চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সরকার। তবে এ বিষয়ে কাজ চলছে। যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত হতে পারে।
মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানিয়েছেন, এইচএসসির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কাজ চলছে। সিদ্ধান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে জানানো হবে।
এর আগে গত বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আগামী সোম-মঙ্গলবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। তবে কেউ বিশেষ কারণে পরীক্ষা দিতে না পারলে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে।
তিনি আরো বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অনেকে পরীক্ষা না নিয়ে আগের পরীক্ষার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রস্তাব করছেন। এ বিষয়কেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। এটি বিকল্প হতে পারে। তবে পরীক্ষা ছাড়া সার্টিফিকেট দিলে তারা যখন চাকরি নিতে যাবে, তখন তাদের বলা হবে, ও তোমরা ২০২০ সালের পরীক্ষা ছাড়া পাস করা ব্যাচ। এমন পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেজন্য আমরা পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, কবে থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু করা হবে, তা আগামী সপ্তাহের সোমবার অথবা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হবে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, এবার সব বিষয়ের পরীক্ষা না নিয়ে মৌলিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। কোন কোন বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে, সেটি আগামী সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে।
এদিকে পরীক্ষা অনিশ্চিত থাকায় প্রায় ১২ লাখ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। তাদের প্রস্তুতিতে চরম বিঘ্ন ঘটেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা শুরুর মাত্র ৯ দিন তা স্থগিত করে দেয়া হয়। গত ১ এপ্রিল বাংলা (অবশ্যিক) প্রথম পত্র দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো। ঘোষিত সময়সূচি অনুসারে ৪ মে পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা এরপর ৫ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়ে ১৩ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল। পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করার পর এখন সব কিছুই অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
পরীক্ষা স্থগিত করার আগে এ পরীক্ষার কেন্দ্রসচিবদের মতবিনিময়, প্রবেশপত্র বিতরণ ও উত্তরপত্র বিতরণও স্থগিত করা হয়। পরীক্ষা নেয়ার উত্তরপত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জাম বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করে ২৩ মার্চ নোটিশ জারি করে সবগুলো শিক্ষা বোর্ড। পরীক্ষা নেওয়ার অত্যবশকীয় এসব সরঞ্জাম ২২ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত বিতরণের কথা ছিল।তার আগে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণ কার্যক্রম আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সম্পর্ক রয়েছে। তাই সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে ঢুকতে এবং বের হওয়ার সময় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়াতে হবে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, জেড আকৃতিতে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে পরীক্ষা নিলে কতগুলো শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন হতে পারে সে ব্যাপারে কাজ করছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এতে একটি কক্ষে প্রথম বেঞ্চে দুইজন শিক্ষার্থী বসলে দ্বিতীয় বেঞ্চে বসবে একজন। এ জন্য প্রতিটি কেন্দ্রের অধীনে আবার একাধিক উপকেন্দ্রও নির্ধারণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডগুলোও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।