জুমবাংলা ডেস্ক : এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স মানেই যেন মানুষের চাকরি হারিয়ে ফেলার ভয়। যেখানে মানুষ তার কর্মসংস্থান হারিয়ে ফেলবে। তাদের স্থলাভিষিক্ত হবে প্রযুক্তি। কল্পনায় ভেসে আসে রোবটের ছবি। কিন্তু আসলেই কি তাই?
মানুষের এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে দিতে এবং এআই-কে কাজে লাগিয়ে কীভাবে আরও দ্রুত কাজে সাফল্য অর্জন করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করছেন এআই প্রফেলনালস’রা। এমনই একটি যুগান্তকারী গবেষণার আসর বসেছিল খোদ বাংলাদেশের ঢাকায়।
দেশের অন্যতম সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ভিভাসফট লিমিটেডের আয়োজনে গত ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি বনানীতে প্রতিষ্ঠানটির হেড কোয়ার্টারে অনুষ্ঠিত হয় টানা ৩৬ ঘণ্টার একটি এআই হ্যাকাথন।
‘ভিভাসফট এআই হ্যাকাথন ২০২৫’-এর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা। ৩৭৮টি আবেদনের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান ১০টি টিমের ৩২ জন প্রতিযোগী।
টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে টানা ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের আইডিয়াকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা যায়, তা নিয়েই হ্যাকাথনে কাজ করেছেন প্রতিযোগীরা।
কেউ কাজ করেছেন জেনারেটিভ এআই দিয়ে এসআইইএম নিরাপত্তা বুদ্ধিমত্তা নিয়ে, আবার কেউ বা রিমোট জবের জন্য ভার্চুয়াল ওয়ার্কস্পেস তৈরি করেছেন। এ ছাড়াও এআই পাওয়ারড সিকিউরিটি মনিটরিং টুল তৈরি করেও দেখিয়েছেন কেউ।
চমকপ্রদ এসব উদ্ভাবনীয় আইডিয়াগুলোর মধ্যে সেরা সমাধান করে প্রথম স্থান দখল করেছে টিম ‘পরিধি’। তাদের আইডিয়া ছিল ‘ইবিপিএফ এবং এআই এজেন্টদের সাহায্যে সিস্টেমের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা’।
দুইজন পেশাদার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও দুইজন শিক্ষার্থীর এই দলটি জিতে নিয়েছে দুই লক্ষ টাকা নগদ অর্থ পুরস্কার। দলটির সদস্যরা হলেন-তাহনিক আহমেদ রাইয়্যান (দলনেতা), আব্দুল্লাহ আল আসিফ, আব্দুর রহমান ও রায়হান ইসলাম।
রানার্সআপ হিসেবে বিজয়ী হয় টিম ‘ডিফাইন কোডারস’। এআই-এর সাহায্যে দ্রুততম সময়ে কীভাবে নির্ভুলভাবে মার্কেট অ্যানালিসিস করা যায়, তার সমস্যা সমাধানের জন্য ‘মার্কেট ফ্লিক এআই’ আইডিয়া দিয়ে এক লক্ষ টাকা জিতে নেয় এ দলটি।
এ ছাড়া ’পারসোনালাইজড টিচিং অ্যাসিসট্যান্ড ফর কোডিং’ আইডিয়াটি ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান করতে পারায় ‘অনারেবল মেনশন’ স্বীকৃতি পায় টিম ‘কোডমেন্টর’।
হ্যাকাথনের ফাইনালে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন-হগার্থ ওয়ার্ল্ডওয়াইডের (বাংলাদেশ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ ইলাহি, বিকাশ লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট (সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট) নাবিল আহমেদ লিপন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট (রিসার্চ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) শুভ্র সরকার এবং ভিভাসফট লিমিটেডের মেশিন লার্নিং কনসাল্টেন্ট আমিনুল ইসলাম।
ভিভাসফট এআই হ্যাকাথনটি আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশের তরুণ এআই প্রতিভাদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য। তাদের দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং যুগান্তকারী ধারণাগুলো প্রদর্শন করাই এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য বলে জানান ভিভাসফট লিমিটেডের কো-ফাউন্ডার শাফকাত আসিফ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রযুক্তিখাতকে বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যেতে এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহিত করতে ভিভাসফট লিমিটেড প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘ভিভাসফট এআই হ্যাকাথন ২০২৫’ আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এআই প্রফেশনালসদের কাছ থেকে সাড়া পেলে ভিভাসফট প্রতিবছর এ ধরনের এআই হ্যাকাথন আয়োজন করবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন চলে এআই হ্যাকাথনের। ৩৭৮টি আবেদন থেকে প্রাথমিকভাবে ৩৫টি টিমকে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য বাছাই করা হয়। যেখানে অংশ নেন এআই পেশাদার এবং ডেভেলপার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সদ্য স্নাতক, স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক দল এবং প্রযুক্তিবিদরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।