বিনোদন ডেস্ক : গতকাল পর্যন্ত বিশ্বের ২১০টি দেশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সারা বিশ্বে মোট মারা গেছেন ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৪ জন, মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৯৬ জন। এই পরিস্থিতিতে দেশের শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা বিদেশে অবস্থান করছেন। তাদের কেউ কেউ করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশেও রয়েছে। বিদেশে বসবাস করা বেশ কজন তারকাকে নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।
বিপাশা হায়াত
অভিনয়শিল্পী, নাট্যকার ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করলেও এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রয়েছেন তিনি। একটি কাজে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার তাণ্ডব বেড়ে যাওয়ায় আর দেশে ফিরতে পারেননি এই অভিনেত্রী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত দেশ। এ পরিস্থিতিতে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনের একটি বাসায় দিন কাটছে বিপাশার। এ অবস্থায় নিজেকে খুব ভালোভাবে মোটিভেট করার চেষ্টা করছেন তিনি। কারণ শুধু নিউ ইয়র্ক নয়, পুরো পৃথিবী একই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
সুজানা জাফর
মডেল-অভিনেত্রী সুজানা জাফর। সাধারণত অভিনয় ও ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি। কিন্তু গত মাসের শেষের দিকে ব্যবসায়িক কাজে দুবাই গিয়েছিলেন সুজানা। করোনা প্রকোপের কারণে দেশটিতে সবরকম ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি। ফলে দুবাইতেই গৃহবন্দি সময় কাটছে তার। এই দুঃসময়ে যতটা সম্ভব সেখানে নিজেকে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
রুমানা খান
এক সময়ের দর্শকপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী রুমানা খান। বিজ্ঞাপনচিত্র ও টিভি নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। প্রশংসাও পেয়েছেন। এর মধ্যে ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১১ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ‘সেরা পার্শ্ব অভিনয়শিল্পী’ নির্বাচিত হন রুমানা। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে শোবিজ অঙ্গন থেকে দূরে রয়েছেন এই অভিনেত্রী। ২০১৫ সালে বিয়ের পর স্বামী এলিন রহমানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন রুমানা। করোনার এই সংকটকালে স্বামী-সন্তান নিয়ে সেখানেই রয়েছেন এই অভিনেত্রী।
টনি ডায়েস
মডেল-অভিনেতা ও নির্মাতা টনি ডায়েস। ১৯৮৯ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে যোগ দেয়ার মধ্য দিয়ে তার অভিনয় জীবনের পথচলা শুরু। ১৯৯৪ সালে টেলিভিশন নাটকে অভিষেক হয় তার। অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক-টেলিফিল্ম উপহার দিয়েছেন তিনি। এছাড়া কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ২০০৮ সালের শেষের দিকে স্ত্রী পিয়া ডায়েস ও মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তারপর থেকে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন টনি ডায়েস।
শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি
২০০২ সালে আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় পঞ্চম রানার আপ নির্বাচিত হন তিন্নি। তারপর মডেলিংয়ের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৪ সালে মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী নির্মিত ধারাবাহিক ‘৬৯’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর অসংখ্য জনপ্রিয় টেলিভিশন নাটক দর্শকদের উপহার দেন এই অভিনেত্রী। ‘ডুবসাঁতার’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’ চলচ্চিত্রগুলোতে অভিনয় করেন। বর্তমানে কন্যা ওয়ারিশাকে নিয়ে কানাডায় বসবাস করছেন তিন্নি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো কানাডায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে। তবে মেয়েকে নিয়ে নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
রিচি সোলায়মান
১৯৮৯ সালে বিটিভিতে প্রচারিত ‘ইতি আমার বোন’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয়ে আসেন রিচি সোলায়মান। তবে ১৯৯৮ সালে ‘বেলা ও বেলা’ নাটকের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন এই অভিনেত্রী। তারপর অনেক জনপ্রিয় নাটক-টেলিফিল্ম উপহার দিয়েছেন। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও তার খ্যাতি রয়েছে। ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা রাসেকুর রহমান মালিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রিচি। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেও স্থায়ী হননি। তবে ২০১৬ সালে হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান রিচি। এরপর থেকে সংসার নিয়েই বেশি ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর অতিমাত্রায় করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে এই অভিনেত্রী তার স্বামী-সন্তান নিয়ে এখনো সুস্থ রয়েছেন।
মোজেজা আশরাফ মোনালিসা
মাত্র দশ বছর বয়েসে নাচ ও মডেলিংয়ের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পা রাখেন মোজেজা আশরাফ মোনালিসা। ২০০০ সালে মিস ফটোজেনিক খেতাব লাভ করেন তিনি। তারিক আনাম খান নির্দেশিত ফেয়ার অ্যান্ড লাভলির বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে প্রথম সবার নজর কাড়েন মোনালিসা। তারপর মডেলিংয়ের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। অনেক দর্শকপ্রিয় নাটক-টেলিফিল্ম উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী ফাইয়াজ শরীফ ফাসবির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এই অভিনেত্রী।
ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী
দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী। মডেলিং, অভিনয় সবখানেই দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি। শিমুলের সঙ্গে শ্রাবন্তীর হেনোলাক্সের বিজ্ঞাপনের কথা আজও মানুষ ভুলেনি। ‘রং নাম্বার’ এবং ‘ব্যাচেলর’ সিনেমার মাধ্যমেও সাড়া ফেলেছিলেন এই অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকাবস্থায় কণ্ঠশিল্পী পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে প্রেমে জড়ান শ্রাবন্তী। সেই সম্পর্ক একসময় বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ এ পথচলায় ছন্দপতন ঘটে। আলাদা হয়ে যান তারা। এই বিচ্ছেদের পর শোবিজ থেকে দূরে সরে যান শ্রাবন্তী।
দীর্ঘদিন একা বসবাস করে ২০১০ সালের নভেম্বরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খোরশেদ আলমের সঙ্গে সংসার পাতেন শ্রাবন্তী। এরপর স্বামীর সঙ্গে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। এ সংসারে শ্রাবন্তীর দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এ সংসারেও ভাঙন ধরেছে। মহামারি করোনার এই দুর্দিনে দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে রয়েছেন। তারা সবাই সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে অনেক কঠিন সময় পার করছেন বলে জানিয়েছেন শ্রাবন্তী।
এছাড়াও অভিনেত্রী নাফিজা জাহান, অভিনয়শিল্পী দম্পতি হিল্লোল-নওশীন, অভিনেত্রী ডলি জহুর, প্রিয়াংকা অগ্নিলা ইকবাল, আমব্রিনাসহ অনেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



