আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মানুষ নিজেদের যোগাযোগের সুবিধার জন্য প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন খরোস্রোতা নদীর উপর দিয়ে বানিয়েছে ব্রিজ বা সেতু। আবার দেশের বিখ্যাত সব ব্যাক্তিদের নামে নামকরণ করা হয়েছে সেসব ব্রিজের। বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু সেতু, লালন শাহ সেতু প্রভৃতি তার প্রমাণ।
কিন্তু কোন ব্রিজের নাম যদি হয় শয়তানের ব্রিজ? স্বয়ং শয়তান নিজেই যদি সেই ব্রিজ তৈরি করে থাকে? পর্তুগালের মন্টেলেগ্রি এবং ভেইরা ডি মিনহোর সীমানায় রয়েছে এমন একটি ব্রিজ। যাকে স্থানীয়রা ডাকে ‘ডেভিলস ব্রিজ’ অর্থাৎ শয়তানের ব্রিজ নামে। ব্রিজটি নিয়ে স্থানীয় মানুষের মাঝে কাহিনী নানা প্রচলিত আছে। তাই সচারচর রাত হলে স্থানীয়রা ব্রিজটির কাছে যায়না।
মধ্যযুগীয় এই ব্রিজটি খরস্রোতা রাবাগাও নদীর উপর পাথর দিয়ে তৈরি।
প্রচলিত আছে, এক রাতে নাকি এক ডাকাত এ পাহাড়ি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পালাচ্ছিল। রাবাগাও নদীর কাছে এসে সে আটকে যায়।
নদী পার হওয়া তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। ডাকাতের ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস ছিল না। সে কারণে, সে শয়তানের আরাধনা শুরু করে।
সেই রাতেই নাকি প্রচণ্ড প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরু হয়ে যায়, আর তার মধ্যেই ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে শয়তান এসে হাজির হয় তার সামনে।
ভক্তের অনুরোধ মেনে রাবাগাও নদীর উপর ব্রিজ বানিয়ে দেয় শয়তান। বিনিময়ে মৃত্যুর পর তার আত্মা শয়তানকে অর্পণ করার প্রতিশ্রুতি দেয় সে।
পিছনে না তাকিয়ে ছুটে ব্রিজ পার করে চলে যায় সে। সে রাতের জন্য প্রাণেও বেঁচে যায়। কিন্তু এর কয়েক বছর পর তাঁর খুব কঠিন অসুখ করে। মৃত্যুভয় শুরু হয়। আর তখনই মনে পড়ে যায় শয়তানকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা।
অতীতের সেই দিন নিয়ে আফসোস শুরু হয় তার। খুব শক্তিশালী এক যাজকের কাছে গিয়ে সবটা বলে। পরদিন রাতে রাবাগাও নদীর কাছে গিয়ে এক ভিখারি সেজে ওই ডাকাতের কথামতো ঠিক একই ভাবে শয়তানের আরাধনা শুরু করেন ওই যাজক।
শয়তান হাজির হয়। ভিখারি রূপী যাজকের অনুরোধ মেনে আত্মার অধিকার পাওয়ায় শর্তে নদীর উপর ওই একই জায়গায় ফের ব্রিজ বানাতে শুরু করে, আর ঠিক তখনই পবিত্র জল শয়তানের উপর ছিটিয়ে মন্ত্রপাঠ শুরু করেন যাজক। উধাও হয়ে যায় শয়তান। কিন্তু সেই থেকে ব্রিজটি থেকে গিয়েছে।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, যেসব মহিলাদের সন্তানধারণে কোনও সমস্যা রয়েছে, বা যাঁরা অন্তঃসত্ত্বা, যাঁদের সন্তানের কোনও সমস্যার কথা চিকিৎসক জানিয়েছেন, একমাত্র তাঁরাই মাঝরাতে এই ব্রিজে আসেন।
এটা নিয়েও প্রচলিত রয়েছে যে, তাঁরা নাকি স্বামীর সঙ্গে একটি দড়ি আর একটি গ্লাস নিয়ে ব্রিজের মাঝামাঝি বসেন আর অপেক্ষা করেন। অপেক্ষা করার সময় ওই ব্রিজ দিয়ে প্রথম ব্যক্তি যিনি হেঁটে যাবেন, তিনিই ওই গ্লাসে দড়ি বেঁধে নদীর জল তুলে মহিলার গর্ভে ছড়িয়ে দেবেন। প্রচলিত বিশ্বাস, সন্তান সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে এতেই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।