আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাদের অনেকের অবস্থা এমন ছিল যে একাও হাঁটতে পারতেন না। কিন্তু এমন একটি জায়গার সন্ধান পেলেন তারা যে জীবনটাই যেন বদলে গেলো। ওখানে প্রবেশের পর তারা হাতের লাঠি ছুঁড়ে ফেলেন আর ছুটে বেড়াতে শুরু করেন। এটা দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে বয়স্ক মানুষদের ডিসকোর কেরামতি। অনন্য এই আয়োজনের কথা তুলে এনেছে বিবিসি।
জানলে অবাক হবেন, এই ডিসকো কেবলমাত্র তাদের জন্যে যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি। এমন প্রতিষ্ঠান এটাই প্রথম যা স্থানীয় সরকার পরিচালনা করে। এই বয়সীদের একাকীত্ব আর স্বাস্থ্য সমস্যা কমাতে আয়োজনটি দারুণ কাজে দিচ্ছে।
একজন বলছেন, সাধারণত বেশ কিছু নিয়ম বা মুদ্রা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে কোনো নিয়ম নেই। আপনি যেভাবে চান সেভাবেই নাচতে পারেন।
ডিসকোতে আসা এক নারী বলেন, আমার জন্যে এটা একটা ও’ষুধ। কারণ এখানে আসার পর থেকে আমার শরীর সুস্থ হয়ে ওঠছে আর আমর চেহারার ঔজ্জ্বলতাও বাড়ছে।
আরেকজন বলছেন, আমার পায়ে ও পিঠে ব্যথা রয়েছে। কিন্তু যখন মিউজিক শুরু হয়, আমার শরীর যেন তার সাথে মগ্ন হয়ে যায়। আর আমার সব ব্যথা-বেদনা হারিয়ে যায়। পরের দুই-তিন দিন আমি পুরো চাঙ্গা হয়ে থাকি। আমি এমনকি আমার ওষুধ আর সাপ্লিমেন্টগুলোও বাদ দিয়েছি।
সেখানে মুখোশ পরা পার্টিও চলে। ভিডিওতে যে মুখোশ পার্টি দেখছেন তার নাম ‘গ্লো-ইন-দ্য-ডার্ক’। বয়স্করা প্রথমে ঠিক করেন যে তারা কি সাজতে চান। সাজগোজ শেষ হলে তারা নাচতে যাবেন।
অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
এ ব্যবস্থা দেখভালকারীদের একজন বলছেন, যখন বয়স্ক মানুষরা একাকী হন, তখন তারা ক্লান্তি বোধ করেন। কিন্তু তারা যদি এখানে আসেন তাহলে তারা বন্ধুত্ব করতে পারেন এবং ভালো কিছু হতে পারেন।
ডিসকোতে আসা একজন বলেন, এখানে আসার আগে বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে আমি বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। ক্লাবটি চালু হওয়ার পর থেকে আমি সব সময় এখানে আসি। এখানে অনেকের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়েছে। এমনকি এখানে আমি একজন বান্ধবীও খুঁজে পেয়েছি। এর মতো কোনো জায়গা বিশ্বের আর কোথাও নেই। আমার আশা সারা বিশ্বে এটা ছড়িয়ে পড়বে। যাতে প্রত্যেক বয়স্ক মানুষ আনন্দিত হতে পারেন আর নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।