স্পোর্টস ডেস্ক : মাঝে আসলে কিছুই ছিলনা। ব্যাকআপ প্লেয়ার তৈরীর প্লাটফর্মটাই তেমন সচল ছিল না। একাডেমি, হাই পারফরমেন্স ইউনিট আর ‘এ’ দলের কার্যক্রম, তাদের ভালমত পরিচর্যা, অনুশীলনের ব্যবস্থা এবং নিয়মিত দেশে ও বিদেশে খেলার ব্যবস্থাই প্রায় বন্ধ ছিল।
অনেক দেরিতে হলেও সে কাজ আবার চালু হয়েছে। এ দল, এইচপি আর ইমার্জিং দল গড়া, তাদের অনুশীলনের সুযোগ করে দেয়া এবং দেশি ও বিদেশি দলের সাথে খেলার ব্যবস্থা-সবই হয়েছে। হচ্ছেও।
এই তো বিসিবি একাদশ ভারতে খেলে আসলো। হাই পারফরমেন্স ইউনিটও ঘরের মাঠে আফগান ‘এ’ দল আর শ্রীলঙ্কার সাথে দীর্ঘ পরিসরের এবং সীমিত পরিসরের ম্যাচ খেলেছে। আর এখন দেশের মাটিতে হাই পারফরমেন্স ইউনিট বাংলাদেশ ইমার্জিং নাম নিয়ে খেলছে শ্রীলঙ্কার ইমার্জিং দলের বিপক্ষে।
কিন্তু যে আশা নিয়ে হাই পারফরমেন্স ইউনিটের তরুণদের বিদেশি কোচসহ একটা পরিপূর্ণ কোচিং স্টাফের পরিচর্যায় বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে, তারা কি তার প্রতিদান দিতে পারছেন?
সাইফ হাসান, নাইম শেখ, ইয়াসির আরাফাত রাব্বি, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন ধ্রুব, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, নাইম হাসান আর আরাফাত মিশুদের যতটা সম্ভাবনার প্রতীক বলে ভাবা হচ্ছে, আসলে কি তারা অমন প্রতিভাবান?
বলা হচ্ছে এরাই তামিম, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ আর মাশরাফির জায়গা নেবেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তাদের কি সেই পর্যাপ্ত মেধা, সামর্থ্য, প্রজ্ঞা আছে? থাকলে নিশ্চয়ই ঘরের মাঠে আফগানিস্তান আর লঙ্কান তরুণদের বিপক্ষে খাবি খেতেন না। তাদের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স দেখে কিন্তু তা মনে হচ্ছে না।
তাদের কোচিং যিনি করাচ্ছেন, সেই সায়মন হেলমট কি ভাবছেন ঐ সব তরুণদের নিয়ে? এই তো ১৮ আগস্ট বিকেএসপিতে লঙ্কান ইমার্জিং দলের কাছে ১৮৬ রানের পাহাড় সমান ব্যবধানে হেরেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সাইফ হাসান ছাড়া একজন ব্যাটসম্যানও রান করতে পারেনি। ইনিংস শেষ হয়েছে মোটে ১১৮ রানে।
প্রায় একই জলবায়ু, আবহাওয়া ও অভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা, প্রায় একই ধরনের মাঠ ও উইকেটে খেলে বড় হওয়া-সেই লঙ্কানদের কাছে কেন এতটা নাস্তানাবুদ হওয়া? কেনইবা এতটুকু প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে না পারা?
তা নিয়ে মুখ খুলেছেন হাই পারফরমেন্স ইউনিটের কোচ সায়মন হেলমট। ছেলেদের পারফরম্যান্স দেখে যারপরনাই হতাশ ও অসন্তুষ্ট কোচ। হেলমট বলেন, ‘ছেলেদের অ্যাপ্রোচ দেখে আমি খুব হতাশ। খুবই হতাশার যে আমরা শেষ ১০ ওভার ব্যাটিং করতে পারিনি। যেটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
হেলমটের ব্যাখ্যা, ব্যাটসম্যানরা দলকে শক্ত ভিত গড়ে দিতে পারেনি। বিকেএসপিতে ৩০০+ রান তাড়া করে জেতা খুব সহজ না হলেও হেলমটের ধারণা, সেটা করাই যায়। কিন্তু এইচপির ছেলেরা তা পারেনি।
এদিকে এমন দুর্দিনে এ তরুণদের চাঙ্গা করতে এগিয়ে এসেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। জাতীয় ওয়ানডে অধিনায়ক এর মধ্যে এইচপির ক্রিকেটারদের সাথে বসেছিলেন। তাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা-উজ্জীবিত করার পাশাপাশি ভাল খেলার টিপসও দিয়েছেন।
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমিতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে এ তথ্য জানিয়ে হেলমট বলেন, ‘আমাদের ছেলেদের কাল একটি খুব ভাল সেশন কেটেছে। আমরা খুব ভাল কথাবার্তা বলেছি গতকাল। সেখানে ছেলেদের সাথে কথা বলতে মাশরাফিসহ কজন জাতীয় তারকাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রায় আধ ঘন্টা সময় এইচপির ক্রিকেটারদের সাথে সময় কাটান মাশরাফি। মাশরাফি ছেলেদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, কোয়ালিটি প্রতিপক্ষের সাথে চাপের মুখে কিভাবে নিজেকে ঠিক রেখে স্বাভাবিক পারফরম করা যায়।’
হেলমটের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, হাই পারফরমেন্স ইউনিটের কজন আগেই জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। আপনি কি তাদের মধ্যে সত্যিকার ভাল খেলার তাগিদ এবং সদিচ্ছা দেখেন?
এইচপি কোচ বলেন, ‘আমি আরও ধারাবাহিকতা দেখতে চাই। আপনি জানেন, জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়তে হলে আপনাকে রান করতে হবে। উইকেট শিকারের পাশাপাশি ক্যাচও ধরতে হবে।’
জয়ের দরকার আছে। এবং জেতাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একথা স্বীকার করলেও হেলমট মনে করেন, এইচপির তরুণদের সবার আগে পারফরম করার কথাই বেশি ভাবা উচিত। তার ভাষায়, ‘তরুনদের শুধু জাতীয় দলে জায়গা পাবার কথা ভাবলেই চলবে না। জায়গামত পারফরম করার কথাও ভাবতে হবে। জয়ের চেয়ে এখন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়টা বেশি দরকার। তাদের সবার আগে জানা ও শেখা উচিত চাপের মুখে কিভাবে পারফরম করতে হয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।