কখনও কি রাতের আকাশে উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখেছেন? ওগুলো আসলে উল্কা। অনেকে খসে পড়া তারা বা শুটিং স্টারও বলেন। মহাকাশ থেকে আসা এসব পাথরখণ্ড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সময় জ্বলে ওঠে। প্রাচীনকালের মানুষদের মনে এই উল্কা নিয়ে নানা ধারণা প্রচলিত ছিল। আজ সেসব ধারণা বদলেছে।
উল্কাঘাতে বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তি
১৯৫৪ সালের ৩০ নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের আলবামার সিলাকগা শহরে অ্যান হজেস নামে ৩৪ বছর বয়সী এক নারী একটি উল্কাঘাতে আহত হয়। তখন তিনি তাঁর বিছানাতে ঘুমাচ্ছিলেন। উল্কাপিন্ডের ওজন ছিল প্রায় সাড়ে ৮ পাউন্ড বা প্রায় ৪ কেজি। উল্কাপিণ্ডটি এখন রাখা আছে যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ান’স ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে। ইতিহাসের একমাত্র উল্কাঘাতে বিক্ষত মানুষ এই অ্যান হজেস। আর কেউ এরকম আঘাত পেয়েছে বলে জানা যায় না। তবে উল্কাপাত খুব দুর্লভ ঘটনা নয়। মানুষ না হলেও ১৯৭২ সালে ভেনিজুয়েলায় একটি গরু মারা যায় উল্কাঘাতে।
ডাইনোসর যুগের বিলুপ্তির পেছনে উল্কাপাত
কোটি কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বিচরণ করত ডাইনোসর। বিজ্ঞানীদের ধারণা ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত গ্রহাণুর আঘাতের পৃথিবী থেকে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু ২০২০ সালে ডাইনোসরের জীবাশ্মের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষণায় দেখা গেছে, ডাইনোসরদের বিলুপ্তির প্রক্রিয়া গ্রহাণুর আঘাতের অন্তত ৫ কোটি বছর আগেই শুরু হয়েছিল।
পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে বড় উল্কাপিণ্ড
যখন উল্কা বায়ুমণ্ডলে ঘর্ষণে সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে পৃথিবীতে পড়ে তখন একে উল্কাপিণ্ড বলে। পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে বড় উল্কাপিণ্ড হলো ১৯২০ সালে নামিবিয়াতে আবিষ্কৃত হোবা উল্কা। হোবা উল্কাটির ওজন প্রায় ৫৪ হাজার কিলোগ্রাম। হোবা উল্কাপিণ্ডটি এত বড় ও ভারী যে এটি যেখান থেকে পাওয়া গেছে সেখান থেকে সরানো হয়নি।
প্রতি বছর উল্কাবৃষ্টি হয়
উল্কা হলো মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা ছোট ছোট গ্রহাণু, ধূমকেতু ইত্যাদির টুকরা। যখন এই টুকরাগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, তখন বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে এটি উত্তপ্ত হয়ে জ্বলে উঠে। এই জ্বলন্ত অবস্থায় আমরা একে উল্কাপাত হিসেবে দেখি। আর যখন একসঙ্গে অনেক উল্কাপাত দেখা যায়, তখন এ ঘটনাকে বলে উল্কাবৃষ্টি। উল্কাবৃষ্টির নামকরণ সাধারণত সেই নক্ষত্রমণ্ডলের নামানুসারে করা হয়, যেখান থেকে উল্কাগুলো জ্বলতে দেখা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।