Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home সিঙ্গেল প্যারেন্ট চ্যালেঞ্জেস:জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    সিঙ্গেল প্যারেন্ট চ্যালেঞ্জেস:জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasJuly 30, 202511 Mins Read
    Advertisement

    রুমানা বেগমের (পরিবর্তিত নাম) চোখে আজো সেই রাতের ভয়াবহ স্মৃতি জ্বলজ্বল করে। সকালবেলাই স্বামীকে হারানোর খবরটা তার জীবনকে মাটি করে দিয়েছিল। তখন তার মেয়ে ফাইজার বয়স মাত্র তিন বছর। হঠাৎ করেই রুমানা নিজেকে খুঁজে পেলেন এক বিশাল দায়িত্বের কাঁধে – একক পিতামাতা হিসেবে। ঢাকার এই ব্যস্ত নগরীতে একাই সংসার চালানো, মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা, আর পাশাপাশি চাকরির চাপ সামলানো… কখনো কখনো মনে হতো শ্বাস নেওয়াটাই কঠিন হয়ে উঠেছে। তার মতোই হাজার হাজার বাংলাদেশি নারী-পুরুষ প্রতিদিন লড়াই করছেন নিঃসঙ্গতা, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে। একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জ শুধু অর্থের নয়, সময়ের নয়, স্নেহ-ভালোবাসা বিলানোর নয়; এটি একটি অন্তহীন মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রমের পথ, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপই জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবিলার এক অধ্যায়। এই গল্প শুধু সংগ্রামের নয়, বরং অদম্য মানবিক শক্তির, যারা সমস্ত বাধা পেরিয়ে সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত এক করে দিচ্ছেন।

    সিঙ্গেল প্যারেন্ট চ্যালেঞ্জেস

    একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জ: জীবনযুদ্ধের বহুমাত্রিক রূপ

    একক পিতামাতা হওয়ার অর্থ শুধুই একজন মা বা বাবা না থাকা নয়। এটি একটি পূর্ণকালীন, সর্বগ্রাসী ভূমিকা, যেখানে একজন মানুষকেই দু’জনের দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই যাত্রা বিশেষভাবে কঠিন, যেখানে যৌথ পরিবারের ঐতিহ্য এখনও প্রবল এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সীমিত। একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জের মাত্রাগুলো গভীরভাবে পরস্পরবদ্ধ:

