জুমবাংলা ডেস্ক : আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ডিমের বাজার। গত মাসে প্রতি ডজন ডিম ১৬০-১৭০ টাকায় কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এরপর জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে ডিমের বাজারে সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়টি পরিষ্কার হয়। এর পর এটি নেমে আসে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। এ ঘটনার এক মাস পার না হতেই আবারো প্রতি ডজন ডিমে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়ে গতকাল তা বিক্রি করতে দেখা যায় ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
খুচরা ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ জন্য উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন খামারিরা। ফলে মুরগির উৎপাদন ও সাপ্লাই কম থাকায় দাম বেড়েছে। পাইকারিতে ডিমের দাম বাড়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। পাইকারি বাজারে কমালে আমরাও কমিয়ে বিক্রি করি।
ডিমের দাম বাড়লেও গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। প্রতি কেজি পোলট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। ৩০ টাকা দাম বেড়ে সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়।
এ ছাড়া গত সপ্তাহের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজারে নতুন সবজি হিসেবে শিম ও ফুলকপি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৬০ টাকায়। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটো, গাজর ও বরবটির। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
এই সবজিগুলোর পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে অন্যান্য সবজিরও। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, কাঁকরোল ৫০-৭০, কাঁচা পেঁপে ২০-২৫ ও পটোল ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কচুর লতি, ঝিঙে, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়। চাল কুমড়া পিস ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, বরবটির কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দুলের কেজি ৫০ টাকা। কাঁচাকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। কাঁচামরিচের দাম কমেছে। কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া শুকনা মরিচের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে বাসাবো বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, সবজির দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। তবে কিছুদিনের মধ্যে কমতে পারে দাম। কারণ এরই মধ্যে শীতের আগাম সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে।
বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এ ছাড়া এসব বাজারে দেশী মসুরের ডালের কেজি ১৩০ টাকা। ভারতীয় মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এ ছাড়া ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। বাজারে লাল ডিমের দাম কমে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। দেশী মুরগির ডিমের ডজন ২১০ টাকা।
মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি ও ইলিশ। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৮০০ টাকায়। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৯০০-১০০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকায়। বাজারে গরুর গোশতের কেজি ৬৬০ থেকে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়।
বগুড়ায় নাগালের বাইরে চালের দাম
বগুড়া অফিস জানায়,বগুড়ায় ধান ও চালের গুদামে দফায় দফায় প্রশাসনের অভিযানের পরেও চালের দাম ক্রেতাদের নাগালে আসেনি। সেই সাথে নতুন করে বেড়েছে আটা, ডিমসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম। এ অবস্থায় সমাজের নি¤œ ও নি¤œ মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ বাজারে হিমশিম খাচ্ছে।
আমনের ভরা মৌসুমে বগুড়াসহ দেশব্যাপী হঠাৎ করে গত আগস্ট মাসে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়ে যায়। এ নিয়ে ক্রেতাসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে বাজার স্বাভাবিক করতে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে খাদ্য বিভাগ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, জেলা মার্কেটিং অধিদফতরসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে বেসরকারি চালের গুদামে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রশাসনের সূত্র মতে, সদর উপজেলাসহ জেলার শেরপুর, শিবগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার কমপক্ষে ২৫টি চালের গুদামে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে চাল মজুদসহ নানা অপরাধে প্রায় ১৬ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ২৫টির বেশি মামলা করা হয। কিন্তু এতে চালের খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা দাম কমেছে।
বগুড়া শহরের মালতিনগর বকসি বাজারের চাল ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম ও ফতেহ আলী বাজারের চাল ব্যবসায়ী নরেন্দ্র নাথ জানান, অভিযানের পর চালের দাম প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা কমেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের বড় বড় কোম্পানি চালের ব্যবসা করছেন। তারা ধান কাটা শুরুতেই বেশি দামে ধান কিনে চাল তৈরি করে গুদামজাত করছেন। এ কারণে বাজারে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে। এসব গুদামে অভিযান চালালে দাম কমবে।
আটার দাম নতুন করে বেড়েছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা ৫৫-৫৮ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। তবে খাদ্য বিভাগের ডিলারদের মাধ্যমে আটা বিক্রি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এখানে প্রতি কেজি খোলা আটা ১৮টাকা দরে কিনতে পেরে স্বল্প আয়ের মানুষ কিছুটা সাশ্রয় পেতেন। কিন্তু সেটাও বন্ধ। এ ছাড়া ডিমের দাম নতুন করে আবারো বেড়েছে। গত ৩-৪দিন ধরে বগুড়ায় ডিমের দাম প্রতি হালি ৩৪-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০-৪৩টাকায় ঠেকেছে। হঠাৎ করে ডিমের দাম বাড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা। বগুড়ায় কাজী ফার্ম নামের একটি বড় কোম্পানি ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এর আগে ৫০ টাকার উপরে দাম উঠলে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট ডিমের খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করলে দাম কিছুটা কমে আসে।
সীতা জাতের লাউ এক গাছে ধরে ১০ থেকে ১৫ বছর, ফলন থাকে সারা বছর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।