অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে, আমি আজ ব্যাংকার হওয়ার পথে। ব্যর্থ হতে হতে আত্মবিশ্বাস যখন তলানিতে নেমে এসেছিল তখনো হাল ছেড়ে দেই নি। শুধুই নিজের অজ্ঞতাকে দায়ী করেছিলাম।
অফিস শেষ করতে করতে এমন ও সময় ছিল রাত ১০টা, কখনো কখনো তার ও বা বেশি সময় পর্যন্ত অফিসে কাটিয়েছি। আমাদের অফিসে বৃহস্পতিবার মানেই ছিল অফিস ত্যাগের সময় রাত ১০টা। আর আমার ব্যাংক পরীক্ষাগুলো ও হতো তার পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার। অফিস শেষ করে সরাসরি ঢাকার বাস ধরে, সারারাত জার্নি করে পরদিন ভোরে ঢাকায় পৌঁছতাম।
তারপর পরীক্ষা দিয়ে আবার বিকেলে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিতাম, পৌঁছতাম রাত ১১টা ১২টায়। কোনদিন বা ভোর রাতে, একবার ভোর ৪ টায় নেমে বাসায় যাবার পথে ছিনতাই কারীর মুখোমুখি হয়ে ছুরিকাঘাত হতে হয়েছে। তারপর ও হাল ছাড়ি নি।
এর মধ্যে বিয়ের পিঁড়িতে বসি। এক স্কুল শিক্ষিকাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে যথেষ্ট সৌভাগ্যবান ছিলাম নচেৎ জীবনে হয়তো আর যাই হই সরকারি ব্যাংকের ব্যাংকার হতে পারতাম না। পেশাগত কারণে দুইজন দুই যায়গায় থাকতাম। সপ্তাহের যে দিনটা তাকে দেবার কথা ছিলো, সেটাও ব্যাংকার হওয়ার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলাম। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ার কারণে নানান দায়িত্ব নিজের কাঁধে এসে পড়তো।
তার উপর বাবার ছিল ক্যান্সার, ভগবান যেনো এ ব্যাধি কাউকে না দেয়। আমার ঢাকা যাওয়া মানেই ছিল ব্যাংকের পরীক্ষা। আত্মীয়স্বজনরা আমার ঢাকা যাওয়া নিয়ে হাসি ঠাট্টা করতো কিন্তু হাল ছাড়ি নি।
ব্যাংকার হতে চলার পিছনের ইতিহাস লিখতে গেলে আমি হয়তো একটা ছোট গল্প লিখতে পারবো। শুধু এ টুকুই বলবো আমার মতো এত অমেধাবী যখন এতো ঝড়-ঝঞ্ঝা পাড়ি দিয়ে, সংসার, অফিস সামলে সফল হয়েছি, আপনাদের সফলতা ও অনিবার্য। শুধু চাই হার না মানার মানসিকতা এবং চেষ্টা।
এই স্ট্যাটাস দিতে আমাকে প্রায় ৭ বছর সময় লেগেছিল। আপনাদের আরো অনেক কম সময় লাগবে। গ্রুপের সবার প্রতি শুধুই কৃতজ্ঞতা, অনেক তোমার নিয়েছি গো, অনেক পড়েছি। [সৈকত পাল: ফেসবুক থেকে]
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।