    • আর্থিক অনিশ্চয়তা ও চাপ: এটিই প্রায়শঃ সবচেয়ে তীব্র চ্যালেঞ্জ। একক আয়ে সংসার চালানো, সন্তানের পড়াশোনা, চিকিৎসা, বাড়ি ভাড়া – সবকিছুর বোঝা একা টানতে হয়। অনেক মা (এবং কিছু ক্ষেত্রে বাবাও) হয়তো আগে কাজ করতেন না, বা কম বেতনে চাকরি করতেন। স্বামী/স্ত্রী হারানোর পর হঠাৎ করেই পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে কাঁধে। চাকরি খোঁজা, বা বর্তমান চাকরিতে টিকে থাকার জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করা অপরিহার্য হয়ে ওঠে, যা সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগকেও সীমিত করে তোলে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়, নারী নেতৃত্বাধীন পরিবারগুলো (যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ একক মা) দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি বা নিচে বসবাস করার ঝুঁকিতে বেশি থাকে।
    • সময়ের অভাব ও অতিরিক্ত দায়িত্ব: দিনে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। এই সময়ের মধ্যে চাকরি/আয়ের কাজ, সন্তানের স্কুল/কলেজে নেওয়া-আনা, গৃহস্থালির কাজ (রান্না, পরিষ্কার, কাপড় ধোয়া), সন্তানের পড়াশোনায় সাহায্য করা, তাদের আবেগীয় চাহিদা মেটানো – সবকিছু সামলানো এক অসম্ভব কসরতের মতো। নিজের জন্য সময়? তা প্রায় অলীক স্বপ্ন। এই অবিরাম দৌড়ঝাঁপ শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি এবং একসময় পুড়িয়ে দেয়।
    • মানসিক চাপ, নিঃসঙ্গতা ও বিষণ্নতা: প্রিয় সঙ্গী হারানোর শোক, ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ, একাকীত্বের গভীর বোধ, এবং সর্বদা নিজের সিদ্ধান্ত ও সামর্থ্য নিয়ে সংশয় – এই অনুভূতিগুলো একক পিতামাতার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন বোধ করা, বিশেষ করে পারিবারিক বা বন্ধুমহলে ‘ভিন্ন’ হিসেবে দেখা হওয়া, বিষণ্নতা ও উদ্বেগের ঝুঁকি বাড়ায়। বাংলাদেশ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (NIMH) পরামর্শকরা প্রায়ই একক পিতামাতাদের মধ্যে উচ্চ মাত্রার মানসিক চাপ লক্ষ্য করেন।
    • সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও কুসংস্কার: দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশের সমাজে এখনও একক মা বা বাবা হওয়াকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। বিবাহবিচ্ছেদের কারণে একক মা হলে তো কথাই নেই, এমনকি বৈধব্য বা স্বামী পরিত্যাগের কারণেও অনেককে নানান রকমের কটূক্তি, সমাজচ্যুতির ভয় এবং এমনকি হয়রানির শিকার হতে হয়। এই সামাজিক কলঙ্ক (Social Stigma) নিজের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে এবং সহায়তা চাওয়ার পথেও বাধা সৃষ্টি করে।
    • সন্তান লালন-পালন সংক্রান্ত উদ্বেগ: একক পিতামাতারা প্রায়ই নিজেদের নিয়ে সংশয়িত হন – “আমি কি যথেষ্ট ভালো করছি?”, “সন্তানের বিকাশের জন্য অন্য লিঙ্গের রোল মডেলের অভাব কি ক্ষতিকর হচ্ছে?”, “আমার সিদ্ধান্তগুলো কি সঠিক?”। স্কুলের বিভিন্ন কার্যক্রম, পিতামাতার সমাবেশে একা থাকার অনুভূতি, সন্তানের আবেগীয় ও আচরণগত সমস্যা মোকাবিলা – সবই উদ্বেগের উৎস। অনেক সময় সন্তানও বাবা বা মা হারানোর শোক, বা পরিবারের অন্যান্য জটিলতায় ভুগতে পারে, যা মোকাবিলা করা একক পিতামাতার পক্ষে আরও চ্যালেঞ্জিং।

    প্রতিকূলতা মোকাবিলার কৌশল: সাহস, সংগঠন ও সহায়তা

    এই বিশাল একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা অসম্ভব নয়, তবে এর জন্য দরকার দৃঢ় মনোবল, কার্যকর পরিকল্পনা এবং প্রাপ্য সহায়তা নেটওয়ার্কের সন্ধান। রুমানা বেগমের মতো অসংখ্য বীর প্রতিদিন এই কৌশলগুলো কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন:

    • আর্থিক পরিকল্পনা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি:

      • বাজেট তৈরি ও কঠোরভাবে মেনে চলা: আয়-ব্যয়ের স্পষ্ট তালিকা তৈরি করা। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কাটছাঁট করা। জরুরি তহবিল (Emergency Fund) গঠনের চেষ্টা করা, তা যত সামান্যই হোক না কেন।
      • আয়ের উৎস বৃদ্ধি: নিজের দক্ষতা উন্নত করা (অনলাইন কোর্স, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ)। পার্টটাইম কাজ, ফ্রিল্যান্সিং বা হোম-বেজড ছোট ব্যবসা (যেমন হস্তশিল্প, খাদ্য পণ্য তৈরি, টিউশন) শুরু করার চিন্তা করা। বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন এনজিও (ব্র্যাক, প্রশিকা) নারীদের জন্য আয়মূলক প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা দেয়।
      • সরকারি ভাতা ও সুবিধা সম্পর্কে জানা: বাংলাদেশ সরকার বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করে। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী এই ভাতাগুলোর জন্য আবেদন করা জরুরি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া যেতে পারে। জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল (NSPS) এর বিস্তারিত এখানে পাওয়া যাবে।
      • আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা: স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর ও সন্তানের অধিকার, ভরণপোষণ দাবি করা ইত্যাদি আইনি অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (BLAST) বা স্থানীয় আইন সহায়তা কমিটির মতো সংস্থাগুলো বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দেয়।
    • সময় ব্যবস্থাপনা ও স্ব-যত্ন:

