জুমবাংলা ডেস্ক : ডেভেলপার কোম্পানি গগন বিল্ডার্স ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হামিম হোসাইনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন জমির মালিক থেকে ফ্ল্যাট ক্রেতা সবাই।
জমি নিয়ে একদিকে যেমন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি করে দিচ্ছেন না, অন্যদিকে একই ফ্ল্যাট একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, খিলগাঁওয়ের ‘এ’ ব্লকের ২২নং সড়কের ৭৬৫ নম্বর প্লটে ৭ তলা ভবন নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর হামিম হোসাইন ওই প্লটের মালিক বোরাকী সুলতানা, সোহেল বিন কবীর, মালিহা পারভিন ও শাকিল বিন কবীরের কাছ থেকে আম-মোক্তারনামা গ্রহণ করেন।
জমির মালিক ও হামিম হোসাইনের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল-৩০ মাসের মধ্যে বাড়ি করে হস্তান্তর করা হবে। সে অনুযায়ী, ২০১৮ সালের মে মাসের মধ্যে বাড়ির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।
যে কারণে দারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে জমির মালিক পরিবারগুলো। বাড়ির কাজ সময় মতো সম্পন্ন না করায় হামিম হোসাইনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন (নং ১৬/১৯) জমি মালিক শাকিল বিন কবীর। এতে হামিম হোসাইন ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে জমির মালিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ বিষয়ে খিলগাঁও থানায় ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাধারণ ডায়েরি হয়েছে (নং ১৬৫০)।
চুক্তি অনুযায়ী, বাড়ি করার পর তিনটি ফ্লোরের মালিকানা পাবে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু বাড়ির কাজ শেষ না করেই ফ্লোরগুলো একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন হামিম হোসাইন। জমি মালিকদের সঙ্গে চুক্তির এক মাসের মাথায়ই প্রস্তাবিত ‘গগন মমতাজ কবির ভিলা’র ষষ্ঠ তলার ১ হাজার ২শ স্কয়ার ফিট আয়তনের ফ্লোর ৪৮ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তিপত্র করেন মো. আব্দুল্লাহর সঙ্গে।
এক বছর মেয়াদি বায়না দলিলের মাধ্যমে ৪৫ লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহণ করেন এই ক্রেতার কাছ থেকে। এরপর তিনি ২০১৮ সালের ৬ জুন একই ফ্লোর বায়না দলিলের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেন আসাদুজ্জামান খোকনের কাছে।
তার কাছ থেকে ২৬ লাখ টাকা অগ্রিম গ্রহণ করেন। ২০২১ সালের ৩ জুন আকেটি বায়না দলিলের মাধ্যমে ৪৮ লাখ টাকায় একই ফ্লোর বিক্রি করেন মো. শহিদুর রহমানের কাছে। তার কাছ থেকে ৪৫ ?লাখ টাকা অগ্রিম নেন হামিম।
এভাবে একাধিক ব্যক্তির কাছে একই ফ্ল্যাট বিক্রি করে ভবনের কাজ অসমাপ্ত রেখেই লাপাত্তা হামিম হোসাইন। চুক্তিপত্রে ও বায়না দলিলে তিনি মৌচাকের ফরচুন শপিংমলের যে অফিসের ঠিকানা উল্লেখ করেছেন সেখানে এখন গগন বিল্ডার্সের অফিস নেই। তার ব্যক্তিগত ফোন নম্বরটিও বন্ধ।
হামিম হোসাইনের প্রতারণার বিষয়ে মো. আব্দুল্লাহ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট আমাকে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু সময় পার হওয়ার পরও ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। এর মধ্যে আমি জানতে পারি একই ফ্ল্যাট একাধিক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেছেন হামিম হোসাইন। পরে তাকে ফোন করে বিষয়টি সমাধানের জন্য বললে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন হামিম। এ বিষয়ে মুগদা থানায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি মতিঝিলের উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদনও করেছি।
জমি মালিকদের একজন শাকিল বিন কবীর বলেন, সাত বছরের বেশি হয়ে গেলেও আমাদের ভবন বুঝিয়ে দেয়নি হামিম হোসাইন। ভবনের এখনো ২৫ শতাংশের বেশি কাজ বাকি। আমরা আর কতদিন ভাড়া বাসায় থাকব?
তাই ধারদেনা করে যার যার মতো ফ্ল্যাটের কাজ করে নিয়ে ভবনে উঠেছি। অসম্পূর্ণ ভবন হওয়ায় আমরা ভাড়াও দিতে পারছি না।
এর মধ্যে সে একাধিক ব্যক্তির কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করায় সেগুলো নিয়ে প্রতিনিয়ত ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে আমাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।