জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাল সনদধারী ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে নোটিশ ও তাদের উত্তোলনকৃত বেতনের সকল অর্থ অবৈধভাবে গ্রহণকৃত বেতন ভাতা, সরকারি কোষাগারে ফেরতের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। এর মধ্যে উপজেলার দত্তের বাজার ইউনিয়ন ও উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষক জাল সনদধারী।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং- ৩৭.০০.০০০০.০৮৭.০৯৯.০০৩.১০২ তারিখ ঃ ১৮/০৫/২০২৩ ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের শিক্ষা কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ২২/০৬/২০২৩ পত্রের আলোকে উপজেলার দত্তের বাজার ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক মোসাম্মৎ সালমা আক্তার, সহকারী শিক্ষক নাছির উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক মোশারফ হোসেন, সহকারী শিক্ষক শাকিলা মোসাম্মৎ নিলু, সহকারী শিক্ষক রাজিউল হক, সহকারী শিক্ষক দ্বীন ইসলাম, বেগম রাবেয়া মেমোরিয়াল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সহকারী মৌলভী সফিকুল ইসলাম, আঠারো দানা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি মৌলভী ফাতেমা আক্তার, সাহেব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী মৌলভী আছমা খাতুন, চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১১ শিক্ষক জাল সনদে দীর্ঘদিন যাবত চাকরি করে বেতন উত্তোলন করেছেন।
সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের সনদ যাচাই-বাছাই করে জাল সনদধারী শিক্ষক-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের বিরুদ্ধে বেতনের সকল টাকা আদায়যোগ্য বলে নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় উপজেলা দুর্নীতিবাজ একটি চক্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে অভিযুক্ত শিক্ষকদের স্বপদে বহাল রাখার জন্য উপর মহলে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে প্রেরিত চিঠিতে জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমপিও বন্ধ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত করা, অবৈধভাবে গ্রহণকৃত বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, অবসর গ্রহণকারীদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, জাল সনদধারীদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক ফৌজদারি অপরাধের মামলা দায়ের, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সাতটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দত্তেরবাজার ইউনিয়ন স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের যে ৭ জন শিক্ষক ছিলেন এর মধ্যে (নন এমপিওভূক্ত কলেজে) ২ জন প্রভাষক সোহেল রানা ও আব্দুর রাজ্জাক ইতিমধ্যেই চাকুরী ছেড়ে চলে গেছে তারা প্রায় ৮ বছর চাকুরী করার পর এখন এই নোটিশ পান। কেন চলে গেছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, নোটিশ পাওয়ার পর যারা আছে তারা হাইকোর্টে রিট করেছে স্বপদে থাকার জন্য। তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের নোটিশের জবাব তারা দিবেন।
আঠারদানা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খলিলুর রহমানের ০১৭৮১৪০০৭৫০ এই নাম্বারে ফোন করে তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম গত বুধবার দুপুরে শিক্ষা কর্মকর্তার দফতরে বলেন, বিষয়টি ময়মনসিংহ জেলার স্মারক নং- জেশিঅ/ময়মন/২০২৩-৭৩৭ জেলা শিক্ষা অফিসার মোহসিনা খাতুনের স্বাক্ষরিত ২৫ জুনের চিঠি পেয়ে গত ৩ জুলাই অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবহিত করা হয়েছে। তবে গত ১৭ দিনেও জাল সনদধারী অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে কোন জবাব পাইনি। তিনি আরও বলেন, উনারা মনে হয় উপরের বিভিন্ন দফতরে দৌড়াদৌড়ি করতেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।