      • রুটিন তৈরি ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ: দৈনন্দিন ও সাপ্তাহিক রুটিন তৈরি করা। কোন কাজগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা চিহ্নিত করা। সম্ভব হলে কিছু গৃহস্থালি কাজে বাচ্চাদের সহজ দায়িত্ব দেওয়া (যেমন নিজের জিনিস গোছানো, টেবিল সাজানো)।
      • সহায়তা চাওয়া: লজ্জা নয়। পরিবার, বিশ্বস্ত বন্ধু বা প্রতিবেশীদের কাছে সাহায্য চাইতে হবে – সন্তানকে একটু দেখে রাখা, জরুরি সময়ে স্কুল থেকে তুলে আনা, বা রান্নায় সাহায্য করা। অনেক কমিউনিটিতে প্যারেন্টিং গ্রুপ বা সাপোর্ট গ্রুপ গড়ে উঠেছে।
      • স্ব-যত্ন অপরিহার্য: নিজেকে উপেক্ষা করলে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকা অসম্ভব। প্রতিদিন অন্তত কিছুক্ষণ নিজের জন্য সময় বের করা (এমনকি ১৫-৩০ মিনিটও) – হালকা ব্যায়াম, প্রার্থনা/ধ্যান, প্রিয় বই পড়া, বা শুধু চুপচাপ বসে থাকা। পর্যাপ্ত ঘুম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।
      • মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন: বিষণ্নতা, উদ্বেগ বা অবসাদগ্রস্ততা অনুভব করলে পেশাদার সাহায্য নিতে দ্বিধা করা যাবে না। মনোবিজ্ঞানী বা কাউন্সেলরের পরামর্শ নেওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সেলিং সেন্টার বা NIMH কম খরচে বা বিনামূল্যে পরামর্শ দেয়।
    • সন্তানের যত্ন ও আবেগীয় সংযোগ:

      • খোলামেলা যোগাযোগ: সন্তানের বয়স ও বোঝার ক্ষমতা অনুযায়ী পরিবারের পরিস্থিতি সহজ ভাষায় বোঝানো। তাদের অনুভূতি, ভয় ও প্রশ্নের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। উত্তর না জানলে সৎ থাকা (“আমি এখন জানি না, কিন্তু খুঁজে দেখব”)।
      • গুণগত সময়: পরিমাণে কম হলেও প্রতিদিন কিছুটা সময় শুধু সন্তানের জন্য বরাদ্দ রাখা – একসাথে খেলা, গল্প বলা, তাদের স্কুলের দিনের কথা শোনা। এই গুণগত সময় (Quality Time) আবেগীয় নিরাপত্তা দেয়।
      • ইতিবাচক রোল মডেল ও সমর্থন: পরিবারের মধ্যে (চাচা, মামা, দাদা-দাদী, নানা-নানী) বা কাছের বন্ধু পরিবারে যারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখেন, তাদের সাথে সন্তানের সম্পর্ক গড়ে তুলতে উৎসাহিত করা। স্কুলের শিক্ষক ও কাউন্সেলরদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
      • ধারাবাহিকতা ও সীমা নির্ধারণ: সন্তানের জন্য স্পষ্ট নিয়ম, সীমা ও প্রত্যাশা নির্ধারণ করা। ধারাবাহিকতা তাদের নিরাপত্তাবোধ দেয়। ভালো আচরণের প্রশংসা করা এবং শৃঙ্খলার প্রয়োগ ন্যায্য ও স্নেহপূর্ণ হওয়া জরুরি।
    • সামাজিক নেটওয়ার্ক ও সম্প্রদায়ের ভূমিকা:
      • সাপোর্ট গ্রুপ খুঁজে নেওয়া: অনলাইন বা অফলাইনে অন্যান্য একক পিতামাতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা। একই রকম অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেওয়া থেকে প্রচণ্ড মানসিক স্বস্তি ও ব্যবহারিক পরামর্শ পাওয়া যায়। ফেসবুক গ্রুপ (যেমন ‘Single Parents Bangladesh’) বা স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে এমন গ্রুপ থাকতে পারে।
      • সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে ভূমিকা: একক পিতামাতা হওয়া কোনো ব্যর্থতা বা কলঙ্ক নয় – জীবনের এক পরিস্থিতি মাত্র। নিজের আত্মবিশ্বাস বজায় রেখে, যোগ্যতায় কাজ করে এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা যায়। সচেতনতামূলক আলোচনায় অংশ নেওয়া।
      • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সংস্থার সহায়তা: অনেক স্কুল/কলেজ একক পিতামাতার সন্তানদের জন্য বিশেষ মনোযোগ বা সহায়তা (যেমন ফি মওকুফ, অতিরিক্ত কাউন্সেলিং) দেয়। স্থানীয় এনজিও বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও সাহায্যের হাত বাড়াতে পারে। জাতীয় সমাজসেবা একাডেমী (NASS) এর সাথে যুক্ত স্থানীয় সমাজসেবা অফিসগুলোও সাহায্যের কেন্দ্রবিন্দু।

    সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা ব্যবস্থা: জানা ও পাওয়ার অধিকার

    বাংলাদেশে একক পিতামাতাদের জন্য, বিশেষ করে একক মায়েদের জন্য, কিছু সরকারি নিরাপত্তা বলয় রয়েছে, যদিও এর সুযোগ আরও ব্যাপক হওয়া দরকার। এই সহায়তাগুলো প্রতিকূলতা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে:

    • বিধবা ভাতা: স্বামী মারা গেছেন এমন দুস্থ মহিলারা (৪০% এর বেশি দারিদ্র্যজনিত পরিবার) মাসিক ভাতা পান। আবেদন করতে ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভায় যোগাযোগ করতে হবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত।
    • মাতৃত্বকালীন ভাতা (Maternity Allowance): গর্ভবতী দুস্থ মায়েদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আর্থিক সহায়তা।
    • বয়স্ক ভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা: পরিবারে বয়স্ক বা প্রতিবন্ধী সদস্য থাকলে তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে, যা পরিবারের আর্থিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
    • শিক্ষা সহায়তা: বিভিন্ন সরকারি স্কুলে উপবৃত্তি, বিনামূল্যে বই, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ফি মওকুফের ব্যবস্থা আছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মসূচিগুলো চালু রয়েছে।
    • বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও কমিউনিটি উদ্যোগ: ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, মহিলা পরিষদ, কেয়ার বাংলাদেশের মতো বড় এনজিওগুলো নারী ক্ষমতায়ন, আয়মূলক প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ এবং কখনো কখনো শিশু সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করে। স্থানীয় মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা কমিউনিটি সেন্টারও খাদ্য, বস্ত্র বা অস্থায়ী সহায়তা দিতে পারে।
    • কাউন্সেলিং ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা: NIMH ছাড়াও, অনেক বেসরকারি ক্লিনিক এবং বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টার (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়) কম খরচে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়। কেয়ার বাংলাদেশের হেল্পলাইন বা টেলি-কাউন্সেলিং সেবাও সহজলভ্য হচ্ছে।

    সহায়তা পেতে করণীয়: স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/সদস্য, উপজেলা সমাজসেবা অফিস, বা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে উপযুক্ত ভাতা বা সুবিধার আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (জাতীয় পরিচয়পত্র, স্বামীর মৃত্যু সনদ/বিবাহ বিচ্ছেদের দলিল, আয়ের প্রমাণপত্র, সন্তানের জন্ম নিবন্ধন ইত্যাদি) প্রস্তুত রাখতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে, প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

    অনন্য শক্তির উৎস: একক পিতামাতার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা

    একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যতই কঠিন হোক না কেন, এই অভিজ্ঞতা ব্যক্তি ও সন্তান উভয়ের জন্যই অনন্য শক্তি ও গভীর শিক্ষা বয়ে আনে:

