তাই নয়, যখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন তখনও। আমার মতো মানুষদের নিয়ে যারা উপহাস করছে তারাই আবার মৃতের সংখ্যা দিতে গিয়ে ভীত হয়ে পড়ছে। তাদের বুঝতে হবে যে কোনও কিছু বা কারও তোয়াক্কা না করে তারা নিজেদের বিকিয়ে দিতে পারে না। আপনারা কি একমত সবাই?’
মহামারির কারণে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সুপার লিগাসহ সব প্রতিযোগিতা বাতিল করেছিল ২৭ এপ্রিল। এরপর বুধবার প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল জিমনাসিয়া। ম্যাচটি হয়েছে গোলশূন্য ড্র। দলটি আগস্ট থেকে অনুশীলন শুরু করেছিল। কিন্তু করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকিপূর্ণদের তালিকায় থাকায় প্রথম দিকে দলের সঙ্গে ছিলেন না ম্যারাডোনা।
১৯৯৭ সালে ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর থেকে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা। মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের কারণে ২০০৪ সালে গুরুতর হার্ট ও শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অতিস্থুলতা কমাতে দুটি গ্যাস্ট্রিক বাইপাস অস্ত্রোপচার করান। অ্যালকোহল ছাড়াতেও দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয়েছিল ম্যারাডোনাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।