রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদেক এগ্রোর সবচেয়ে বড় গরু রেড ব্রাহামা রোজো (১২৫০ কেজি) ও গ্রে ব্রাহামা টাইগার (১১৪৫ কেজি) বিক্রি হয়ে গেছে। ‘রোজো’ ৩৫ লাখ ও টাইগার ২৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সাদেক এগ্রোর কর্মকর্তা শাহারিয়ার পরশ বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তাদের খামারে বিক্রির উপযুক্ত আরও ১ হাজার ৬০০ গরু রয়েছে। অনলাইনে প্রচুর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর ছাড়াও দেশের আরও ১০টি শাখায় তাদের গরু বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৫০ থেকে ৩০০ কেজি ওজনের গরু ৩৭৫ টাকা কেজি, ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি ওজনের গরু ৪২৫ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫০০ কেজির ওপর যে গরুগুলো আছে সেগুলো আলাদাভাবে বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ থেকে ৯০০ এবং হাজার কেজির গরু দেখতে কতটা সুন্দর তার ওপর দাম নির্ভর করে। খামারের সবচেয়ে বড় গরু রেড ব্রাহামা রোজো, গ্রে ব্রাহামা টাইগার ও ব্ল্যাক ব্রাহামা দিলবার প্রায় কাছাকাছি ওজনের।
অনলাইনে এ পর্যন্ত কত গরু বিক্রি হয়েছে, জানতে চাইলে শাহারিয়ার পরশ বলেন, বিষয়টি এখন বলা মুশকিল। কারণ আমাদের মোহাম্মদপুর প্রধান শাখা ছাড়াও আরও ১০টি শাখায় গরু বিক্রি হচ্ছে। সবগুলোর হিসাব পাওয়ার পর বলা যাবে।
তিনি বলেন, গত তিন-চার বছর ধরে আমরা অনলাইনে খামার থেকেই গরু বিক্রি করছি। আমাদের খামারের গরু কখনও বাজারে নেয়া হয় না। অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার অনলাইনে ভালো সাড়া পড়েছে।
খামারের সবচেয়ে বড় গরু রেড ব্রাহামা রোজোর কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ডেইরি ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (বিডিডিএফ) সাধারণ সম্পাদক ও সাদেক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন বলেন, রোজোকে ছোট থাকতে এই খামারে এনেছিলাম। যখন ওকে খামারে আনা হয় তখন ওজন ছিল ৩৫০ কেজি। তিন বছর ধরে ওকে আমরা লালন-পালন করছি। এখন ১ হাজার ২৫০ কেজি ওজন হয়েছে। রোজো ৩৫ লাখ ও টাইগার ২৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ঈদের আগের দিন ডেলিভারি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার কোরবানি কম হবে। তাই বলে একেবারে হতাশ হওয়ার মতো অবস্থা হবে না। প্রতি বছর দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ হজে যান। এবার তারা যেতে পারছেন না। তারা এবার দেশেই কোরবানি করবেন। এছাড়া বিভিন্ন এনজিও এবার কোরবানির গরু কিনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাংস বিতরণ করবে। সেখানেও একটি ভালো অংশ কোরবানি হবে। তবে ৩-৪ লাখ টাকার গরুর চাহিদা কমে যাবে এবং তুললনামূলক বিক্রি কম হবে।
ইমরান বলেন, আমাদের এখানে তিন ধরনের গরু আছে। বড় গরুগুলোর জন্য মাসে সব মিলিয়ে ১২-১৩ হাজার, মাঝারি ১০-১১ হাজার ও ছোটগুলোর জন্য ৫-৬ হাজার টাকা খরচ পড়ে। দেশের সবচেয়ে বড় গরুগুলোর ওজন নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথাও বলেন। তবে যে যা বলুক, এ পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৫০ কেজি ওজনের গরু পাওয়া গেছে।
ব্রাহামার জাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্রাহামা আমাদের উপমহাদেশেরই জাত। ১১০ বছর আগে আমাদের এই অঞ্চলেরই তিনটি গরু আমেরিকানরা নিয়ে গিয়ে ‘ব্রাহামা’ জাত তৈরি করেছে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ব্রাহামা জাতের গরু খুব ভালো বাড়ে। আমরা এখন ব্রাহামা ব্রিড করছি। দেশের অনেক খামারিই এখন লোকাল ব্রাহামা করছে। সেগুলোর ফলাফলও ভালো। লোকাল ব্রাহামার বৃদ্ধিও ভালো এবং সেগুলো ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, এবার দেশের অর্থনীতি ভালো না। কোরবানি হবে তবে আশানুরূপ নয়। তাছাড়া ট্রাক ভাড়ার যে অবস্থা গ্রামের ছোট খামারিরা হাটে গরুই আনতে পারবে না। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, হাটে গরু আনতে গেলে পথে-ঘাটে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব সমস্যা পার হয়ে হাটে আসাও কঠিন বিষয়।
তিনি বলেন, এবার বড় গরু কোরবানি কম হবে। ৩-৪ লাখ টাকা দিয়ে যারা বড় গরু কোরবানি দিতেন, তারা এবার ১ লাখ টাকার মধ্যে কোরবানি দেবেন। অন্য বছর যারা এককভাবে একটা গরু কোরবানি দিতেন, এবার অনেকে ভাগে কোরবানি দেবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।