    • অভূতপূর্ব স্থিতিস্থাপকতা (Resilience): প্রতিদিনের সংগ্রাম একজন মানুষকে যেকোনো কিছুর মোকাবিলা করার অসাধারণ মানসিক শক্তি দেয়। তারা শিখে যান কিভাবে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হয়, সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হয়।
    • গভীর আত্মনির্ভরশীলতা: সব দায়িত্ব একা নেওয়ার ফলে এক ধরনের অটুট আত্মবিশ্বাস ও স্বাবলম্বিতা গড়ে ওঠে। তারা নিজের সিদ্ধান্তে বিশ্বাস রাখতে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখেন।
    • সন্তানের সাথে অটুট, গভীর বন্ধন: এই যাত্রায় সন্তানের সাথে যে সময় কাটে, যে সংগ্রাম একসাথে করা হয়, তা একটি অত্যন্ত নিবিড়, বিশ্বস্ত ও গভীর সম্পর্কের জন্ম দেয়। সন্তানরা অনেক বেশি দায়িত্বশীল, সহানুভূতিশীল এবং জীবনের মূল্য বোঝার মতো গুণাবলী নিয়ে বড় হয়।
    • জীবনের প্রকৃত মূল্যবোধের উপলব্ধি: এই অভিজ্ঞতা বস্তুগত বিষয়ের চেয়ে সম্পর্ক, ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং অভ্যন্তরীণ শক্তির প্রকৃত মূল্য শেখায়। জীবনের সহজ-সরল সুখগুলোকে উপভোগ করার ক্ষমতা বাড়ে।
    • অন্যের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন: নিজে সংগ্রাম করায় অন্যের ব্যথা-কষ্ট বোঝার ক্ষমতা অপরিসীম হয়। অনেক একক পিতামাতাই পরবর্তীতে অন্য সংগ্রামরত মানুষদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    1. বাংলাদেশে একক পিতামাতা হিসেবে আমি কোন কোন সরকারি ভাতার জন্য আবেদন করতে পারি?
      প্রধানত বিধবা ভাতা (যদি স্বামী মারা গিয়ে থাকেন), মাতৃত্বকালীন ভাতা (গর্ভবতী অবস্থায়), বয়স্ক ভাতা (পরিবারে ৬৫+ বয়সী সদস্য থাকলে), এবং প্রতিবন্ধী ভাতা (পরিবারে প্রতিবন্ধী সদস্য থাকলে) এর জন্য আবেদন করা যায়। আপনার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ অফিস বা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে আপনার যোগ্যতা ও আবেদন প্রক্রিয়া জেনে নিন। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও তথ্য পাওয়া যাবে.

    2. একক পিতামাতা হিসেবে মানসিক চাপ মোকাবিলা করব কিভাবে?
      নিজের জন্য ছোট ছোট সময় বের করুন (ধ্যান, হাঁটা, গান শোনা)। বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলুন। নিজের অনুভূতি লিখে ফেলুন। অন্যান্য একক পিতামাতাদের সাপোর্ট গ্রুপ খুঁজে নিন (অনলাইন বা অফলাইন)। যদি চাপ অসহনীয় মনে হয়, বাংলাদেশ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (NIMH) বা বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সেলিং সেন্টারে (ঢাবি, জাবি) পেশাদার কাউন্সেলর বা মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নিন।

    3. সন্তান অন্য পিতামাতার অভাব নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে কি বলব?
      সত্য বলুন, কিন্তু তার বয়স ও বোঝার ক্ষমতা অনুযায়ী সহজ ও কোমল ভাষায়। “তোমার বাবা/মা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, এটা আমাদের জন্য খুব কষ্টের। কিন্তু আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি এবং সবসময় তোমার পাশে থাকব।” তার অনুভূতির কথা শুনুন, প্রশ্নের উত্তর দিন এবং বারবার আশ্বস্ত করুন যে তাকে ভালোবাসা ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আপনি আছেন।

    4. আমি একক মা/বাবা, সামাজিকভাবে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। কি করব?
      এটি খুব সাধারণ অনুভূতি। নিজের মতো পরিবার বা বন্ধুদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন যারা আপনাকে বুঝবে এবং সমর্থন করবে। একক পিতামাতাদের ফেসবুক গ্রুপ বা কমিউনিটি ফোরামে যুক্ত হন। নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সফলতা উদযাপন করুন। মনে রাখবেন, একক পিতামাতা হওয়ায় আপনার মূল্য কমে যায় না।

    5. সন্তানের জন্য অন্য লিঙ্গের রোল মডেলের অভাব পূরণ করব কিভাবে?
      পরিবারের সদস্য (চাচা, মামা, দাদু, নানু), কাছের পরিবার বন্ধু, স্কুলের শিক্ষক বা কোচ, বা কমিউনিটি লিডাররা ইতিবাচক রোল মডেল হতে পারেন। সন্তানকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করুন যেখানে সে বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গের মানুষের সাথে ইতিবাচক মিথস্ক্রিয়া করতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আপনি নিজে সততা, দায়িত্বশীলতা, শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির মতো সার্বজনীন ভালো গুণাবলীর চর্চা করুন – সন্তান সেখান থেকেই মূল্যবান শিক্ষা পাবে।

