জুমবাংলা ডেস্ক : বিদ্যুৎ বিতরণের কোনো কোম্পানিকে বিদ্যুৎ কেনার অর্থ পরিশোধের সময় ৬ শতাংশ হারে উৎসে কর দিতে হয়। এই করের জন্য প্রতি বছর ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে বলে দাবি বিদ্যুৎ বিভাগের। এজন্য কর কর্তনের বিধান প্রত্যাহার করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
চিঠিতে বলা হয়, উৎসে কর থেকে পাওয়া রাজস্বের পরিমাণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডভুক্ত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অতি সামান্য বা ০ দশমিক ৫ শতাংশেরও কম। ফলে এটি প্রত্যাহার করা হলে সরকারের রাজস্ব আয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। উৎসে কর প্রত্যাহার করা হলে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ হ্রাস পাবে। সরকারের ভর্তুকি প্রদানের জন্য ঋণ বা বন্ডের ওপর নির্ভরশীলতা কমে আসবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হাবিবুর রহমান সই করা ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, আয়কর আইন অনুযায়ী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বা বিদ্যুৎ বিতরণে নিয়োজিত কোনো কোম্পানিকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের অর্থ পরিশোধকালে প্রদেয় অর্থের ওপর ৬ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বা সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) বাল্ক বিদ্যুৎ বিক্রয় মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভোক্তাদের কল্যাণ বিবেচনায় কোনো প্রকার কর ও মুনাফা বিবেচনা করা হয়নি।
এছাড়া বাবিউবো ব্যয় বিক্রয় মূল্য দ্বারা নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় প্রতি বছর বাবিউবোর বিপুল পরিমাণ লোকসান হচ্ছে। ৬ শতাংশ উৎসে করের জন্য প্রতি বছর লোকসানের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় বাড়ছে।
চিঠিতে বলা হয়, কর্তন করা ৬ শতাংশ উৎসে কর বাবিউবো লোকসানি প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও অপরিচালনা আয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের সুযোগ না থাকায় বিপুল পরিমাণ উৎস কর প্রদানের পরও অপরিচালনা খাতের আয়ের জন্য পৃথক কর দাবি করা হচ্ছে। সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিসমূহের বিদ্যুৎ ট্যারিফের খরচ নির্ধারিত।
এরমধ্যে জ্বালানি বিলের পরিমাণ ৬০-৮০ শতাংশ। অবশিষ্ট ২০-৮০ শতাংশ ফিক্সড কস্টের ৭০-৮০ শতাংশই ঋণ ও ঋণের কিস্তি এবং ২০-৩০ শতাংশ হচ্ছে পরিচালনা ব্যয়। ফলে মোট বিলের ওপর ৬ শতাংশ হিসাবে বিপুল পরিমাণ উৎসে কর কর্তন করায় কোম্পানিসমূহ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য আর্থিক সংকটে ভুগছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাবিউবোর সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিসমূহের মাসিক বিদ্যুৎ বিল থেকে ৬ শতাংশ আয়কর কর্তনের ফলে বার্ষিক করপোরেট কর উৎসে কর আদায়ের চেয়ে অনেক কম হয়। কোম্পানিসমূহের বিল থেকে উৎসে কর কর্তনের ফলে কোম্পানিসমূহ আর্থিকভাবে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ৬ শতাংশ উৎসে কর বহাল রাখলে বাবিউবোর সাথে কোম্পানির চুক্তি সংশোধন করার প্রয়োজন হবে।
চুক্তি সংশোধন করলে ৬ শতাংশ কর বাবিউবোর ওপর বর্তাবে। এর ফলে বাবিউবো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে যা ভর্তুকির মাধ্যমে পুনঃভরণ করা প্রয়োজন হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।