    6. একক পিতামাতা হিসেবে সন্তানের সাথে গুণগত সময় কাটাতে পারি না বলে দোষী বোধ করি।
      এই দোষবোধ খুব স্বাভাবিক, কিন্তু নিজেকে খুব কঠোরভাবে মূল্যায়ন করবেন না। গুণগত সময় মানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নয়। প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিটও যথেষ্ট যদি সেই সময়ে আপনি সম্পূর্ণভাবে উপস্থিত থাকেন, তার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন, বা তার পছন্দের কিছু একসাথে করেন (গল্প পড়া, খেলা, গান গাওয়া)। ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই (যেমন একসাথে খাবার টেবিলে গল্প করা) সম্পর্ককে গভীর করে। নিজের প্রচেষ্টার জন্য নিজেকে কৃতিত্ব দিন।

    একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জ জীবনের এক কঠিন পরীক্ষা, ঠিকই, কিন্তু এই পথই গড়ে তোলে অনন্য এক শক্তির পরিচয়। রুমানা বেগম আজ তার মেয়ে ফাইজাকে নিয়ে গর্বিত, যে মেডিকেল কলেজে পড়ছে – তার স্বপ্ন পূরণের পথে। প্রতিটি সংগ্রাম, প্রতিটি অশ্রু, প্রতিটি ছোট জয় একক পিতামাতাদের তৈরি করে তোলে সমাজের সবচেয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একজন। জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার এই যাত্রা শুধু টিকে থাকার নয়, বরং নিজের এবং সন্তানের জন্য এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার গল্প। মনে রাখবেন, আপনি একা নন। সাহায্য চাইতে লজ্জা নেই। আপনার অভিজ্ঞতা, আপনার লড়াই, আপনার সাফল্য অন্যের জন্য আলোর দিশা। আজই আপনার আশেপাশের একক পিতামাতাকে একটি উৎসাহবাক্য দিন, বা প্রয়োজন হলে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন – কারণ একতাই আমাদের শক্তি। একক পিতামাতা হিসেবে আপনার এই অনন্য যাত্রায় সমস্ত শুভকামনা।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    একক পিতামাতার চ্যালেঞ্জ চ্যালেঞ্জেস:জীবনের প্যারেন্ট? প্রতিকূলতা মোকাবিলা লাইফস্টাইল সিঙ্গেল
    Related Posts
    Cheque

    চেকে লেখা ‘Pay to [নাম] or Bearer’—এক ভুলেই হারাতে পারেন আপনার সব টাকা

    July 31, 2025
    ভিটামিন-ই-ক্যাপসুল

    ভিটামিন ই ক্যাপসুলের যত গুণ, জেনে নিন

    July 31, 2025
    Sensitive plant

    লজ্জাবতী গাছ, ঔষধি শক্তিতে ভরপুর এক বিস্ময় বনজ উদ্ভিদ

    July 31, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Mouchaak Bengali web series official trailer

    আশ্রমকেও টেক্কা দেবে এই ওয়েব সিরিজ, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না

    Hero HF Deluxe Pro

    Hero HF Deluxe Pro: আধুনিক ফিচারে সাশ্রয়ী কমিউটার বাইক

    প্রেস সচিব

    আগামী ৫-৬ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ : প্রেস সচিব

    রচনা ব্যানার্জী

    ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ থেকে রচনা ব্যানার্জীর আয় কত?

    শ্রীলঙ্কা

    ৪০ দেশের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করল শ্রীলঙ্কা

    Cheque

    চেকে লেখা ‘Pay to [নাম] or Bearer’—এক ভুলেই হারাতে পারেন আপনার সব টাকা

    মিঠুন চক্রবর্তী

    অমিতাভের থেকেও সফল ছিলেন মিঠুন, দাবি অন্যতম জনপ্রিয় প্রেক্ষেগৃহের কর্ণধারের

    কুমিল্লা

    মজিবুর রহমানকে বরখাস্ত: কুবিতে প্রশাসনিক অনিয়মে নতুন তদন্ত কমিটি

    bank

    নীতি সুদহার ১০ শতাংশ রেখেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা

    interview-tips

    বিয়ের পর ছেলেদের ছোট হোক বা বড় মেয়েদের নিতেই হয়, কী সেটা

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.